হামলা: অভিযুক্তদের বাড়িতে আগুন। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক
দুই পরিবারের জমি বিবাদকে কেন্দ্র করে এক বধূকে খুনের অভিযোগ উঠেছিল বুধবার। এ দিন বৃহস্পতিবার অভিযুক্ত দু’জনের বাড়ি পুড়িয়ে দেওযার অভিযোগ উঠল। জাতীয় সড়ক অবরোধ করে দমকলের ইঞ্জিন আটকে রাখা হল যতক্ষণ না বাড়ি ভস্মীভূত হচ্ছে। এই ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোরও চলল দিনভর।
গত বুধবার সকালে একটি জমিতে হাল দেওয়াকে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের সংঘর্ষ হয় বলে অভিযোগ। টেকাটুলির আড়াই বিঘা জমির মালিকানা নিয়ে রায় এবং মণ্ডল দুই পরিবারের পুরোনো বিবাদ রয়েছে। বুধবার জোর করে ট্রাক্টর নিয়ে মণ্ডল পরিবারের সদস্যরা জমি চাষ করতে শুরু করে বলে অভিযোগ। রায় পরিবারের দুই মহিলা বাধা দিলে তাঁদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। সেই মারধরে প্রতিমা রায়ের (৫২) মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ। তাঁর স্বামী প্রিয়নাথের দাবি, অভিযুক্তরা জয় শ্রী রাম স্লোগান দিতে দিতে পালিয়ে যায়। প্রিয়নাথের পরিবার এলাকায় তৃণমূল সমর্থক এবং মণ্ডল পরিবার বিজেপি সমর্থক বলে এলাকায় পরিচিত।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে টেকাটুলি আবার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। অভিযুক্ত মণ্ডল পরিবারের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেন একদল বাসিন্দা। বাড়ির বিছানা থেকে আসবাব বাইরে বের করে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। কোনও মতে পরিস্থিতি শান্ত হয়। কিন্তু দুপুরে যখন প্রতিমা রায়ের দেহ এসে পৌঁছয় তখন ফের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। দেহ নিয়ে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন একদল বাসিন্দা। সে সময়ে ফের মণ্ডল বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে দমকলের ইঞ্জিন পৌঁছলে অবরোধে আটকে রাখা হয়। বাড়ি ভস্মীভূত না হওয়া পর্যন্ত ইঞ্জিন ছাড়া হবে না বলে বলে দাবি জানাতে থাকেন বাসিন্দারা। আড়াই ঘণ্টা অবরোধ চলার পরে ময়নাগুড়ি থানার আইসি তমাল দাস লিখিত আশ্বাস দিয়ে জানান, অভিযুক্তদের দ্রুত ধরা হবে। তারপরে অবরোধ ওঠে।
যদিও পরিস্থিতি তখনও শান্ত হয়নি। অবরোধ উঠলেও গত বুধবার যার ট্রাক্টর নিয়ে জমিতে চাষ দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ, সেই শান্তি মণ্ডলের বাড়িতেও আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়।
শান্তিবাবুও বিজেপি কর্মী বলে পরিচিত। এ দিকে অভিযুক্তরা কেউ এলাকায় নেই বলে অভিযোগ। আতঙ্ক ছড়িয়েছে বহু গ্রামে। এলাকার বাসিন্দা বিজেপি কর্মীদের অনেকেই দেখা যাচ্ছে না বলে দাবি। বিজেপির জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামীর মত, ‘‘এই ঘটনা পুরোপুরি পারিবারিক। তৃণমূল মিছিমিছি রাজনীতি করছে।’’
নিহতের দেহের ওপর এ দিন তৃণমূলের পতাকা বিছিয়ে দেওয়া হয়। নিহতের দেহ তৃণমূলের পার্টি অফিসে নিয়ে গিয়েও শ্রদ্ধা জানানো হয়। দক্ষিণ খাগড়াবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান বাবলু রায় বলেন, “এ দিন বাসিন্দারা বিক্ষোভ করেছে। বিজেপির অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমেছে।” জেলা বিজেপির তরফে দাবি করা হয়েছে, এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই।
জেলা পুলিশের দাবি, আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy