শেষ কবে এত বড় এক জন ফিল্মমেকার ভারতে এসেছেন? শুধু তা-ই নয়, পঁচিশ দিন ধরে দেশের নানা শহর ঘুরছেন নিজের ছবিগুলো নিয়ে, কথা বলছেন সিনেমার নির্মাণ-দর্শন বিষয়ে, উত্তর দিচ্ছেন উৎসাহী দর্শক-শ্রোতার প্রশ্নের? ছবির উৎসব তো কতই হয় কলকাতায়, কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবেও আসেন এই সময়ের কত ছবি-করিয়ে, কিন্তু এই সব কিছু মাথায় রেখেও বলতে হচ্ছে: উইম ওয়েন্ডার্স এক জনই। শিল্পী ও চিন্তক, বিশ্বখ্যাত জার্মান চলচ্চিত্রকার এ বার শহর কলকাতায়। ‘কিং অব দ্য রোড: দ্য ইন্ডিয়া ট্যুর’ শিরোনামে প্রবীণ এই চিত্রপরিচালকের ভারত-সফর শুরু হয়েছে গত ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে, মুম্বই-তিরুঅনন্তপুরমের পর আগামী কাল থেকে শুরু কলকাতা-পর্ব।
ফিল্ম হেরিটেজ ফাউন্ডেশন, শিবেন্দ্র সিংহ দুঙ্গারপুরের সুযোগ্য নেতৃত্বে যে অলাভজনক ভারতীয় সংস্থাটি চলচ্চিত্র ও মুভিং ইমেজের সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধারে নিবেদিতপ্রাণ— উইম ওয়ান্ডার্সের এই ভারত-সফরের পিছনে তাদের ভূমিকা যারপরনাই। সঙ্গী হয়েছে পরিচালকের নিজস্ব ‘উইম ওয়েন্ডার্স ফাউন্ডেশন’, এবং কলকাতা-পর্বে গ্যোয়টে ইনস্টিটিউট-ম্যাক্সমুলার ভবন কলকাতা। আগামী কাল ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নন্দন ১, বসুশ্রী ও পিভিআর-আইনক্স সাউথ সিটি, এই তিনটি প্রেক্ষাগৃহ মিলিয়ে দেখানো হবে পরিচালকের মোট ষোলোটি ছবি। রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় প্রথম ছবিই প্যারিস, টেক্সাস-এর রেস্টোর্ড ভার্সন, ১৯৮৪-তে যে ছবি কান ফিল্মোৎসবে সেরা সিনেমার পুরস্কার পেয়েছিল, ’৮৫-র বাফটা-তে সেরা পরিচালকের সম্মানও। পরিচালক নিজেই নিবেদন করবেন ছবিটি, শো-শেষে উত্তর দেবেন প্রশ্নের।
উইম ওয়েন্ডার্সকে বহু সিনে-প্রেমী ভালবাসেন ওঁর ‘রোড মুভি’ ঘরানার ছবিগুলির জন্য। সত্তরের দশকে তৈরি ওঁর বিখ্যাত রোড মুভি ট্রিলজি-র দু’টি দেখানো হবে শহরে, অ্যালিস ইন দ্য সিটিজ় এবং কিংস অব দ্য রোড, নন্দনে। থাকছে আনটিল দি এন্ড অব দ্য ওয়ার্ল্ড (বসুশ্রী) ছবিটিও, ২৮৭ মিনিটের ‘ডিরেক্টর’স কাট’ অবতারে! ভেনিস ফিল্মোৎসবে ফিপরেস্কি পুরস্কার জয়ী ছবি দ্য গোলি’জ় অ্যাংজ়াইটি অ্যাট দ্য পেনাল্টি কিক (নন্দন), অস্কারে মনোনীত তথ্যচিত্র বুয়েনা ভিস্তা সোশ্যাল ক্লাব-এর (বসুশ্রী) মতো ছবিগুলিও থাকছে উৎসবে। কিউবা থেকে জাপান, ছবি তৈরি করতে কোথায় না গিয়েছেন এই পরিচালক! টোকিয়ো-গা ছবিটি ওঁর শ্রদ্ধার্ঘ্য চলচ্চিত্রের আর এক মহান শিল্পী ইয়াসুজিরো ওজ়ুর প্রতি, আবার আট বছর আমেরিকায় কাটিয়ে স্বদেশে ফিরে বানিয়েছেন উইংস অব ডিজ়ায়ার। ফিরে দেখার সুবর্ণসুযোগ, নন্দনে।
কিন্তু সবার চাইতে ভাল নিঃসন্দেহে ওঁর ‘মাস্টারক্লাস’, ম্যাক্সমুলার ভবনে যার ‘বিনামূল্যে পাস’-এর চাহিদা আকাশ ছুঁয়েছে। ১৭ ফেব্রুয়ারি জি ডি বিড়লা সভাঘরে সন্ধ্যা ৬টা থেকে উইম বলবেন ওঁর চলচ্চিত্রযাত্রা নিয়ে, সঙ্গে কথালাপে থাকবেন শিবেন্দ্র। এই শহরের চলচ্চিত্র-এষণা নিশ্চয়ই সদুত্তর খুঁজে পাবে সেখানে। পরিচালকের ভারতযাত্রায় এখনও বাকি দিল্লি ও পুণে; কল্লোলিনী কলকাতা ওঁর প্রথম ভারত সফরের মধ্যমণি হয়ে রইল। ছবি, ফিল্ম হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের ফেসবুক পেজ থেকে।

আলোর পথযাত্রী
যখন সোনারপুর অঞ্চলে থাকতেন, প্রায় প্রতি বছরই বন্যায় গ্রাম ভেসে যেত। ‘দেশ ভেসেছে বানের জলে’ গানটা তখনই লেখা, বন্যাপীড়িত মানুষের কথা ভেবে। “এটাই ওঁর প্রথম গান রচনা,” সাক্ষাৎকারে সলিল চৌধুরীকে (ছবি) নিয়ে বলেছেন কল্যাণ সেন বরাট। তার পর ১৯৪৬-এ নৌবিদ্রোহ নিয়ে ‘ঢেউ উঠছে, কারা টুটছে’, একে একে আরও কত। গণআন্দোলন আর তার অমোঘ হাতিয়ার গণসঙ্গীত, দুই-ই প্রাণ পেয়েছে সলিল চৌধুরীর জীবনে-গানে। তার পর থেকে আজ পর্যন্ত এ শহর, রাজ্য ও দেশে গণআন্দোলনের চরিত্রটি কেমন দাঁড়িয়েছে, তা-ই ফিরে দেখেছে অন্বেষা পত্রিকা। চারু মজুমদারের পুত্র অভিজিৎ মজুমদার, এবং অসীম চট্টোপাধ্যায়ের কথায় নকশাল আন্দোলন থেকে ‘অভয়া’-ইতিহাস, পাশাপাশি বাংলাদেশে সাম্প্রতিক ‘গণঅভ্যুত্থান’-এর তাবৎ প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি। শতবর্ষী যুগন্ধর শিল্পীর প্রতি শ্রদ্ধাতেই নিবেদিত বিষয়-শিরোনাম, ‘ও আলোর পথযাত্রী’।
ফিরে দেখা
কী করে জার্মানিকেই করে তোলা যায় বিশ্ববিধাতা, সেই ভাবনার উপরেই দাঁড়িয়ে ছিল নাৎসি জমানার জার্মানি। তারই রাজনৈতিক অঙ্গ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ভারতে ব্রিটিশবিরোধী প্রচার; ভারতে ডামাডোল তৈরি করে ব্রিটিশ শাসনের স্থিতি বরবাদ করা। নাৎসি সরকারের কয়েকটি অঙ্গ-সংগঠন নেমে পড়ে ‘অ্যান্টি-ব্রিটিশ’ তথা ‘প্রো-জার্মান’ কাজে। কেমন ছিল পরিকল্পনা, জার্মান বিদ্বজ্জন থেকে শুরু করে উপনিবেশবাদ-বিরোধী ভারতীয়দেরই বা তাতে ভূমিকা কী, এই নিয়েই বলবেন ফ্রাঙ্কফুর্টের গ্যোয়টে ইউনিভার্সিটির ইতিহাসের শিক্ষিকা, দ্য নাৎসি স্টাডি অব ইন্ডিয়া অ্যান্ড ইন্ডিয়ান অ্যান্টি-কলোনিয়ালিজ়ম গ্রন্থের লেখিকা বৈজয়ন্তী রায়। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে, ১৮ ফেব্রুয়ারি দুপুর দু’টোয়।
একুশে
ক্যালেন্ডারে ফেব্রুয়ারি। একুশে-ও সমাগত দ্বারে। এ বার কি ভিন্ন কোনও বার্তা বয়ে আনছে সে? বাংলাদেশে রাজনৈতিক পালাবদলের পরে সমাজ ও সংস্কৃতি-জীবনে প্রবল অস্থিরতার আবহে এই প্রশ্ন এখন ভাবিয়ে তুলছে এ-পারের বাঙালিকেও। প্রতি বছর একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্যাপন করে সর্ব ভারতীয় বাংলা ভাষা মঞ্চ, এ বছরও তাদের অনুষ্ঠান আগামী শুক্রবার দুপুর আড়াইটা থেকে, কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দারভাঙা ভবনের সেনেট হল-এ, কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ও ঐকতান গবেষণাপত্রের সহযোগে। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে একুশে ফেব্রুয়ারির তাৎপর্য নিয়ে বলবেন বিশিষ্ট অতিথিরা, রয়েছে সর্ব ভাষা কবি সম্মেলনও।
ভিনদেশি সুর
বাতাসে এখনও একটু হালকা হিম। বসন্ত আসার মুখে এই সময়টা কলকাতা একটু উদাস সুর ভাঁজে। সেই সুর যে নিতান্ত বাঙালি ঘরানারই, তা অবশ্য বলা যাবে না— হতে পারে সাগরপারের ধ্রুপদী সুরসঙ্গতও। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের ইস্টার্ন কোয়াড্রাঙ্গলে আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধে ৬টায় পৌঁছে গেলে দেখা যাবে, জনা পনেরো শিল্পী প্রস্তুত হচ্ছেন ভায়োলিন ভায়োলা ওয়েস্টার্ন ফ্লুট-সহ নানা সুরযন্ত্র ও তালবাদ্যের পরিবেশনায়। ফ্রান্স ও রোমানিয়ার সুর শোনাবেন ওঁরা, নাম— ‘ভিয়োলঁ জ়িগানে’। ফরাসি ‘জ়িগানে’-র অর্থ ‘জিপসি’, আবার শতবর্ষপ্রাচীন একটি র্যাপসডিও আছে একই নামে। আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ় ও ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল-এর এই নিবেদনে সঙ্গী কলকাতায় কনসুলেট জেনারেল অব ফ্রান্স ও কনসুলেট অব রোমানিয়া।
বড় পর্দায়
পাঁচ মহাদেশের সিনেমা নিয়ে উৎসব, নাম তাই ‘ফেস্টিভ্যাল অব ফাইভ কন্টিনেন্টস’। ফোরাম ফর ফিল্ম স্টাডিজ় অ্যান্ড অ্যালায়েড আর্টস-এর উদ্যোগে এই আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব এ শহরে হয়ে আসছে গত বারো বছর ধরে। এনইজ়েড ফাউন্ডেশনের সঙ্গে একত্র আয়োজনে ত্রয়োদশ উৎসব আগামী ১৬ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি, আইসিসিআর-এ সত্যজিৎ রায় প্রেক্ষাগৃহে। পাঁচ দিনে কাহিনিচিত্র ও ছোট ছবি-সহ মোট একুশটি ছবি দেখার সুযোগ; রোজ তিনটি করে— দুপুর ২.৪৫ থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। আগামী কাল উদ্বোধন বিকেল সাড়ে ৪টেয়; কান ফিল্মোৎসবে ডিরেক্টর’স ফোর্টনাইট বিভাগে প্রদর্শিত, কানু বেহেল-নির্দেশিত আগরা দেখানো হবে উদ্বোধনী ছবি হিসেবে। রয়েছে আশিস অভিকুন্তকের বিধ্বস্ত, ব্রিটিশ শ্রীলঙ্কায় রাষ্ট্রদূত থাকার সময় পাবলো নেরুদার জীবন নিয়ে শ্রীলঙ্কার পরিচালক অশোক হান্ডাগামার ছবি আলবোরাদা, সুদীপরঞ্জন সরকারের গ্রাসন।

শতবর্ষে
সিনেমা তাঁর কাছে শুধুই শিল্প বা শিল্পমাধ্যম নয়। মানুষের জীবন-মৃত্যুর মাঝের সময়টুকুতে তার যাবতীয় আবেগ অনুভূতি তাড়না প্রভাব ইত্যাদির সমাহারে গড়ে উঠেছে যে সভ্যতা-সংস্কৃতি, তারই একটা বহিঃপ্রকাশ সিনেমা, বিশ্বাস করতেন ঋত্বিক ঘটক। চলচ্চিত্র আর জীবনাভিজ্ঞতা তাঁর কাছে, তাঁর হাতে একাকার, বাংলা ও বিশ্ব পর্দায় সেই সুবাদে পেয়েছে অভূতপূর্ব কিছু সৃষ্টি। এ বছর শতবর্ষ পূর্ণ করবেন ঋত্বিক ঘটক, তাঁর প্রতি শ্রদ্ধায় একটি ডেস্ক ক্যালেন্ডার প্রকাশ করেছে চলচ্চিত্র-সমালোচকদের আন্তর্জাতিক সংস্থার ভারতীয় শাখা ‘ফিপরেস্কি-ইন্ডিয়া’। পাতায় পাতায় ঋত্বিকের নিজের কিছু কথা, তাঁকে নিয়ে সত্যজিৎ রায় ও মৃণাল সেনের মূল্যায়ন, আর ঋত্বিকের করা নানান ছবির স্থিরচিত্র। ছবিতে তারই একটি, অসম্পূর্ণ কাহিনিচিত্র বগলার বঙ্গদর্শন (১৯৬৪) থেকে।

বিস্মৃত ইতিহাস
বিশ্ব জুড়ে বাড়ছে পরিযায়ী জনসংখ্যা, প্রভাব ফেলছে রাষ্ট্রব্যবস্থায়। সে কথা মাথায় রেখেই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য লেখ্যাগার (স্টেট আর্কাইভস) উদ্যোগ করেছে একটি প্রদর্শনী, ‘উনিশ শতকে ব্রিটিশ ও অন্যান্য ইউরোপীয় উপনিবেশে ভারতীয় কুলি শ্রমিকদের চুক্তিবদ্ধ অভিবাসন’ নিয়ে। দাসপ্রথা নিষিদ্ধ হলেও, উনিশ শতকে মরিশাস সুরিনাম ও ব্রিটিশ গায়ানার মতো নানা ঔপনিবেশিক ঘাঁটিতে লাভজনক বাগিচাশিল্পে শ্রমিক জোগানের চাহিদা অপরিবর্তিত ছিল, ভারত থেকে চুক্তিবদ্ধ শ্রমিকদের জাহাজে তুলে পাঠানো হত সেখানে। এঁদের শোষণের বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে ওঠে বিশ শতকে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধোত্তর পর্বে ধীরে ধীরে এই প্রথা লোপ পায়। লেখ্যাগারের ভান্ডারে এই অভিবাসন সংক্রান্ত নথির ভান্ডার অফুরান, তারই বাছাই কিছু নিয়ে ‘লেখ্যাগার সপ্তাহ’, ৪৩ শেক্সপিয়ার সরণির ডিরেক্টরেট অব স্টেট আর্কাইভসে। ১৮-২৪ ফেব্রুয়ারি, সকাল সাড়ে ১১টা-সন্ধে ৬টা। ছবিতে খিদিরপুর ডকে এই শ্রম-অভিবাসীদের স্মরণে স্থাপনা।
সুবর্ণযুগ
থাকা, খাওয়াদাওয়া, খেলাধুলো, পড়াশোনা, সব এক সঙ্গে। একই বাতাসে শ্বাস নেওয়া, স্কুলে একই চেয়ার-টেবিল, হস্টেলে একত্র দিন-রাত। স্মৃতিগুলোও তাই সবারই প্রায় এক। ওঁরা সবাই ১৯৭৪ সালের পুরনো হায়ার সেকেন্ডারি ব্যাচের বন্ধু— নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যালয়ের। ১৯৭৪ মানে তো পঞ্চাশ বছর পেরিয়ে গেল ইস্কুল ছেড়ে আসার! ওঁরা তবু বেঁধে বেঁধে আছেন আজও, অমোচনীয় গ্রন্থিটির নাম নরেন্দ্রপুর। ছেড়ে-আসা ইস্কুলের প্রয়োজনে সব সময় পাশে দাঁড়ানো তো আছেই, এ বার পেরিয়ে আসা অর্ধশতককে স্মরণীয় করে রাখতে নিজেরাই নির্মাণ করেছেন একটি বই, নরেন্দ্রপুর: টাইমলেস টেলস/নানারঙের দিনগুলি (সিমিকা পাবলিশার্স)। স্নিগ্ধ স্মৃতিগ্রন্থ এ তো বটেই, সেই সঙ্গে কেমন হওয়া দরকার একটা ‘সত্যি ভাল’ ইস্কুলের প্রকৃতি-পরিবেশ-পরিকাঠামো, তারও দিগ্দর্শন— বললে ভুল হবে না।