দুর্নীতির অভিযোগ শুনছেন খাদ্যমন্ত্রী। —নিজস্ব চিত্র।
নিজের দফতরের গুদাম তৈরি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগের মুখে পড়তে হল রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে। শনিবার দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন ব্লকে হাসপাতাল মোড় এলাকায় প্রায় ১০,০০০ টন খাদ্যশস্য মজুতের ওই নির্মীয়মাণ গুদামের কাজকর্ম দেখতে যান জ্যোতিপ্রিয়বাবু। এলাকার কৃষকরা অভিযোগ করেন, অত্যন্ত নিম্ন মানের সামগ্রী দিয়ে গুদামটি তৈরি হচ্ছে।
প্রায় ৫ কোটি ৭৬ লক্ষ টাকা খরচ করে এই গুদামটি তৈরি করা হচ্ছে। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার অনুমোদিত একটি ঠিকাদারি সংস্থা (এইচইসিএল)কে গুদামটি তৈরির বরাত দেওয়া হয়েছিল। কাজটি যাতে ভাল হয় সেই জন্য। কিন্তু ওই কেন্দ্রীয় ঠিকাদার সংস্থা এতটাই খারাপ কাজ করেছে, যে দেখে সত্যি অবাক হচ্ছি। জেলার মন্ত্রী (শঙ্কর চক্রবর্তী) এবং জেলাশাসককে বলেছি, ব্যবস্থা নিতে। আমরাও দু-তিন দিনের মধ্যে বিভাগীয় ইঞ্জিনিয়ারদের পাঠিয়ে পরীক্ষা করে দ্রুত পদক্ষেপ করব।”
আগামী পয়লা এপ্রিল থেকে রাজ্যে প্রথম দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় চালু হচ্ছে খাদ্য সুরক্ষা আইন। উত্তর পূর্ব ভারতে এই প্রথম। দক্ষিণ দিনাজপুরে রেশন দোকানের মাধ্যমে ওই কেন্দ্রীয় প্রকল্পে গরিবদের সস্তায় খাদ্যশস্য সরবরাহের সূচনা নিয়ে প্রশাসন ও শাসক দলের নেতৃ্ত্ব উচ্ছ্বসিত। তবে গুদাম তৈরি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসায় বিব্রত জেলা প্রশাসনের কর্তারা। এ প্রসঙ্গে জেলা খাদ্য নিয়ামক অমরেন্দ্র রায় মন্তব্য করতে চাননি।
খাদ্য সরবরাহ দফতর সূত্রের খবর, খাদ্য সুরক্ষা আইন প্রকল্পে চাল গম মজুতের পাশাপাশি কৃষকদের শস্য মজুতের জন্য জেলায় এ ধরণের তিনটি বড় খাদ্যগুদাম তৈরির কাজ প্রায় শেষের দিকে। তপনের ওই গুদামটি নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে তৈরি হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে গত বছর ডিসেম্বরে বিজেপির নেতৃত্বে স্থানীয় কৃষকেরা কাজ আটকে বিক্ষোভ দেখান। জেলা প্রশাসনকেও স্মারকলিপি দিয়ে নালিশ জানিয়েছিলেন। কিন্তু কাজ বন্ধ হয়নি বলে অভিযোগ। এদিন খাদ্যমন্ত্রীকে সামনে পেয়ে ফের দুর্নীতির অভিযোগ তুলে কৃষকেরা সরব হতেই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন।
এ দিন দুপুরে বালুরঘাটে জেলাশাসকের সভাগৃহে খাদ্যমন্ত্রী খাদ্য সুরক্ষা আইন নিয়ে দুদফায় প্রশাসনিক বৈঠক করেন। আচমকা বালুরঘাট থেকে তপনের ওই নির্মীয়মাণ সরকারি গুদাম পরিদর্শনে গেলে এলাকার কৃষকদের হয়ে তাঁর হাতে অভিযোগপত্র তুলে দেন বিজেপির কিসান মোর্চার জেলা সাধারণ সম্পাদক উত্তম দত্ত। তিনি অভিযোগ করেন, “অত্যন্ত নিম্নমানের ইট বালি সিমেন্ট দিয়ে গুদামটি তৈরি হয়েছে। দেওয়াল ও কার্নিশের একাংশ ভেঙে পড়েছিল। সাম্প্রতিক বৃষ্টিতে গুদামের মেঝে জলে ভর্তি হয়ে যায়। এমন অবস্থায় ওই গুদামে খাদ্যশস্য রাখলে সব পচে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।” সরকারি এত টাকা খরচ করে কেন এমন কাজ হবে, প্রশ্ন তোলেন তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy