ফেরত: অন্ধ্রপ্রদেশের গাড়িতে মালপত্র তুলছেন শ্রমিকেরা। নিজস্ব চিত্র
লকডাউন শিথিল হতেই ভিন্ রাজ্য ফেরত কয়েক জন শ্রমিক ফের পুরনো কাজের জায়গায় ফিরছেন বলে জানা গেল। সোমবার ওই ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার হতে শুরু হয়েছে নানা জল্পনা। বাক্সপত্র গুছিয়ে অন্ধ্রপ্রদেশের নম্বর প্লেট লাগানো লালরঙের একটি ছোট গাড়িতে জনা সাতেক যুবককে রবিবার সন্ধেয় হিলি থানার তিওড় এলাকা ছাড়তে দেখা গিয়েছে। তবে স্থানীয়রা ওই বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি। জেলা পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত জানান, লকডাউন ওয়ান জারি হওয়ায় এখন ভিন্ রাজ্য থেকে গাড়ি যাতায়াতে বাধা নেই। তবে হিলি থেকে পরিযায়ী শ্রমিকেরা ফের ভিন্ রাজ্যে পাড়ি দিচ্ছেন, এমন খবর জানা নেই।
হায়দরাবাদে পুরনো কর্মক্ষেত্রে যোগ দিতেই তাঁরা রওনা হন বলে খবর। ওই বেসরকারি নির্মাণ সংস্থার পক্ষ থেকে দু’টি ছোট গাড়ি তিওড়ে পাঠানো হয়। একটি সূত্রের খবর অনুযায়ী ওই সাত যুবকের মধ্যে হিলির তিওড় এবং বিনশিরার পাশাপাশি বালুরঘাটের খাসপুরের বাসিন্দাও রয়েছেন। পুরনো কর্মস্থলে ফেরা দুই পরিযায়ী শ্রমিকের অবশ্য দাবি, এখানে কাজ নেই। সংসারে অনটন শুরু হয়েছে। বেশি মজুরি মেলার আশ্বাস পেয়ে তাঁরা হায়দরাবাদে যেতে রাজি হন।
ভিন্ রাজ্য থেকে ফিরেছেন অনেক শ্রমিক। এখনও ফিরছেন অনেকে। কিন্তু করোনা-আতঙ্কের মধ্যে বাড়ি ফিরে স্বস্তি পেলেও কী কাজ করে সংসার চলবে, তা ভেবে কার্যত ঘুম উড়েছে তাঁদের। প্রশাসন অবশ্য বলছে, সকলকেই কাজ দেওয়া হবে। কিন্তু অভিযোগ, প্রশাসনের আশ্বাস খাতা-কলমেই থেকে গিয়েছে।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, লকডাউন শুরুর পর থেকে জেলায় প্রায় ৪৮ হাজার পরিযায়ী শ্রমিক ঘরে ফিরেছেন। প্রশাসনের হিসেবে, আরও হাজার দশেক পরিযায়ী শ্রমিক ফিরতে পারেন। বাকিরা ভিন্ রাজ্যেই থেকে গিয়েছেন।
জেলায় ফিরে আসা শ্রমিকদের অধিকাংশের গৃহবাসের মেয়াদ শেষ হয়েছে। লকডাউন শুরু হতেই তাঁরা কাজ হারিয়েছিলেন। অনেকে ভিন্ রাজ্য থেকে সঞ্চয়ের সমস্ত টাকা খরচ করে গাড়ি বা ট্রাক ভাড়া করে ফিরেছেন। পাশাপাশি সংসারের খরচ জোগাতে গিয়ে অনেক শ্রমিকই এখন প্রায় নিঃস্ব। এই অবস্থায় রোজগারের চিন্তায় ফের ভিন্ রাজ্যে পাড়ি দেওয়ার কথা ভাবছেন অনেকে।
এক শ্রমিক বলেন, ‘‘করোনার ভয়ে বাড়িতে বসে থাকলে আর চলবে না। ভিন্ রাজ্যে যেখানে কাজ করতাম সেখানে যাওয়ার কথা চলছে। ওই কোম্পানিগুলিও আমাদের ফের ডাকছে।’’
জেলায় ফিরে আসা শ্রমিকদের সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ দেওয়ার কথা বলা হলেও অনেকে তা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। প্রশাসন জানিয়েছিল, শ্রমিকরা সংশ্লিষ্ট ব্লক অফিস বা পঞ্চায়েত অফিসে গিয়ে কাজ চাইলে তাঁদের ১০০ দিনের কাজে লাগানো হবে। কিন্তু অভিযোগ, সেই কাজ এখনও কেউ কেউ পাননি।
এর মধ্যে তিওড়ের শ্রমিকদের ফিরে যাওয়ার ঘটনায় জেলা তৃণমূল সভাপতি অর্পিতা ঘোষ বলেন, ‘‘শ্রমিকদের কাজ দেওয়ার জন্য জেলাশাসককে জানিয়েছি। শ্রমিকদের তালিকা তৈরি করে ১০০ দিনের কাজে যুক্ত করে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। দলীয় তরফেও বলে দিয়েছি নিজের নিজের এলাকার শ্রমিকদের কাজ দেওয়ার জন্য।’’ জেলাশাসক নিখিল নির্মলকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy