Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪

জেল পালাতে গিয়ে ধৃত দশ বন্দি, উধাও এক জন

গামছা ও বিছানার চাদর বেঁধে দড়ি তৈরি করে সংশোধনাগারের প্রাচীর টপকে পালানোর ছক কষেছিল ১১ জন বিচারাধীন বন্দি। তার আগে অবশ্য নির্দিষ্ট সেলের জানলার লোহার শিক লোহা কাটার করাত দিয়ে কেটে বাইরে আসে তারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ইসলামপুর শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৪ ০১:৪৭
Share: Save:

গামছা ও বিছানার চাদর বেঁধে দড়ি তৈরি করে সংশোধনাগারের প্রাচীর টপকে পালানোর ছক কষেছিল ১১ জন বিচারাধীন বন্দি। তার আগে অবশ্য নির্দিষ্ট সেলের জানলার লোহার শিক লোহা কাটার করাত দিয়ে কেটে বাইরে আসে তারা। শেষ পর্যন্ত অবশ্য জেলের কর্মীদের তত্‌পরতায় জেলের শৌচগারের ছাদ থেকে ১০ জনকে ধরা গেলেও এক জন প্রাচীর টপকে পালিয়েছে। শনিবার গভীর রাত ৩টা নাগাদ উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর উপ-সংশোধনাগারে ঘটনাটি ঘটেছে। জেলের নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

ঘটনার খবর পেয়েই ইসলামপুরের সংশোধনাগারে যান মহকুমাশাসক নারায়ণচন্দ্র বিশ্বাস, এসডিপিও সুবিমল পাল। মহকুমাশাসক বলেন, “১১ জন বন্দি পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। ১০ জন ধরা পড়লেও এক জন পালিয়ে গিয়েছেন। পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সংশোধনাগারের নজরদারি বাড়াতে জন্য সিসিটিভি ক্যামেরার কথা ভাবা হচ্ছে।” প্রাথমিক ভাবে তদন্তের পর সংশোধনাগারের কর্মীরা জানিয়েছেন, পলাতক বন্দির নাম মহম্মদ জামাল। তার বাড়ি বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার নইরহাট এলাকাতে। ২০১৩ সালের ৩ মার্চ ইসলামপুর সংলগ্ন সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের সময় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর জাওয়ানেরা তাকে ধরেছিলেন। তার পর থেকেই ইসলামপুর জেলে ছিল মহম্মদ জামাল। এসডিপিও বলেন, “পলাতকের খোঁজ শুরু হয়েছে।”

পুলিশ ও জেল সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে ইসলামপুর জেল থেকে যাঁরা পালানোর চেষ্টা করেছিলেন, সকলেই জেলের ২ নম্বর সেলে ছিলেন। সেখানে মোট ৪০ জন আছেন। সন্ধ্যায় ৬টা নাগাদ খাবারের পর সকলকে সেলে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। রাত ২টা নাগাদ মুসলিম বন্দিদের ঈদের রোজার জন্য সরবত্‌ খেতে দেওয়া হয়। সেই সময় জেল কর্মীরা লক্ষ করে সকলেই সেলে আছেন। রাত তিনটা নাগাদ ওই ১১ জন সেলের শৌচাগারের পাশের একটি জানলার শিক লোহা কাটার ব্লেড দিয়ে কেটে বাইরে আসেন। সম্প্রতি জেলের কিছু সংস্কারের কাজ চলছে। মিস্ত্রিদের ফেলে যাওয়া যন্ত্রাংশ থেকেই লোহার ব্লেডটি জোগাড় করা হয়েছে বলে পুলিশের অনুমান।

এর পরে ১১ জন ছোট একটি দেওয়াল টপকে শৌচাগারের ছাদে উঠে পড়েন। এরই মধ্যে গামছা এবং চাদর দিয়ে রশি পাকিয়ে তা লাগোয়া জেলের মূল প্রাচীরের গায়ে ফেলা হয়। তা বেয়ে উঠেই দেওয়াল টপকে পালান জামাল। বাকিরা সেই সময় শৌচাগারের ছাদে ছিলেন। নজরদারির দায়িত্ব থাকা নিরাপত্তা রক্ষীরা প্রাচীরে গামছা ও চাদর দেখতে পান। রক্ষীরা দেখেন সেলের জানলার শিক কাটা। তল্লাশি শুরু হতেই পালানোর আগেই ছাদ থেকে ১০ জনকে ধরা হয়েছে।

সংশোধাগারের নিরাপত্তা কর্মীদের নজর এড়িয়ে কিভাবে সংশোধনাগারের ভিতরে লোহার শিক কাটার করাত পৌঁছল তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেতে শুরু করেছে। রবিবার বিকেলে ইসলামপুর সংশোধনাগারে যান উত্তরবঙ্গের ডিআইজি (সংশোধানাগার) বিপ্লব দাশগুপ্ত। তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। একইভাবে কোনও কথা বলতে চাননি জেল সুপার বিবেক বসুও। গত ২০১৩ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে লুঙ্গি ও কম্বলকে দড়ি হিসেবে ব্যবহার করে ইসলামপুরের সংশোধনাগার থেকেই পালিয়ে যায় মহম্মদ ইব্রাহিম নামে এক বাংলাদেশি বন্দি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE