Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

বাইরে নীল-সাদা ভিতরে ভাঙা

তার উপর করিডর বছর দু’য়েক আগে জরাজীর্ণ এবং বিপজ্জনক ঘোষণা করা হয়েছিল, বাঁশের ঠেকা দিয়ে রাখা হয়েছিল স্তম্ভগুলো ফেটে দুর্ঘটনার আশঙ্কায়।

ভিতর-বাহির: বাইরে রং করে ঝাঁ চকচকে করা হচ্ছে ভবন।—নিজস্ব চিত্র।

ভিতর-বাহির: বাইরে রং করে ঝাঁ চকচকে করা হচ্ছে ভবন।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৭ ০২:০৯
Share: Save:

সুবর্ণ জয়ন্তীর আয়োজন সম্পূর্ণ করতে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। নীল সাদা রঙ করে ঝাঁ চকচকে করে তোলা হচ্ছে হাসপাতাল ভবন থেকে সুপার, অধ্যক্ষদের দফতরগুলোও। স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্রে জানিয়েছে, প্রায় ৮ কোটি টাকা খরচ করে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে মেডিক্যাল কলেজ। ৫০ বছর উপলক্ষে যে নতুন অডিটরিয়াম গড়ে তোলা হয়েছে সেটিও নীল সাদায় সেজে উঠেছে। নতুন রঙের পোচের আড়ালে অবশ্য জেগে থাকছে ওয়ার্ডের বেহাল পরিস্থিতিও। কোনও ওয়ার্ড নিয়মিত সাফাই হয় না। কোথাও শৌচালয়ে দুর্গন্ধে রোগীরা ঢুকতে পারেন না। শয্যার অভাবে আজও অর্ধেকের বেশি রোগী মেঝেতে বা একই শয্যায় একাধিকজনকে থাকতে হয়।

তার উপর করিডর বছর দু’য়েক আগে জরাজীর্ণ এবং বিপজ্জনক ঘোষণা করা হয়েছিল, বাঁশের ঠেকা দিয়ে রাখা হয়েছিল স্তম্ভগুলো ফেটে দুর্ঘটনার আশঙ্কায়। সেই স্তম্ভের উপর বালি-সিমেন্ট লাগিয়ে রং করে বাঁশের ঠেকাগুলো অনেক জায়গায় সরিয়ে দেওয়ায় বিপদের আশঙ্কা করছেন হাসপাতালের চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশ। অনেকে করিডর দিয়ে চলাফেরা করতে সাহস পাচ্ছেন না। কেন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দেখছেন না সেই প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। হাসপাতালের সুপার মৈত্রেয়ী কর বা অধ্যক্ষ সমীর ঘোষ রায় উভয়েই জানান, একাধিকবার টেন্ডার করা হলেও নিয়মমাফিক ঠিকাদার সংস্থা অংশ নেয়নি। ফের নতুন করে পুরো প্রক্রিয়া করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সুদীপ মালাকার, দীপক বর্মনদের মতো রোগীর আত্মীয়দের অভিযোগ, যে কোনও সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।

ভিতরে দেওয়াল ভাঙা।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, পাওয়ার গ্রিড, পূর্ত দফতর এবং এমইডি বিভাগের তরফে হাসপাতাল সাফাইয়ের ব্যবস্থা হয়। রং, সংস্কার কাজের জন্য আলাদা বরাদ্দ মেলে। অন্তত ৫ কোটি টাকা খরচ করে তৈরি করা হয়েছে অডিটোরিয়াম। সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে ঘটা করে সাজানোর আর একটি কারণ হল, মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত থাকাতে পারেন। ১৮ নভেম্বর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন। উত্তরবঙ্গ সফরে এলে মুখ্যমন্ত্রী আসার সম্ভবনা অবশ্য ২০ বা ২১ নভেম্বর।

চিকিৎসকদের একাংশের কথায়, হাসপাতাল সাজানো হোক কিন্তু তার সঙ্গে রোগী পরিষেবার দিকটি অগ্রাধিকার দেওয়া দরকার। ওয়ার্ডগুলোতে রোগীদের পর্যাপ্ত শয্যা নেই। কর্তৃপক্ষেরই একাংশের দাবি, সাফাইকর্মী পর্যাপ্ত না-থাকায় ওয়ার্ড, শৌচাগার সাফসুতরো রাখা যাচ্ছে না। চিকিৎসকের অভাবে ট্রমা সেন্টার চালু করা যায়নি। নিউরোলজি নেফ্রলজি বিভাগে চিকিৎসক নেই, ইউরোলজিও চলছে খুঁড়িয়ে। ১০টি ডায়ালিসিস যন্ত্রের মধ্যে অর্ধেকই অকেজো হয়ে পড়ে থাকে। কেমোথেরাপির মতো ক্যান্সারের চিকিৎসা মিললেও ওই বিভাগকে অাধুনিক করার কোনও উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ।

অন্য বিষয়গুলি:

Uttarbanga Medical college Breaks Down Damaged
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE