আলিপুরদুয়ার পৃথক জেলা ঘোষণার প্রস্তুতি দেখে জলপাইগুড়ি জেলার বৃহত্তম ব্লক ময়নাগুড়িকে ভাগ করার দাবি জোরালো হতে শুরু করেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা তো বটেই, উন্নত পরিষেবায় ময়নাগুড়িকে দু’টি ব্লকে ভাগ করে জরুরি বলে মনে করছে ডান ও বাম প্রতিটি রাজনৈতিক দল। শাসক দল তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব রাজ্য প্রশাসনের কাছে ওই দাবি পৌঁছে দিতে তৎপর হয়েছেন।
তৃণমূলের সাংগঠনিক ময়নাগুড়ি ব্লক ২ সভাপতি শশাঙ্ক বসুনিয়া বলেন, “কয়েকদিনের মধ্যে দলের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানানো হবে। সে জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।” ব্লক বিভাজনের প্রশ্নে আরও এক ধাপ এগিয়ে সিপিএমের জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য বিজয়বন্ধু মজুমদার এবং ব্লক কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ঘোষাল বলেন, “দ্রুত উন্নয়নের জন্য ময়নাগুড়ি ব্লক ভাগ করা জরুরি।”
যদিও এই দাবি যে নতুন কিছু নয়, তা প্রত্যেকে স্বীকার করেছেন। ১৯৮৮ সালে আন্দোলন শুরু হলেও কিছু দিনের মধ্যে স্তিমিত হয়। আলিপুরদুয়ার পৃথক জেলা করা হচ্ছে, শোনার পরে পুরানো দাবি ফের প্রাণ পেতে শুরু করেছে। এখনও কোনও পক্ষ রাস্তায় না নামলেও বাসিন্দা থেকে রাজনৈতিক দলের দফতরে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে প্রশাসনিক সুবিধার জন্য আলিপুরদুয়ারকে পৃথক জেলা হলে কেন ময়নাগুড়িকে ভেঙে ময়নাগুড়ি-১ এবং ময়নাগুড়ি-২ দুটি ব্লক করা হবে না। ব্লক বিভাজনের প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে নানা যুক্তি তুলে ধরছেন।
কেন দুটো ব্লক করা প্রয়োজন?
বাসিন্দাদের বক্তব্য, জলপাইগুড়ি জেলায় সবচেয়ে বড় ব্লক ময়নাগুড়ি। আয়তন ৬৩১ বর্গ কিলোমিটার। ১৬টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ৩ লক্ষ ২৯ হাজার মানুষ বসবাস করেন। গ্রামীণ হাসপাতালের পক্ষে তাঁদের স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া যেমন সম্ভব হয় না। একই ভাবে পুলিশের পক্ষেও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার কাজ করা কঠিন হয়েছে। হাসপাতালের আউটডোরে গড়ে ৭০০ রোগী ভিড় করেন। জরুরি বিভাগে আরও একশো রোগী আসেন। ৬০ শয্যার হলেও হাসপাতালে দৈনিক গড়ে ৫০ জন রোগীকে ভর্তি নিতে হয়। এর বাইরে ৪৬টি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র থাকলেও সেখানে শুধু মাত্র প্রাথমিক চিকিৎসার সুবিধা রয়েছে। তাই বর্তমান গ্রামীণ হাসপাতালকে স্টেট জেনারেল হাসপাতালে উন্নীত ও ব্লক ভাগ করে আরও একটি গ্রামীণ হাসপাতাল তৈরি করা জরুরি মনে করছেন বাসিন্দারা।
শুধু স্বাস্থ্য পরিষেবা নয় উচ্চ শিক্ষা এবং প্রশাসনিক কাজের সুবিধার জন্য ব্লক ভাগ জরুরি বলে দাবি বাসিন্দাদের। পেশায় শিক্ষক দেবদুলাল দাস বলেন, “ব্লকে ২০৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২৩টি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় অথচ কলেজ মাত্র একটি। সেখানে ভর্তির সুযোগ না পেয়ে জলপাইগুড়িতে ছুটতে হচ্ছে।” উঠেছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষার সমস্যার প্রসঙ্গ। যেমন, ময়নাগুড়ি ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক বজরংলাল হিরাউত বলেন, “কোচবিহার সংলগ্ন কোন গ্রাম থেকে ব্লক অফিসে এসে কাজ করা কঠিন। ব্লক ছোট হলে ওই সমস্যা থাকবে না।”
ব্লক প্রশাসনের কর্তারা এই বিষয়টি নিয়ে আপাতত কোনও রকম মন্তব্য না করলেও বাসিন্দাদের এই সব দাবি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy