হাসপাতালের মহিলা বিভাগের অফিস ঘরে ভাঙচুরের পর। —নিজস্ব চিত্র।
বিনা চিকিৎসায় রোগিনীর মৃত্যুর অভিযোগে হাসপাতালে ভাঙচুর চালাল মৃতার আত্মীয়রা। শনিবার দুপুর ১২টা নাগাদ মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে এই ঘটনা ঘটে। ইংরেজবাজার থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতার নাম চুমকি মণ্ডল (২০)। তাঁর বাড়ি গাজলের পাণ্ডুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের গোলঘর গ্রামে। মৃতার পরিবারের অভিযোগ, শুক্রবার রাত থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই তরুণী ভর্তি থাকলেও তাঁর চিকিৎসার কোনও ব্যবস্থা হয়নি। শনিবার সকাল থেকে তাঁর অবস্থার আরও অবনতি হলেও কোনও চিকিৎসকের দেখা মেলেনি।
শনিবার সকাল সাড়ে ১০ টা নাগাদ ওই তরুণীর মৃত্যু হয়। এরপরেই মৃতেরা আত্মীয় পরিজনেরা উত্তেজিত হয়ে হাসপাতালে ভাঙচুর চালায়। মহিলা বিভাগের অফিস ঘরে জানালার কাঁচ ভেঙে দেওয়া হয়। চেয়ার টেবিল ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হয়। মৃতার মা বুলু মণ্ডল বলেন, ‘‘আমরা জানতে পেরেছি, মেয়ের সঙ্গে গ্রামের এক যুবকের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ছেলেটি বিয়ে করতে অস্বীকার করলে মেয়ে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। আমরা ওকে হাসপাতালে নিয়ে আসি। তবে চিকিৎসকেরা একবারের জন্যেও ওঁকে দেখেননি। চিকিৎসা না-করায় আমার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে।’’
যদিও হাসপাতালের ডেপুটি সুপার জ্যোতিষ চন্দ্র দাস এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, একেবারে শেষ অবস্থায় ওই তরুণীকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। তাই কিছু করা যায়নি। তিনি বলেন,‘‘ হাসপাতালের কোনও চিকিৎসক ওই তরুণীকে দেখেননি এই অভিযোগ ঠিক নয়। তাও বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মৃতার পরিবারের তরফেও কেউ কোনও লিখিত অভিযোগ করেননি। রোগীর আত্মীয় পরিজনেরা ওই বিভাগের অফিস ঘরে ভাঙচুর চালিয়েছে।আমরা থানায় অভিযোগ করেছি।’’
জানা গিয়েছে যে যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল সে বিয়ে করতে অস্বীকার করায়, শুক্রবার রাতে গোলঘর গ্রামের বাসিন্দা ভবেশ মণ্ডলের মেয়ে চুমকি জমিতে দেওয়ার কীটনাশক খেয়ে ফেলে। পরিবারের লোকজন জানতে পেরে তাকে তড়িঘড়ি গাজলের হাতিমারি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে তাঁর অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাতেই তাকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়।
এদিন সকালে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে প্রথমে হাসপাতালের নিরাপত্তা রক্ষীরা ছুটে যান। ইংরেজবাজার থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ঘটনাটির তদন্ত চলছে। মেয়েটির আত্মহত্যার কারণও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy