Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

অবশেষে দক্ষিণের ট্রেন, দার্জিলিং চলবে, বন্ধ কাঞ্চনকন্যা

বালুরঘাট-শিলিগুড়ি ইন্টারসিটি, বালুরঘাট-মালদহ গৌড় লিঙ্ক, মালদহ এবং মালদহ কোর্ট থেকে কাটিহার পর্যন্ত দু’টি ট্রেন, এনজেপি-মালদহ প্যাসেঞ্জার, মালদহ কোর্ট-শিলিগুড়ি ট্রেনগুলিও বুধবার বাতিল রাখা হয়।

স্বস্তি: তিন দিন পরে দক্ষিণবঙ্গে যাওয়ার ট্রেন চালু হল। এনজেপিতে দার্জিলিং মেলের দৃশ্য। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

স্বস্তি: তিন দিন পরে দক্ষিণবঙ্গে যাওয়ার ট্রেন চালু হল। এনজেপিতে দার্জিলিং মেলের দৃশ্য। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৫:৩৪
Share: Save:

রবিবার থেকে দক্ষিণবঙ্গ সংযোগকারী উত্তরবঙ্গের ট্রেনগুলি বন্ধ। দু’দিন পরে অসম আর কলকাতা সংযোগকারী ট্রেনগুলির কয়েকটি চলতে শুরু করে। কিন্তু দার্জিলিং মেল, পদাতিক, উত্তরবঙ্গ বা কাঞ্চনকন্যার মতো দুই বঙ্গের মধ্যে চলা ট্রেনগুলি কেন চালানো হচ্ছে, উঠেছিল সেই প্রশ্নও। শেষ পর্যন্ত বুধবার থেকে দার্জিলিং মেল চালু করছে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল। বৃহস্পতিবার থেকে উত্তরবঙ্গ এবং এনজেপি শতাব্দী এক্সপ্রেস চালু হবে বলেও জানানো হয়েছে। তবে বৃহস্পতিবারও ৪২টি ট্রেন বাতিল রেখেছে রেল। তাতেই প্রশ্ন উঠছে, যে সমস্ত এলাকায় ঝামেলা, গোলমাল হয়নি, সেই সব রুটে কেন ট্রেন বন্ধ রাখা হচ্ছে?

বালুরঘাট-শিলিগুড়ি ইন্টারসিটি, বালুরঘাট-মালদহ গৌড় লিঙ্ক, মালদহ এবং মালদহ কোর্ট থেকে কাটিহার পর্যন্ত দু’টি ট্রেন, এনজেপি-মালদহ প্যাসেঞ্জার, মালদহ কোর্ট-শিলিগুড়ি ট্রেনগুলিও বুধবার বাতিল রাখা হয়। এ দিনই নতুন করে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বৃহস্পতিবার থেকে আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত বাতিল রাখা হয়েছে এই রুটের কয়েকটি ট্রেন। তার জেরে এ দিন বিভিন্ন স্টেশন ক্ষোভ প্রকাশ করেন যাত্রীরা। তাঁদের দাবি, কোনও গোলমাল ছাড়াও ট্রেন বাতিলের মতো সিদ্ধান্ত নিয়ে যাত্রীদের বিপদে ফেলা হচ্ছে।

রেল সূত্রে দাবি করা হয়েছে, মালদহ জেলার বিভিন্ন জায়গায় ছড়ানো অশান্তির জেরে বারবার নিরাপত্তা পরিস্থিতি যাচাই করা হচ্ছে। যেমন গোয়েন্দা রিপোর্ট আসছে, রাজ্য সরকারের সঙ্গে কথা বলে যা জানা যাচ্ছে, তার উপরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক শুভানন চন্দ বলেন, ‘‘যাত্রীসুরক্ষা আমাদের অগ্রাধিকার। মালদহের ঘটনার পর এখনও পূর্ণমাত্রায় পরিষেবা দেওয়ার মতো অবস্থায় রেল পৌঁছতে পারেনি। তা ছাড়াও গোলমালের আশঙ্কা যে সমস্ত রুটে রয়েছে, সেগুলিতে আপাতত ট্রেন বাতিলই রাখতে হচ্ছে।’’ তবে যে লাইনে অসমের ট্রেন চলছে, সেই লাইনে কেন পদাতিক, কাঞ্চনকন্যা চালানো হবে না, সেই প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে গিয়েছেন রেল কর্তারা।

হরিশ্চন্দ্রপুরের খবর, এ দিন মালদহের ভালুকা রোড, হরিশ্চন্দ্রপুর, সামসি স্টেশন পরিদর্শন করেন রেলকর্তারা। বুধবার দুপুরে স্টেশনে এসে সব খতিয়ে দেখেন উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহারের ভারপ্রাপ্ত ডিআরএম রবিশ কুমার। সঙ্গে ছিলেন আরপিএফের কর্তারাও। ভারপ্রাপ্ত ডিআরএম জানান, এ দিন থেকে বেশ কয়েকটি ট্রেন চালু হয়েছে। এ ছাড়া বেশ কিছু ট্রেন বিভিন্ন স্টেশনে দাঁড়িয়ে রয়েছে! সেগুলি গন্তব্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। দু’এক দিনের মধ্যে ট্রেন চলাচল পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে দাবি করেন তিনি।

রেলের দাবি, এই স্টেশনগুলিতে লুপলাইন আর সিগন্যালিং ব্যবস্থা কাজ চালানোর মতো ঠিক করা হয়েছে।

নতুন নাগরিকত্ব আইন এবং জাতীয় পঞ্জিকরণের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিহার বন্‌ধের ডাক দিয়েছে কয়েকটি সংগঠন। যে হেতু বালুরঘাট-শিলিগুড়ি এবং মালদহ-কাটিহার বিহার ছুঁয়ে যায়, তার জন্য এখন এই ট্রেনগুলি বাতিল রাখা হচ্ছে। রেল সূত্রে দাবি করা হয়েছে, যে সব রুটে বিক্ষোভের আশঙ্কা রয়েছে, সেখানে ভালভাবে আশ্বস্ত না হয়ে ট্রেন চালানোর ঝুঁকি নিচ্ছে না রেল। বুধবার সকালেও রেলকর্তাদের কাছে খবর আসে, বিক্ষোভ হতে পারে উত্তর দিনাজপুরের পাঞ্জিপাড়ায়। যদিও গোলমাল হয়নি।

রেলের তরফে এ-ও দাবি করা হয়েছে, ভালুকা আর হরিশচন্দ্রপুরের ঝামেলার পর থেকে এখনও পূর্ণ মাত্রায় ট্রেন চালানোর মতো অবস্থায় রেল পৌঁছতে পারেনি। তাই আগে মালগাড়ি, দূরপাল্লার যাত্রী ট্রেন চালানো হচ্ছে। পুরোপুরি স্বাভাবিক হলে তবেই ইন্টারসিটি এবং প্যাসেঞ্জার ট্রেনগুলিকে নিয়ে ভাবা হবে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE