অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের চেয়ারে বসেছেন পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল।
দিন পাঁচেক আগেই যে চেয়ারে বসতেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আকাশ মেঘারিয়া, এখন সেই চেয়ারে বসছেন পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বসছেন তাঁদের উল্টো দিকে। একটি সাধারণ চেয়ারে। একই ঘরে।
একই ছবি অন্য দফতরেও। অতিরিক্ত জেলাশাসকের চেয়ারে বসে জেলাশাসক অ্যালিস ভেজ। পাশে রাখা চেয়ারে অতিরিক্ত জেলাশাসক জে ডি ভুটিয়া।
নবগঠিত আলিপুরদুয়ার জেলার প্রশাসনিক ঘর-সংসারের চিত্রটা এমনই। একই টেবিলে অফিস চালাচ্ছেন এসপি-এএসপি এবং ডিএম-এডিএম। নতুন জেলা গঠনের পর্ব মিটলেও প্রশাসনিক পরিকাঠামোর অভাবের জন্য প্রোটোকল ‘অমান্য’ করতে বাধ্য হচ্ছেন প্রশাসনিক আধিকারিকেরা। জেলাশাসক বা পুলিশ সুপারের দফতরে যাঁরা নানান আবেদন-নিবেদন, দাবি দাওয়া নিয়ে আসছেন বিভ্রান্ত হচ্ছেন তাঁরাও। ২৫ জুন আলিপুরদুয়ারে এসে জলপাইগুড়ি ভেঙে নতুন জেলার ঘোষণা করে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দীর্ঘদিনের সে দাবি পূরণ হওয়ায় এখনও যেন আনন্দ কাটছে না নতুন জেলাবাসীর। তবে, জেলা ভাগ হলেও কেবল মাত্র পুলিশ সুপার ও জেলাশাসক নিয়োগ করেছে রাজ্য সরকার।
প্রশাসন সূত্রে খবর, জেলাশাসক কোথায় বসবেন বা পুলিশ সুপারের চেম্বার কোথায় হবে, তা ঠিক করতে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার ঠিক আগের দিন এক ঘণ্টা প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক সারতে হয় রাজ্যের মুখ্যসচিব ও স্বরাষ্ট্রসচিবকে। প্রশাসনের কর্তারা জানান, মূল সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে ঘরের অভাব। বাড়তি দু-একটি ঘর থাকলেও সেগুলিতে উচ্চপদস্থ কর্তাদের বসার ব্যবস্থা এত অল্প সময়ে করা সম্ভব হবে নয় বলেই ওই বৈঠকে জানিয়ে দেওয়া হয়। রাজ্যের শীর্ষ কর্তাদের পরামর্শ মতো জোড়াতালি দিয়ে আলিপুরদুয়ারে ওই কর্তাদের অফিস-ঘরের ব্যবস্থা করা গেলেও ঘর সমস্যার সুরাহা কবে হবে তা এখনও জানেন না কেউ।
অতিরিক্ত জেলাশাসকের চেয়ারে বসেছেন জেলাশাসক অ্যালিস ভেজ।
অতিরিক্ত জেলাশাসক জে ডি ভুটিয়া বসে আছেন পাশে।
প্রশাসনিক কর্তারা সমস্যা মেনে নিয়েছেন। শনিবারও ঘর ভাগাভাগি করেই দফতর চালিয়েছেন পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল। তিনি বলেছেন, “নতুন জেলা তো, তাই কিছু দিন এ ধরনের সমস্যা থাকবেই। তা মেনে নিয়ে কিছুদিন কিছুটা কষ্ট হলেও অফিস চালাব।” তবে দ্রুত অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের জন্য একই ভবনে আলাদা একটি ঘর সাজানো হচ্ছে বলেও তিনি জানিয়েছেন। অতিরিক্ত জেলাশাসকের ঘরেই শনিবার পর্যন্ত দফতর চালিয়েছেন জেলাশাসক অ্যালিস ভেজ। অতিরিক্ত জেলাশাসক জে ডি ভুটিয়া বলেন, “আমার জন্য একটি ঘর নির্দিষ্ট হয়েছে। তবে সেটি খুব একটা ভাল না হওয়ায় জেলাশাসকের সঙ্গে একই ঘরে কাজ করছি। আশা করি, সোমবারই নতুন ঘর পেয়ে যাব।”
দোলাচলে সরকারি কর্মীরাও। জেলাশাসক বা পুলিশ সুপার নিয়োগ করা হলেও তাঁদের দফতরের জন্য এখনও কর্মী নিয়োগ হয়নি।
তৈরি হয়নি জলপাইগুড়ি থেকে সরকারি কর্মীদের নিয়ে আসার কোনও স্পষ্ট রূপরেখাও। জেলাশাসক অ্যালিস ভেজ জানান, বাড়তি অফিসার এবং কত সংখ্যক কর্মী বা অফিসার জলপাইগুড়িতে রয়েছে তা জানার পরই রাজ্য সরকারের কাছে এ জন্য আবেদন করবেন। সরকারি কর্মীদের একাংশ জানাচ্ছেন, জুন মাসের বেতন তাঁরা জলপাইগুড়ির কর্মী হিসেবে পেলেও জুলাইয়ের বেতন কোন জেলা থেকে পাবেন, কী ভাবে পাবেন তা নিয়ে তাঁরা কিছুটা আশঙ্কায় রয়েছেন।
ছবি: নারায়ণ দে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy