মুহূর্ত: নেওড়ার জঙ্গলে ট্র্যাপ ক্যামেরায় ধরা পড়া বাঘের ছবি।
হাতির তাণ্ডবে কখনও নজরদারির ক্যামেরা লুটিয়ে পড়ছে মাটিতে। আবার কোথাও বাঁদরের পালের আঁচড়ে খারাপ হয়ে যাচ্ছে। কয়েকটি বনাঞ্চলে সেই লুকানো ক্যামেরা হাপিস করে দিচ্ছে কাঠচোর, চোরাশিকারিরাও। উত্তরবঙ্গের বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প, মহানন্দা বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্য, নেওড়াভ্যালি, জলদাপাড়ার মতো এলাকায় এমনই ঘটছে। তাই প্রতিটি এলাকায় বসানো ক্যামেরা সুরক্ষিত রাখতে বনকর্মীদের বাড়তি সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন বন দফতর। বনমন্ত্রী বিনয় বর্মন বলেন, ‘‘বিশদে খোঁজখবর শুরু হয়েছে। নজরদারিতে কোথাও যাতে এতটুকুও ফাঁক না থাকে সেটা নিশ্চিত করতে অফিসার-কর্মীদের আরও তৎপর হতে বলা হয়েছে।’’
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য জুড়ে স্পর্শকাতর বনাঞ্চলে ৭০০টি ‘ট্র্যাপ ক্যামেরা’ বসানো হয়েছে। আরও ৩০০টি বসানোর প্রক্রিয়া চলছে। সুন্দরবনেই ৩০০টির বেশি ক্যামেরা রয়েছে। বক্সা, জয়ন্তী, জলদাপাড়া, গরুমারা, মাদারিহাট, নেওড়াভ্যালি, মহানন্দা অভয়ারণ্যেও ৩০০টির মতো ক্যামেরা রয়েছে। বনকর্মীদের কয়েকজন জানান, ক্যামেরা বসানোর পরে নজরদারিতে অনেক সুবিধা মিলছে। বক্সায় ক্যামেরার ছবি দেখে একজন চোরাশিকারিকে বন বিভাগ গ্রেফতারও করেছে। ওই ক্যামেরা দেখেই ১১ জনকে কাঠচুরির সঙ্গে যুক্ত বলেও বক্সা, জলদাপাড়ায় ধরা হয়েছে। বন অফিসারদের একাংশের সন্দেহ, বন্য জন্তুদের বদলে কাঠচোর, চোরাশিকারিদের হাতেই লুকোনো ক্যামেরা নষ্ট হচ্ছে। কারণ, অকেজো ক্যামেরাগুলি উদ্ধারের পরে দেখা গিয়েছে কোনটিতে আঁচড়ের দাগ, কোনটি দুমড়ে গিয়েছে। হাতি, বাঁদর সহ নানা বন্যপ্রাণীর উপদ্রবে তা হয়ে থাকতে পারে বলে অনুমান বন দফতরের। উত্তরবঙ্গের মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) উজ্জ্বল ঘোষ বলেন, ‘‘গোপন ক্যামেরা চুরি রুখতে বাড়তি নজর রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশের সহযোগিতাও নেওয়া হচ্ছে।’’ তবে আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার সুনীল যাদব জানান, বছরের গোড়ার দিকে ট্র্যাপ ক্যামেরা চুরির অভিযোগে মামলা হয়েছিল। তাঁর দাবি, ‘‘গত ৩-৪ মাসে নতুন করে কোনও ক্যামেরা চুরির অভিযোগ জমা পড়েনি।’’ যদিও হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশনের (ন্যাফ) মুখপাত্র অনিমেষ বসু মনে করেন, ক্যামেরা চুরি রুখতে বনবস্তিবাসীদেরও সাহায্য নিতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy