তৃণমূল বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সির মন্তব্যে শুরু হয়েছে বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র।
বিরোধীদের কোমরে দড়ি বেঁধে রাখার নিদান দিলেন মালদহ জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তথা মালতীপুরের বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সির। মঙ্গলবার পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে মালদহের বৈষ্ণবনগরের সভা থেকে রহিমের মন্তব্য, ‘‘সিপিএম সমাজের বিষ। কংগ্রেস এই সমাজের শত্রু। বিজেপি মানুষে-মানুষে বিভাজন চায়। ওরা সমাজের শত্রু।’’ এখানেই থামেননি তৃণমূল বিধায়ক। দলের কর্মী ও সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘এদের (বিরোধী) চিহ্নিত করুন। এরা গ্রামে এলে, বিভ্রান্ত করলে কোমরে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখুন।’’
বিজেপি, সিপিএম এবং কংগ্রেসকে এক পঙ্ক্তিতে ফেলে আক্রমণ করে তৃণমূল বিধায়কের মম্তব্য, ‘‘কোমরে দড়ি দিয়ে বেঁধে রেখে ওদের জিজ্ঞাসা করতে হবে, তোমার সরকার ৩৪ বছরে কী করেছে? তোমার সরকার ৬৫ বছরে কী করেছে? তোমার সরকার ৮ বছর ধরে কেন্দ্রে থেকে যে সুযোগ দেওয়ার কথা ছিল, মানুষকে সেই সুযোগ কেন দিতে পারোনি? তোমাদের গ্রামে ঢোকার কোনও অধিকার নেই।’’ আব্দুরের সংযুক্তি, ‘‘আপনাদের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।’’
মঞ্চে বলা নিজের বক্তব্যের সমর্থনে পরে আব্দুর বলেন, ‘‘আমরা যে এলাকায় মিটিং করছি, সেই এলাকায় গঙ্গা ভাঙনে বিপন্ন হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারের একটা দায়িত্ব আছে। গঙ্গা ভাঙন রোধ করার দায়িত্ব আছে কেন্দ্রীয় সরকারের। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার কিছুই করে না। বিজেপি নেতারা কেন্দ্রকে কোনও দাবির কথা বলছেন না। এখানে এসে শুধু জাতপাতের কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন। তাই বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করলে ওঁদের দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখাই উচিত।’’
মালদহ জেলা তৃণমূল সভাপতির এই বক্তব্যের সমালোচনায় সরব বিরোধীরা। দক্ষিণ মালদহ সাংগঠনিক জেলার বিজেপির সাধারণ সম্পাদক অম্লান ভাদুড়ি বলেন, ‘‘মালদহ জেলা তৃণমূল গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত। তাই ওঁদের মাথা ঠিক নেই। ভুলভাল বকছেন। কিছু দিন ধরেই তিনি বলছেন, হাত কেটে নেবেন। পা কেটে নেবেন। গ্রামের মানুষকে দিয়ে দৌড় করাবেন। তিনি আগে নিজে দেখুন তৃণমূল কর্মীরা ওঁকে দৌড় করান কি না।’’
মালদহ জেলা সিপিএমের সম্পাদক অম্বর মিত্রের কথায়, ‘‘৩৪ বছর উনিও তো বামফ্রন্টে ছিলেন। উনি জানেন বামফ্রন্ট আমলে কী হয়েছে। নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য তৃণমূলে গিয়েছেন। বড় বড় কথা এই সমস্ত নীতিহীন লোকের মুখে মানায় না।’’ মালদহ জেলা কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি কালীসাধন রায় বলেন, ‘‘রাজ্য এবং কেন্দ্রে যারা ক্ষমতাসীন, তাদের মধ্যে কুকথার প্রতিযোগিতা চলছে। হিংসা এবং বিদ্বেষ ছড়িয়ে ভীতি এবং সন্ত্রাসের পরিবেশ সৃষ্টি করছে এরা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy