আশ্বাস: বিশ্বজিতের পরিবারের সঙ্গে বিডিও। মঙ্গলবার। নিজস্ব িচত্র
এ বার বিশ্বজিতের স্ত্রীর জন্য চাকরির দাবি করলেন ধর্মের বেড়া ভেঙে নজির গড়া মানিকচকের শেখপুরার বাসিন্দারা।
গ্রামের একমাত্র হিন্দু পরিবারের যুবক বিশ্বজিত রজকের চিকিৎসার খরচ যোগাড় ও তাঁর মৃত্যুর পরে অন্তেষ্টির জন্য এগিয়ে এসেছিলেন তাঁরই মুসলিম পড়শিরা। পারিবারিক রীতি রক্ষা করতে নাম সংকীর্তনের আয়োজন থেকে শুরু করে শ্রাদ্ধের খরচও যোগালেন তাঁরা।
জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি থেকে শুরু করে অনেকেই তাতে সামিল হয়েছেন। মঙ্গলবার সকালে মানিকচকের বিডিও উৎপল মুখোপাধ্যায়ও সরকারিভাবে নানা সাহায্য করেন। কিন্তু বিশ্বজিতের বাবা-মা ও স্ত্রী এখন উত্তর হাতরাচ্ছেন একটাই প্রশ্নের, ‘‘এ সব সাহায্য তো সাময়িক। বছর ভর সংসার চলবে কী ভাবে?’’
বিশ্বজিতের আয়েই চলত সাত জনের সংসার।। সংসার বলতে সে নিজে, বাবা নগেন রজক, মা সীমা, স্ত্রী সরিলা এবং তিন মেয়ে নীলিমা, সুপর্ণা ও পূর্ণিমা। বছর দুয়েক আগে লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। বিশ্বজিতের অসুস্থ হওয়ার পর ৬৫ বছরের নগেনবাবু বাধ্য হয়ে দিনমজুরি করতেন। ২৪ এপ্রিল রাতে বিশ্বজিতের মৃত্যুতে পরিবারের মাথায় যেন কার্যত বাজ পড়ে। তখন থেকেই পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন প্রতিবেশীরা। শ্রাদ্ধের খচের জন্য ২২ হাজার টাকা চাঁদাও তোলেন তাঁরা সবাই মিলে ৃ।
কয়েকদিন আগে জেলা পরিষদের সহকারি সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল ৫ হাজার টাকা সাহায্য করেছিলেন। এ ছাড়াও অনেক সংগঠনও পরিবারটিকে আর্থিক সাহায্য দিয়েছে। এ দিন সকালে বিডিও ওই বাড়িতে যান। তিনি বলেন, ‘‘এ দিন ব্লক প্রশাসনের তরফে শ্রাদ্ধের জন্য দেড় কুইন্টাল চাল, এক টিন তেল, ২০ কেজি ডাল, ১০ কেজি চিনি দেওয়া হয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির নিজস্ব ফান্ড থেকে এককালীন ১০ হাজার টাকা সাহায্য করা হবে।’’ বিশ্বজিতের বড় মেয়েটিকে তিলকসুন্দরী স্কুলের হস্টেলে রেখে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ানোর ব্যবস্থা করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
এত কিছু সত্ত্বেও নগেনবাবুর দুশ্চিন্তা যাচ্ছে না। গ্রামবাসীরা তাই দাবি তুলেছেন, সংসারটা যাতে ভেসে না যায় সে কারণে বিশ্বজিতের স্ত্রীর একটা চাকরির ব্যবস্থা করার। এ দিন তাঁরা বিডিওর কাছে গিেয় সেই আর্জিও জানিয়েছেন। বিডিও উৎপলবাবু বলেন, ‘‘বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy