ছকভাঙা: স্কুলের চার ছাত্রী পুজোর মহড়ায় ব্যস্ত। বুধবার। নিজস্ব চিত্র।
চিরাচরিত প্রথা ভেঙে গতবছর স্কুলের সরস্বতী পুজোয় পুরোহিতের দায়িত্ব পালন করছিল স্কুলের নবম শ্রেণির দুই ছাত্রী। ওই দুই ছাত্রী এ বারে দশম শ্রেণি। গতবছরে ছাত্রীদের মধ্যে থেকে পুরোহিত পেতে খানিকটা বেগ পেতে হলেও এ বছরে জলপাইগুড়ি রাষ্ট্রীয় উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে পুজোর পুরোহিত হতে স্কুলের অনেকের মধ্যেই উৎসাহ দেখা গিয়েছে বলে দাবি স্কুলের।
অষ্টম শ্রেণির দুই ছাত্রীকে সঙ্গে নিয়ে এ বার সরস্বতী পুজো করবে স্কুলের দশম শ্রেণির দুই ছাত্রী কুহেলী সান্যাল ও প্রিয়াংশি রায়। শাস্ত্রীয় রীতি মেনে স্কুলে পুজোর মহড়ায় ব্যস্ত এখন এই ছাত্রীরা। জানা গিয়েছে, এ বারের পুজোর প্রধান পুরোহিতের আসনে বসবে অষ্টম শ্রেণির ত্রিপর্ণা গুণ। সহকারী পুরোহিত হিসেবে থাকবে অষ্টম শ্রেণির অপর ছাত্রী জয়িতা বর্মণ। এই ছাত্রীদের পুরোহিতের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন কলেজ পড়ুয়া পুরোহিত সাত্যকি মুন্সী। এ দিন গিয়ে দেখা গেল, স্পষ্ট সংস্কৃত মন্ত্রোচ্চারণে বিদ্যালয় চত্বর গমগম করছে।
এই স্কুলের ৭৬ বছরের ইতিহাসে গতবছরেই প্রথম প্রথা ভেঙে পুরোহিতের আসনে বসেছিল দুই ছাত্রী। এ বারে একসঙ্গে চার ছাত্রীর পুজো অবশ্যই বিশেষ মাত্রা পাবে বলে আশাবাদী স্কুল কর্তৃপক্ষ।
ত্রিপর্ণা বলে, ‘‘বাড়িতে মায়ের সঙ্গে ঠাকুর ঘরে মাঝেমধ্যে পুজো করলেও নিজে পুরোহিতের আসনে বসবে পুজো করব এমনটা ভাবিনি। খুবই ভাল লাগছে মন্ত্র পড়তে।’’ জয়িতার কথায়, ‘‘বাড়িতে পুজোর ঘরে যাওয়ার অভ্যাস নেই আমার। তবে স্কুলে পুজোর পুরোহিতের দায়িত্ব পেয়ে একটা অন্য অনুভূতি হচ্ছে।’’ কুহেলী ও প্রিয়াংশি দু’জনেই স্কুলের দুই বোনকে পুজোর আসনে বসাতে সব ধরনের সহযোগিতা করছে।
জলপাইগুড়ি রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সঙ্গে যুক্ত জলপাইগুড়ি আনন্দচন্দ্র কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র সাত্যকি মুন্সী। ছাত্রীদের পুজোর পাঠ ও শাস্ত্রীয় রীতি শেখানোর ভার পড়েছে তাঁর উপর। সাত্যকি বলেন, ‘‘খুব ছোট বয়স থেকেই জলপাইগুড়ি রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সঙ্গে আমার যোগাযোগ। আশ্রমের মহারাজদের কাছ থেকেই পুজোর শিক্ষা পেয়েছি।’’
স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা নিবেদিতা সাহা কলকাতা রামকৃষ্ণ ও সারদা মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যাভবনের প্রাক্তন ছাত্রী। বিদ্যালয়ের এই পরম্পরা ভাঙার প্রধান কারিগর তিনিই। তাঁর কথায়, ‘‘পাঁচ বছর মিশনে থেকে দেখেছি, মাতাজীরাই জমিতে চাষ করছেন। গাড়ি চালাচ্ছেন। পঠনপাঠনের কাজ করছেন। একই সঙ্গে পুজোপাঠও করছেন তাঁরা। ভারতীয় সংস্কৃতি ও সনাতনী ঐতিহ্য বজায় রেখেও বিজ্ঞানমনস্ক হওয়া যায়। আমার অনেকদিনের ইচ্ছে ছিল বিদ্যালয়ের পুজো শাস্ত্রীয় রীতি মেনে ছাত্রীরাই করুক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy