শিলিগুড়ির সেবক রোডে অ্যাসিড ছুড়ে তিন জনকে জখম করার ঘটনার ১২ দিন পরেও অভিযুক্ত দ্বিতীয় জনকে চিহ্নিত করতে পারেনি পুলিশ। এমনকী যে মোটরবাইকে করে ওই অ্যাসিড ছোড়া হয়েছিল সেটিকেও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই দিন ব্যবহৃত অ্যাসিডের নমুনা ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। তার রিপোর্টও মঙ্গলবার পর্যন্ত হাতে এসে পৌঁছয়নি তাঁদের। পুলিশের আশা দু’এক দিনের মধ্যেই তা হাতে পেয়ে যাবেন তাঁরা। তবে সাধারণ রঙের ও ঝালাইয়ের কাজে ব্যবহার হওয়া অ্যসিডই ছোড়া হয়েছিল বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ কোনও পুলিশ কর্তাই। সমস্ত পুলিশ আধিকারিকরাই জানান, যা বলার কমিশনারই বলবেন। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগমোহন বলেন, “মূল অভিযুক্তকে শিলিগুড়িতে এনে যা বলার বলব।”
শনিবার হরিয়ানার ভিওয়ানি থেকে ঘটনার মূল অভিযুক্ত মনোজ সিংহকে গ্রেফতার করে শিলিগুড়ি পুলিশের একটি দল। তাকে স্থানীয় আদালতে ট্রানজিট রিমান্ডে নিয়ে রবিবার ট্রেনে শিলিগুড়ির উদ্দেশে রওনা হয় পুলিশ। ট্রেন অস্বাভাবিক দেরিতে চলায় মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত তাঁরা শিলিগুড়িতে পৌঁছতে পারেননি। তবে মাঝরাতের মধ্যে পৌঁছে যাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী পুলিশ কমিশনার।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শিলিগুড়িরই একটি পানশালায় যাতায়াতের সূত্রে তরুণী গায়িকার সঙ্গে অভিযুক্ত মনোজের যোগাযোগ হয়েছিল। একবার তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে মনোজ দু’মাস আগে তাঁর বাড়িতে পৌঁছে যায়। সেখানে প্রেম নিবেদন করে ব্যর্থ হয়ে আক্রোশ বেড়ে যায়। তরুণী ও তাঁর মাকে হুমকি দেওয়া শুরু হয় বলে পরিবারের অভিযোগ। একবার বাড়িতে গিয়ে তরুণীকে বেঁধে রাখার অভিযোগে পড়শিদের রোষের মুখে পড়ে অভিযুক্ত মনোজ। পরে ঝামেলা বাড়াতে না চেয়ে ওই তরুণীর পরিবার থানা পুলিশ করেনি। ওই ঘটনার পর তরুণীর সঙ্গে অভিযুক্তের আর যোগাযোগ হয়নি বলে জানা গিয়েছে। ওই ঘটনায় পুলিশের তত্পরতার অভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দার্জিলিং জেলা লিগাল এড ফোরামের সম্পাদক অমিত সরকার। তিনি বলেন, “পুলিশের আরও সতর্ক থাকা উচিত। ভর সন্ধ্যায় এভাবে অ্যাসিড ছোড়ার মত ঘটনা ঘটলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়?”
গত ১১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সেবক রোডের একটি পেট্রল পাম্পের সামনে অ্যাসিড ছোড়ার ঘটনাটি ঘটে। ভিতরে ছিলেন তিন তরুণী গায়িকা ও গাড়ির চালক। গাড়িতে করে গায়িকাদের সেবক রোডের পানশালায় পৌঁছে দিতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বলে পুলিশ জেনেছে। অ্যাসিডে পুড়ে জখম হন দুই তরুণী গায়িকা ও গাড়ির চালক। আপাতত তাঁরা সুস্থ রয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy