সাফারি পার্ক। —নিজস্ব চিত্র
বেঙ্গল সাফারি পার্কে বসতে চলেছে ট্র্যাপ ক্যামেরা। জাতীয় উদ্যান, অভয়ারণ্যের বাইরে কোনও জঙ্গল এলাকায় এই প্রথম ট্র্যাপ ক্যামেরা বসছে বলে জানাচ্ছেন বন দফতরের কর্তারা। এমনকি চিড়িয়াখানা বা সাফারি পার্কের দিক থেকেও এই প্রথম বসতে চলেছে ট্র্যাপ ক্যামেরা। চিতাবাঘ সচিন পালানোর পরে সাফারি পার্কের নিরাপত্তা আঁটোসাটো করার জন্য সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর কথাও হয়েছিল। এ বার রাজ্য বন দফতর এবং পশ্চিমবঙ্গ চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পাকাপাকিভাবে সাফারি পার্ক জুড়ে বসতে চলছে ৮টি ট্র্যাপ ক্যামেরা।
পার্ক সূত্রের খবর, নেওরাভ্যালি থেকে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প বা পশ্চিম মেদিনীপুরের লালগড়ে বাঘের খোঁজে বিভিন্ন সময়ে বসেছে ক্যামেরা ট্র্যাপ। সম্প্রতি সিকিমে এমন ট্র্যাপ ক্যামেরায় দেখা মিলেছে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের। সাফারি পার্কে স্বাভাবিক জঙ্গলের ঘেরাটোপে থাকে বুনোরা। ২৪ ঘণ্টা তাদের গতিবিধি নজরে রাখতে সিসিটিভি ক্যামেরা ছাড়াও ভরসা করা হচ্ছে ট্র্যাপ ক্যামেরায়।
বেঙ্গল সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত অধিকর্তা রাজেন্দ্র জাখর বলেন, ‘‘সচিন নিখোঁজ হওয়ার পরে ৭টি ক্যামেরা অস্থায়ীভাবে বসানো হয়েছিল। এ বার স্থায়ীভাবে বসছে। পার্কের বিভিন্ন অংশে ৮টি ট্র্যাপ ক্যামেরা থাকবে। ২৪ ঘণ্টা তাতে রেকর্ডিং হবে। সপ্তাহে দু’দিন রেকর্ড হওয়া ছবি খতিয়ে দেখা হবে।’’
বন দফতর সূত্রের খবর, ট্র্যাপ ক্যামেরা ছাড়াও অন্তত ৫০টি সিসিটিভি ক্যামেরা বসবে পার্কে। এখন পর্যটকদের গতিবিধি দেখার জন্য সিসিটিভি ক্যামেরা ব্যবহার হয়। ঢোকা-বের হওয়ার গেট, ক্যাফেটেরিয়া, খোলা চত্বর এবং প্রাণীদের নাইট শেল্টারে কয়েকটি ক্যামেরা রয়েছে। এ বার প্রতিটি সাফারি এলাকার মধ্যে সিসিটিভি ক্যামরা থাকবে। রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার, লেপার্ড, হিমালয়ান ব্ল্যাক বিয়ার, লুপ্তপ্রায় বিভিন্ন বিড়াল প্রজাতির প্রাণী, গন্ডার, কুমির-ঘড়িয়াল এবং তৃণভোজীদের পার্কে সিসিটিভি ক্যামেরা থাকবে।
তবে শুধু প্রযুক্তির উপর নির্ভর করে থাকতে চাইছেন না কর্তারা। ঠিক হয়েছে, রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার, চিতাবাঘ এবং ভালুক সাফারির ফেন্সিং-র বাইরে গোল করে ৭০০-৮০০ মিটার এলাকা জুড়ে নাইলনের নেট বসানো হবে। তার সামনে বালির আস্তরণ থাকবে। এতে ফেন্সিং-র বাইরে কোনও প্রাণী চলে বালিতে তার পায়ের ছাপ থাকবে।
নতুন বছরের প্রথম দিনই ১২ ফুটের ফেন্সিং পেরিয়ে পালায় চিতাবাঘ সচিন। যদিও চারদিন পরে খাবারের খোঁজে নিজেই ফিরে আসে। প্রাথমিক তদন্তে বনকর্তারা মনে করছেন, ফেন্সিং-র ১০ ফুটের মধ্যে থাকা গাছগুলো বড় হয়ে যাওয়াতেই সমস্যা হয়েছিল। তাঁদের ধারণা, সচিন সম্ভবত তেমনই একটির গাছের মাথায় উঠে লাফ দিয়ে পালায়। চিতাবাঘ বা বাঘ ধরার জন্য এ বার থেকে সাফারি পার্ক জুড়ে স্থায়ী ভাবে ১৫টি ফাঁদ পাতা খাঁচাও রাখা হচ্ছে বলে জানান বনকর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy