কাইরা মোহান্ত। নিজস্ব চিত্র
পুরুষ থাকাকালীন মোটরবাইকের লাইসেন্স করেছিলেন। অভিযোগ, নারী হিসাবে সে লাইসেন্সে পরিচয় বদলাতে নেমে হয়রানির একশেষ হতে হয় দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের কাইরা মোহান্তকে। লাইসেন্সে লিঙ্গ পরিবর্তনের আবেদনের রাস্তা নেই পরিবহণ দফতরে। কিন্তু হাল ছাড়েননি কাইরা। শেষ পর্যন্ত জেলার আধিকারিকদের তৎপরতাতেই কাজ হয় তাঁর। কিন্তু প্রায়োগিক জীবনে রূপান্তরকামীদের সমস্যা নিয়ে নতুন প্রশ্ন তুলেছে কাইরার লড়াই। রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দিয়েছেন।
কাইরা পেশাদার নৃত্যশিল্পী। রাজ্যের বাইরেও অনুষ্ঠান করেছেন। টিভি সিরিয়ালে এক রূপান্তরকামীর ভূমিকায় অভিনয়ও করেছেন। বালুরঘাটে পরিবারের সঙ্গে থাকেন। করোনার পরে, ২০২১ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে দিল্লির হাসপাতালে থেকে লিঙ্গ পরিবর্তন করে মহিলা হন। তার পরে, ব্যক্তিগত সব নথি বদলানোর কাজে হাত দেন। আধার কার্ড বদলান। ভোটার পরিচয়পত্র এবং প্যান কার্ডও বদলের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। কিন্তু বাধ সাধে ড্রাইভিং লাইসেন্স।
কাইরা জানান, প্রথমে নিজের মোবাইল থেকে ‘সারথী অ্যাপ’-এ বদলের আবেদন করতে গিয়ে তা পারেন না। সাইবার ক্যাফেতে যান। বার বার চেষ্টা করেও ‘হচ্ছে না’ বলে হাল ছাড়ে তারাও। কাইরা বলেন, ‘‘হেল্পলাইন থেকেও ‘হবে না’ বলে দেওয়া হয়। লিঙ্গান্তর আইনত বৈধ। কিন্তু তা করালেই যত সমস্যা! আমি পরিবহণ ভবনেও যাব ভাবছিলাম। যদিও বালুরঘাটের পরিবহণ আধিকারিকেরা অনেক খেটে মঙ্গলবার তা শেষ পর্যন্ত করে দিয়েছেন।’’
‘গেজেট অব ইন্ডিয়া’তে ছবি দিয়ে নোটিস, সংবাদপত্রে দেওয়া বিজ্ঞাপন, প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেটের এজাহারপত্র সবই রয়েছে তাঁর। জেলা পরিবহণ দফতরের মোটর ভেহিকল ইনস্পেক্টর (কারিগরি) অমিতাভ সরকার বলেন, ‘‘কাইরার সব নথি যথাযথ ছিল। কিন্তু আমরাও লাইসেন্সের তথ্য বদলাতে পারছিলাম না। কলকাতায় ফোন করে, কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় কাজটা করতে পারি।’’ জেলা পরিবহণ আধিকারিক সন্দীপ সাহা বলেন, ‘‘কাইরা নথি নিয়ে হতাশ ছিলেন। এক দিনে তাঁর কাজটা তুলে দেওয়া হয়েছে।’’
উত্তরবঙ্গের এ রকম অনেক রূপান্তরকামী এ ধরনের ঝামেলার জন্যই নথি বদলাতে ততটা আগ্রহী হন না বলেই দাবি করছেন এলজিবিটিকিউ আন্দোলনের সঙ্গে জড়িতেরা। এলজিবিটিকিউ আন্দোলনের সহমর্মী শৌভিক ঘোষালের কথায়, ‘‘কেন্দ্র এবং রাজ্য কেউই এই গোষ্ঠীর মানুষের অধিকার নিয়ে সচেতন নন। তাই অনেককেই এ রকম হোঁচট খেতে হচ্ছে।’’
যদিও রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এটা ঠিক, এখনও সব পরিবহণ দফতরে এই সুবিধা মিলছে না। তবে আমরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে শীঘ্রই রূপান্তরকামী বিল আনছি, যাতে এ রকম সমস্যা না হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy