বেহাল: পানীয় জলাধারের গায়েই আবর্জনার স্তূপ। নিজস্ব চিত্র
অসুস্থ ছেলের জন্য জলের বোতল হাতে নিয়ে সিস্টারদের কেবিনে ছুটে গেলেন জাহানারা বেওয়া। সেখানে জল না পেয়ে ছুটলেন হাসপাতাল ভবনের সামনে পরিস্রুত পানীয় জলাধারটিতে। সেখানেও মিলল না এক ফোঁটা জল। অবশেষে নোংরা আবর্জনার মধ্যে থাকা ট্যাপকল থেকেই বোতলে জল ভরে ছেলেকে খাওয়ালেন তিনি।
শুধু জাহানারা বেওয়ায় নয়, রোজ পানীয় জলের জন্য এমনই চরকিপাক খেতে হচ্ছে মালদহ মেডিক্যালে ভর্তি থাকা রোগীর আত্মীয়-স্বজনদের। তাঁদের কথায়, ‘‘নর্দমার পাশে থাকা ট্যাপ থেকে শুধু দিনের নির্দিষ্ট সময়েই জল মেলে। বাকি সময় পকেট থেকে টাকা খরচ করে জল কিনে খেতে হয়।’’ জৈষ্ঠের গরমে মেডিক্যালে পানীয় জলের এমন সমস্যায় ক্ষোভে ফুঁসছেন সাধারণ মানুষ। যদিও সমস্যা দ্রুত মেটানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে সাফাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।
আট বছর আগেউ জেলা সদর হাসপাতাল থেকে মেডিক্যাল কলেজে উন্নীত হয়েছে এই হাসপাতাল। তৈরি হয়েছে ঝাঁ চকচকে ভবন। রোগীদের ভিড়ও বাড়ছে। জানা গিয়েছে, শুধুমাত্র বহির্বিভাগেই দৈনিক গড়ে দেড় হাজার করে রোগী চিকিৎসার জন্য আসেন। অন্তর্বিভাগেও হাজারখানেক রোগী ভর্তি। তাঁদের সঙ্গে আসেন এক বা দুজন করে আত্মীয়স্বজন। তাই অসংখ্য মানুষের ভিড় জমলেও পানীয় জল না থাকায় দুর্বিষহ হয়ে পড়ে পরিস্থিতি। দু’মাস ধরে অকেজো জরুরি বিভাগের সামনে থাকা পরিস্রুত পানীয় জলাধারটি। হোর্ডিং, কাঠের বোর্ড, মোটরবাইক ঢেকে গিয়েছে সেই জলাধারটিকে। তাই নর্দমার পাশের ট্যাপকল থেকেই জল সংগ্রহ করতে হচ্ছে। আবর্জনার মধ্যে দাঁড়িয়েই খাওয়ার জল নিতে হচ্ছে রোগীর পরিজনদের।
অনেক সময় তাও মেলে না। তখন টাকা খরচ করে জল কিনে খেতে হয়। সুবীর ঘটক, দুর্গেশ প্রামাণিকদের মতো রোগীরা জানাচ্ছেন, ‘‘সাতদিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি থেকে শুধু মাত্র জলের জন্য খরচ হয়েছে হাজার খানেক টাকা।’’ জানা গিয়েছে, এখন কেবল মাত্র সিসিইউ, আইসিইউ ওয়ার্ডেই পানীয় জলের ব্যবস্থা থাকলেও বাকি ওয়ার্ডগুলিতে নেই। হাসপাতালের সুপার তথা সহ অধ্যক্ষ অমিত কুমার দাঁ বলেন, ‘‘হাসপাতাল চত্বরে ছটি পরিস্রুত পানীয় জলের কল বসানো হচ্ছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে রোগীদের যাতে জল মেলে সেই পদক্ষেপ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy