Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Raigunj

Raigaunj: বিয়ের দিন দুর্ঘটনায় আহত বর, কনের ‘সম্মান’ বাঁচাতে ছেলেকে ছাদনাতলায় পাঠালেন মা

বৃহস্পতিবার রাতে বিহারের লাচ্ছোর গ্রামে বিয়ে করতে যাচ্ছিলেন রায়গঞ্জের সুভাষগঞ্জ ঘোষপাড়া এলাকার বাসিন্দা বাবুরাম কর্মকার।

গ্রাফিক্স সনৎ সিংহ।

গ্রাফিক্স সনৎ সিংহ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০২১ ২০:৫৩
Share: Save:

বিয়ে করতে যাওয়ার সময়ে পথ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন বর। হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন তাঁর দিদি ও ছোট্ট ভাগ্নি। বিয়ে ভাঙার উপক্রম হতেই কনেকে ‘লগ্নভ্রষ্টা’ অপবাদে বিদ্ধ করতে শুরু করেছিলেন পাড়া-প্রতিবেশীরা। সামাজিক অনুশাসনের এই রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ওই রাতেই ছেলেকে বিয়ে করতে পাঠালেন মা।
বৃহস্পতিবার রাতে বিহারের লাচ্ছোর গ্রামে বিয়ে করতে যাচ্ছিলেন রায়গঞ্জের সুভাষগঞ্জ ঘোষপাড়া এলাকার বাসিন্দা বাবুরাম কর্মকার। পথে করনদিঘি থানার বিলাসপুর এলাকায় একটি লরির সঙ্গে সংঘর্ষ হয় বরযাত্রীর গাড়ির। ঘটনায় বাবুরাম-সহ অন্তত দশ জন গুরুতর আহত হন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বরের দিদি ও তিন বছরের ভাগ্নি-সহ তিন জনকে।

বিয়ের রাতে বর দুর্ঘটনার কবলে পড়লে তা কুনজরে দেখার অভ্যাস আজও সমাজে বিদ্যমান। পাত্রীকে ‘অপয়া’ অপবাদে দাগিয়ে দেওয়ার এই অনুশাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালেন ছেলের মা চাঁদমনি কর্মকার। তিনি বলছেন, ‘‘একটা মেয়ের জীবন নষ্ট হয়ে যাবে, সেটা আমি হতে দিতে পারি না।’’

লগ্নের রাতেই ছেলেকে হাসপাতাল থেকে ছুটি করিয়ে বিয়ে করতে পাঠালেন তিনি। মায়ের নির্দেশ মতো ডান হাতে ক্ষত নিয়েই বিহারের লাচ্ছোর গ্রামের উদ্দেশে রওনা দেন বাবুরাম। চাঁদমনির কথায়, ‘‘আজ বিয়ে না হলে মেয়েটাকে সবাই অপয়া বলে দাগিয়ে দিত। এক জন মা হয়ে এটা আমি হতে দিতে পারি না। বৌমার সামাজিক সম্মান বাঁচাতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ছেলে তো সুস্থই আছে, তাই ওকে বিয়ে করতে পাঠালাম। ’’

চাঁদমনির এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান দুই পরিবারের সদস্যরা। বাবুরামের পরিবারের আত্মীয়রা বলছেন, ‘‘দুর্ঘটনা তো ঘটতেই পারে। কিন্তু বিয়েটা না হলে পাত্রীকে সমাজে নীচু নজরে দেখা হতে পারে। সে কারণে রাতেই ওদের বিয়ে দেওয়া হবে।’’ ঘটনার সময়ে সেখানে উপস্থিত ছিলেন সমাজকর্মী কৌশিক ভট্টাচার্য। তাঁর কথায়, ‘‘পাত্রের মা ও পরিবারের এই সিদ্ধান্ত সমাজে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। নিজের মেয়ে, নাতনি অসুস্থ, অথচ আরেকটি মেয়েকে সামাজিক গঞ্জনার হাত থেকে বাঁচাতে জরুরি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পাত্রের মা। এর জন্য তাঁর সাধুবাদ প্রাপ্য।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Raigunj
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE