Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

বাড়ছে কাঠ পাচার, চিন্তায় পরিবেশপ্রেমীরা

বেআইনি কাঠ পাচারকারীদের দৌরাত্ম্য চলছেই কোচবিহারে। শনিবার রাতে কোচবিহার কোতোয়ালি থানার বাণেশ্বর লাগোয়া এলাকায় পাচারের সময় সেগুন কাঠ বোঝাই একটি ছোট গাড়ি আটক করে পুলিশ।

সেগুন কাঠ-সহ গাড়ি আটক করেছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

সেগুন কাঠ-সহ গাড়ি আটক করেছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:২৫
Share: Save:

বেআইনি কাঠ পাচারকারীদের দৌরাত্ম্য চলছেই কোচবিহারে। শনিবার রাতে কোচবিহার কোতোয়ালি থানার বাণেশ্বর লাগোয়া এলাকায় পাচারের সময় সেগুন কাঠ বোঝাই একটি ছোট গাড়ি আটক করে পুলিশ। আটর করা গাড়িটিতে নম্বর প্লেটও ছিল না। ওই গাড়ি ও উদ্ধার হওয়া কাঠ রবিবার বন দফতরের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। মাথাভাঙার ঘোকসাডাঙা এলাকা থেকেও প্রচুর বেআইনি সেগুন কাঠ উদ্ধার করেছে বন দফতর। জেলার দু’টি এলাকায় কাঠ উদ্ধারের ওই ঘটনায় ফের পাচারকারীদের দৌরাত্ম্য বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি সামনে এসেছে।

বন দফতর জানিয়েছে, গত ৪৮ ঘণ্টায় কোচবিহারে প্রায় ৪ লক্ষ টাকার বেআইনি কাঠ উদ্ধার হয়েছে। গত সাত মাসে উদ্ধার হওয়া কাঠের মূল্য ৬৫ লক্ষ টাকারও বেশি। তার মধ্যে শুধুমাত্র কোচবিহার মোবাইল রেঞ্জের কর্মীরাই চলতি বছরে নদী লাগোয়া এলাকা, সড়কপথ, ট্রেনে অভিযান চালিয়ে ৩০ লক্ষাধিক টাকার কাঠ উদ্ধার করেছেন। পাচার রুখতে জেলাজুড়ে বনকর্মীরা নজরদারিও বাড়িয়েছেন। পাচারের কাজে ব্যবহার করা ৮টি গাড়িও উদ্ধার করা হয়েছে।

বাসিন্দাদের পাশাপাশি পরিবেশপ্রেমীদের একাংশ জানাচ্ছেন, ভৌগলিক কারণেই কোচবিহারকে করিডোর করে পাচারে উৎসাহ বেড়েছে কারবারীদের একাংশের। এক বনকর্তার কথায়, অসম ও ডুয়ার্স থেকে নদী বা সড়ক পথে সহজেই কোচবিহারে কাঠ নিয়ে আসা যায়। তাছাড়া দিনহাটা, তুফানগঞ্জ, মেখলিগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকায় জলপথ রয়েছে। সেখানে কাঁটাতারের বেড়া না থাকায় তার সুযোগও পাচারকারীরা নিচ্ছে বলে অভিযোগ। কয়েকমাস আগেই বালাভূত সীমান্তে বিএসএফ প্রচুর চন্দনকাঠ উদ্ধার করে। সেই ঘটনায় ওই সন্দেহ আরও বেড়েছে পরিবেশপ্রেমী মহলে। পরিবেশপ্রেমী সংস্থা ন্যাসগ্রুপের সম্পাদক অরুপ গুহ বলেন, “কোচবিহারকে করিডোর করে পাচারের আশঙ্কা ওড়ানো যায় না।”

পরিবেশপ্রেমীদের আরও অভিযোগ, বিভিন্ন মরসুমে কৌশল বদলে পাচারকারীরা নিজেদের কারবার চালাচ্ছে। তাঁরা জানাচ্ছেন, বর্ষার সময়ে নদীর অবস্থা দেখে ‘চালি’ পদ্ধতিতে কাঠ পাচার হয়। এই পদ্ধতিতে হাওয়ার টিউবের সঙ্গে কাঠ বেঁধে নদীর স্রোতের দিকে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। শীতের সময় ছোটগাড়ি, সাইকেল ও ভুটভুটিতে কাঠ পাচার চলে বলে পরিবেশপ্রেমীদের দাবি। সুযোগ বুঝে আলিপুরদুয়ার-বামনহাট প্যাসেঞ্জার ট্রেনের কামরা দখল করেও কাঠ পাচারের রমরমা চলে বলেও অভিযোগ। কয়েক বছর আগেই দিনহাটার কলেজ হল্টের কাছে চলন্ত ট্রেন থেকে কাঠ ফেলে দেওয়ার জেরে এক শিশু মারাত্মক জখমও হয়েছিল।

বেআইনি কাঠের কারবার বন্ধ করতে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন রাজ্যের বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন। তাঁর আশ্বাস, পাচারচক্রে জড়িতদের ধরতে সবরকম আইনি ব্যবস্থাও নেওয়া হবে প্রশাসনের তরফ থেকে।

অন্য বিষয়গুলি:

Wood Smuggling
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE