Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
ভয়ে পড়ে গেলে শুরু হয় মারধর

দুই গণপিটুনি, জখম দুই

প্রচন্ড মার খেয়ে সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেন তিনি। তখন তিনি মরে গিয়েছেন ধরে নিয়ে যাঁরা পিটুনি দিচ্ছিল, তাদের অনেকেই সরে পড়ে।

চিকিৎসা: গণপিটুনিতে আহত চিকিৎসাধীন জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র

চিকিৎসা: গণপিটুনিতে আহত চিকিৎসাধীন জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৯ ০৭:৫৭
Share: Save:

ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি এ বার জলপাইগুড়ি শহরের দোরগোড়ায়। বুধবার শহর লাগোয়া জয়পুর চা বাগানে মধ্যবয়স্ক এক ব্যক্তিকে গণপিটুনি দিল বাসিন্দারা। প্রতক্ষ্যদর্শীদের দাবি, মাটিতে ফেলে বাঁশ-লাঠি দিয়ে মারা হতে থাকে ওই ব্যক্তিকে। যাঁদের হাতে লাঠি ছিল না, তাঁরা পা দিয়েই আঘাত করতে শুরু করেন। ওই ব্যক্তির মুখ, নাক দিয়ে রক্ত বের হতে শুরু করে বলে দাবি।

প্রচন্ড মার খেয়ে সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেন তিনি। তখন তিনি মরে গিয়েছেন ধরে নিয়ে যাঁরা পিটুনি দিচ্ছিল, তাদের অনেকেই সরে পড়ে। খবর পেয়ে এলাকার এক জনপ্রতিনিধি সহ কয়েক জন ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপপাতালে পৌঁছে দেয়। হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, ব্যক্তির শারীরিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল। তবে বুধবার রাত পর্যন্ত ওই ব্যক্তির পরিচয় জানা যায়নি।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, মঙ্গলবার রাত থেকে জয়পুর চা বাগানের পাকা লাইনে ওই ব্যক্তিকে দেখা যায়। ইতস্তত ঘোরাঘুরি করছিলেন তিনি। বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, ওই ব্যক্তি মানসিক ভাবে স্বাভাবিক নন। তাঁকে লাগোয়া একটি এলাকায় মাঝে মধ্যে দেখা যায়। কোন ভাবে জয়পুর চা বাগানে তিনি চলে এসেছিলেন বলে দাবি তাঁদের। যদিও বুধবার ভোরে ওই ব্যক্তিকে ছেলেধরা বলে দেখিয়ে কয়েক জন চেঁচামেচি জুড়ে দেন বলে অভিযোগ। এলাকায় ‘ছেলেধরা এসেছে’ বলে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কয়েক জন সাবধানও করতে শুরু করে দেন। তাতেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ওই ব্যক্তিকে ধাওয়া করেন কয়েক জন যুবক। ভয় পেয়ে তিনি দৌড়তে গিয়ে উল্টে পড়ে যান। তারপরেই মারধর শুরু হয় বলে অভিযোগ।

জলপাইগুড়ির জেলা পুলিশ সুপার অভিষেক মোদী বলেন, “তদন্ত শুরু হয়েছে। আইন মেনে পদক্ষেপ হবে। আপাতত এলাকায় সচেতনতা প্রসার করা হচ্ছে।” এলাকায় ছেলেধরা গুজব রুখতে মাইকে ঘোষণা শুরু করেছে পুলিশ। এলাকার বাছাই করা নাগরিকদের ডেকে গুজবের বিরুদ্ধে সকলকে সচেতন করার আর্জিও জানাচ্ছে পুলিশ। জয়পুর চা বাগানের পঞ্চায়েত সদস্য নারায়ণ ছেত্রী বলেন, ‘‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। খোঁজ করে জানতে পারি কিছু মানুষ গুজবে কান দিয়ে ওই ব্যক্তিকে গণপিটুনি দিয়েছে। চা বাগানের শ্রমিকদের সচেতন করা হচ্ছে।’’

পাতকাটা গ্রামপঞ্চায়েত প্রধান প্রধান হেমব্রম বলেন, "পঞ্চায়েতের তরফেও গুজব মোকাবিলার চেষ্টা হচ্ছে।’’ বুধবার রাত পর্যন্ত আক্রান্তের পরিচয় মেলেনি। সে ভবঘুরে বলেই জানতে পারছে পুলিশ। তবে কে বা কারা গুজব ছড়াল, তা খোঁজার চেষ্টা শুরু করেছে পুলিশ। এলাকায় অস্থিরতা তৈরির জন্যই ইচ্ছাকৃত ভাবে গুজব ছড়ানো চলছে বলে প্রাথমিক ভাবে অনুমান পুলিশ-প্রশাসনের একাংশের।

অন্য বিষয়গুলি:

Violence Crime Beating
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy