Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
North Bengal Bandh

বন্‌ধ রুখতে উত্তরবঙ্গ জুড়ে প্রশাসনের সঙ্গেই ‘সক্রিয়’ তৃণমূল পথে, বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ, দুর্ভোগ আমজনতার

কোচবিহারে দু’জায়গায় সরকারি বাসের উপর পাথর ছুড়ে হামলা চালানোর ফলে বেশ কিছু সরকারি বাসও রাস্তায় দাঁড়িয়ে। পর্যাপ্ত পরিমাণ বাস না থাকার কারণে দুর্ভোগে পড়েছে আমজনতা।

TMC workers are also in the street with administration to prevent BJP’S strike in North Bengal.

বন্‌ধের প্রতিবাদে বাঁশ এবং লাঠি নিয়ে পথে নামেন তৃণমূল সমর্থকরা। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২৩ ১০:২৬
Share: Save:

বিজেপির ডাকা ১২ ঘণ্টার উত্তরবঙ্গ বন্‌ধকে কেন্দ্র করে হাতাহাতি। যার জেরে অশান্তি উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায়। প্রভাব দেখা গেল ১ নম্বর ব্লকের ঘুঘুমারি এলাকাতেও। বন্‌ধ সমর্থনকারী বিজেপি কর্মীদের উপর মারধরের অভিযোগ উঠল শাসক তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে। বিজেপির দাবি, বন্‌ধ কর্মসূচির সমর্থনে ঘুঘুমারি এলাকায় ‘শান্তিপূর্ণ’ ভাবে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন বিজেপি সমর্থকেরা। সেই সময়ই শাসকদলের কয়েক জন কর্মী ঘটনাস্থলে পৌঁছন। তাঁরা আচমকাই বিজেপি কর্মীদের উপর হামলা চালান বলেও অভিযোগ স্থানীয় গেরুয়া শিবির নেতাদের। যদিও তৃণমূলের পক্ষ থেকে সেই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। শাসক শিবিরের দাবি, বিজেপির তাণ্ডব সহ্য করতে না পেরে স্থানীয়েরা প্রতিবাদ করেছেন এবং তার জেরেই অশান্তি ছড়িয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনও সম্পর্ক নেই বলেও দাবি করেছে তৃণমূল। তবে এই বন্‌ধের জেরে দুর্ভোগ বৃদ্ধি পেয়েছে সাধারণ মানুষের। কোথাও যাত্রী-সহ বাস আটকে গিয়েছে, কোথাও বাসে ঢিল পড়ার জেরে থমকে গিয়েছে যাত্রিবোঝাই বাস। বন্‌ধ রুখতে এর মধ্যেই সক্রিয় হয়েছে প্রশাসন। প্রশাসনের সঙ্গেই ‘সক্রিয়’ শাসক তৃণমূলও পথে নেমেছে।

অশান্তি প্রসঙ্গে ঘুঘুমারির বিজেপি মণ্ডল সভাপতি অনন্ত দে সরকার বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গে বিজেপি বন্‌ধ ডেকেছে। গত কয়েক দিন ধরে কালিয়াগঞ্জে যা ঘটছে তারই প্রতিবাদে এই বন্‌ধ। বন্‌ধের সমর্থনে শান্তিপূর্ণ ভাবে কর্মসূচি পালন করছিলাম। হঠাৎ করে আমাদের আক্রমণ করে তৃণমূলের কর্মীরা।’’

অন্য দিকে, ঘুঘুমারির তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি দীপক কুমার দেবের কথায়, ‘‘সকাল থেকে ওরা (বিজেপি কর্মীরা) প্রচণ্ড তাণ্ডব চালাচ্ছে ঘুঘুমারির বুকে। দোকানপাটে ভাঙচুর চালাচ্ছে। মাছবাজার এবং ফলের দোকানের জিনিসপত্র নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। জনগণ সেই অত্যাচার সহ্য না করতে পেরে প্রতিরোধ করেছে।’’

বন্‌ধ কর্মসূচিকে ঘিরে বিক্ষিপ্ত অশান্তির ঘটনা ছড়িয়েছে কোচবিহার শহরেও। দিনহাটার ভেটাগুড়িতে বন্‌ধের সমর্থনে পথ অবরোধ করেন বিজেপি সমর্থকরা। অভিযোগ, অনেক দোকানপাটও জোর করে বন্ধ করে দেওয়া হয়। সব কিছু সচল রাখতে এবং বন্‌ধের বিরোধিতা করে পথে নামে তৃণমূলও। স্থানীয় সূত্রে খবর, বন্‌ধের প্রতিবাদে বাঁশ এবং লাঠি নিয়ে পথে নামেন তৃণমূল সমর্থকরা। এর পরই দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়।

বন্‌ধ রুখতে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছে প্রশাসনও। পরিস্থিতি সামলাতে সকাল থেকেই বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

প্রসঙ্গত, কালিয়াগঞ্জ কাণ্ডের প্রতিবাদে শুক্রবার ১২ ঘণ্টার উত্তরবঙ্গ বন্‌ধের ডাক দিয়েছে রাজ্য বিজেপি। শুক্রবার সকাল থেকেই উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় সেই বন্‌ধের আংশিক প্রভাব লক্ষ করা গিয়েছে। সকাল থেকেই রাস্তায় যানবাহন নামায়নি বেসরকারি পরিবহণ সংস্থাগুলি। কোচবিহারে দু’জায়গায় সরকারি বাসের উপর পাথর ছুড়ে হামলা চালানোর ফলে বেশ কিছু সরকারি বাসও রাস্তায় দাঁড়িয়ে। পর্যাপ্ত পরিমাণ বাস না থাকার কারণে দুর্ভোগে পড়েছে আমজনতা। বাসে হামলার কারণে মাঝপথে বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কার্যত পায়ে হেঁটে গন্তব্যের দিকে রওনা দিতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়ায় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস এবং ওষুধপত্র কেনার ক্ষেত্রেও অসুবিধার মুখে পড়তে হচ্ছে জনগণকে।

উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের চেয়ারম্যান পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম ৪৫০টির বেশি বাস সচল রেখেছে। ২১টি ডিপো থেকে বাস পরিষেবা স্বাভাবিক। কোচবিহারে ঢিল ছুড়ে দু’টি বাসের কাচ ভেঙেছে অবরোধকারীরা। পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়েছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Strike TMC tmc bjp clash
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy