বুধবার অধ্যাপক ও শিক্ষাক্রমীদের একাংশ ঘেরাও করলেন গৌড়বঙ্গের উপাচার্যকে।— নিজস্ব চিত্র
বহিরাগতদের মদতে সুনির্দিষ্ট কিছু পড়ুয়া অশান্তির পরিবেশ তৈরি করছে বলে অভিযোগ তুলে এ বার উপাচার্যকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখালেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়েরই অধ্যাপক ও শিক্ষা কর্মীদের একাংশ। নেতৃত্বে ছিলেন পরীক্ষা সমূহের নিয়ামক সনাতন দাস।
বুধবার দুপুরে প্রায় দেড় ঘন্টা ধরে উপাচার্য গোপাল মিশ্রকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখানোর পর স্মারকলিপি দেন তাঁরা। সনাতনবাবু বলেন, ‘‘মাত্র আট বছরেই গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ছড়িয়েছে। তাই বিশ্ববিদ্যালয়কে বদনাম করতে ও শান্তির পরিবেশ নষ্ট করতে বহিরাগত কিছু মানুষ এক শ্রেণির পড়ুয়াকে উস্কে দিয়ে লাগাতার ঘেরাও, আন্দোলন চালাচ্ছে। অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপাচার্যকে আমাদের দাবিপত্র পেশ করেছি।’’ বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন উপাচার্য গোপাল মিশ্র। তিনি বলেন, ‘‘অধ্যাপক ও শিক্ষা কর্মীদের দাবি পেয়েছি। সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাসখানেক আগে ক্ষমতা দখলকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছিল গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর। তার জেরে বিশ্ববিদ্যালয়ে সরস্বতী পুজোও বন্ধ হয়ে যায়। দু’পক্ষই সরস্বতী পুজো করার আবেদন করলে গোলমালের আশঙ্কায় কর্তৃপক্ষ কাউকেই পুজো করার অনুমতি দেননি। এরপরে নম্বর বাড়ানোর দাবিতে ২৭ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের দ্বিতীয় সেমেস্টারের ছাত্র-ছাত্রীদের একাংশ ২৮ ঘন্টা ধরে পরীক্ষা সমূহের নিয়ামক সনাতন দাসকে ঘেরাও করে রাখে। নিখরচায় খাতা পুনর্মুল্যায়নের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও সেই একই দাবিতে গত, ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে পড়ুয়ারা ঘেরাও করে উপাচার্য গোপাল মিশ্রকে। তিনদিন পরে তৃণমূল নেতাদের মধ্যস্থতায় অবস্থান তুলে নেন স্নাতকোত্তরের বাংলা বিভাগের পড়ুয়ারা। এই ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকাদের একাংশ।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্নাতকোত্তরের বাংলা বিভাগের দ্বিতীয় সেমেস্টারে ২৪৭ জন ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে পুনর্মূল্যায়নের জন্য আবেদন করেন ২২৭ জন। গত, ২০ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত তাদের পুনর্মূল্যায়নের ফলে প্রত্যেকেরই নম্বর বেড়েছে। তারপরেও মার্কশিটে তারিখ ভুল রয়েছে বলে অভিযোগ তুলে এ দিন দুপুরে বাংলা বিভাগের আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের একাংশ ফের উপাচার্যের কাছে গিয়ে পরীক্ষা সমূহের নিয়ামকের ইস্তফা দাবি করেন।
এই বিষয়টি জানাজানি হতেই সনাতনবাবুর নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং শিক্ষা কর্মীদের একাংশ মিছিল করে গিয়ে উপাচার্যকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান। উপাচার্য বলেন, ‘‘আমি দু’পক্ষকেই তাঁদের দাবি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছি। এ দিকে তৃণমূল নেতাদের ঘেরাও তুলতে যাওয়ার প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘‘আমরা সব সময় চাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি শৃঙ্খলা বজায় থাকুক। তাই ওই দিন আমরা গিয়েছিলাম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy