প্রাক্তন মন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদাকে দলে চান না তৃণমূলের নিচু তলার কর্মীরা। সদ্য বিধানসভা ভোটে তপন কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী কল্পনা কিস্কুর হারের পিছনে গোপনে বাচ্চু সক্রিয় ছিলেন বলে কর্মী-নেতাদের দাবি। অনুগামীদের নিয়ে তিনি বিজেপিতে ভোট করিয়েছেন বলে তপন ব্লক তৃণমূল সভাপতি শঙ্কর মণ্ডল অভিযোগ করেন। তপন কেন্দ্রে হারের পর দলের পর্যালোচনা রিপোর্টে বাচ্চুর ‘সাবোতাজের’ বিষয়টি রাজ্য নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে বলে বুধবার শঙ্কর জানান। ফলে বিজেপিতে নাম লেখানো বাচ্চুকে দলে নিলে নিচুতলায় সংগঠন কেবল ধাক্কাই খাবে না, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও মাথাচাড়া দেবে বলে নেতাকর্মীরা দাবি করেন।
ইটাহারের অমল আচার্য ও মালদহের সরলা মুর্মুর পাশাপাশি তপনের দলবদলু বাচ্চু হাঁসদাও তৃণমূলে ফেরার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। বুধবার এ সম্পর্কে বাচ্চু বলেন, ‘‘তৃণমূলে ফেরার বিষয়ে এখনও নেতৃত্বের কাছে আবেদন করিনি। দল থেকে সাড়া পেলে লিখিত আবেদন জানাব।’’ তবে ভোটে সাবোতাজের অভিযোগ তিনি মানেননি। বাচ্চুর দাবি, ‘‘ভোটের সময় বাড়িতেই কাটিয়েছি। পরিচিতদের তৃণমূলকে ভোট দিতে বলেছি।’’ কিন্তু মাত্র ১৬০০ ভোটে হারের পেছনে বাচ্চু ও তাঁর অনুগামীদের দায়ি করেন তৃণমূলের বিজিত প্রার্থী কল্পনা কিস্কু।
টিকিট না পেয়ে ভোটের মুখে প্রতিমন্ত্রী বাচ্চু বিজেপিতে যোগ দেন। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগের কারণে ভোটের সময় বিজেপি তাঁর সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখে। প্রচারেও নামায়নি গেরুয়া শিবির। এরপর ভোটের ফলে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে তৃণমূল ফের ক্ষমতায় ফিরতে অমল, সরলার মত বাচ্চুও দলে ফেরার ইচ্ছে প্রকাশ করতেই বিতর্ক শুরু হয়েছে।
তপন ব্লক কমিটি থেকে রাজ্য নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে তপন ব্লকের পাঁচটি এবং বালুরঘাট ব্লকের আটটি অঞ্চল নিয়ে তপন বিধানসভা কেন্দ্র। তপনের পাঁচটি অঞ্চলে ৭,৫০০ ভোট লিড হলেও বালুরঘাট ব্লকের বোল্লা, ডাঙা অঞ্চলগুলিতে তৃণমূলের পক্ষে ফল খারাপ হয়েছে। ওই অঞ্চলগুলিতে বাচ্চু হাঁসদার প্রভাব থাকায় বিজেপির দিকে ভোট করাতে তিনি সক্রিয় ছিলেন বলে ব্লক সভাপতির দাবি। বাচ্চু অবশ্য ওই অভিযোগ মানতে চাননি। তৃণমূলের এক জেলা নেতার কথায়, নিচুতলার কর্মীদের জন্য এ বারের ভোটে আশাতীত সাফল্য হয়েছে। সেখানে বাচ্চু হাঁসদা, শুভেন্দু অধিকারীদের মত হেভিওয়েটরা দল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়ে দলেরই ভাল হয়েছে। ফলে নিচুতলার কর্মীদের ইচ্ছেকেই দল প্রাধান্য দেবে।