আবাস প্রকল্পে ‘কাটমানি’ দিতে অস্বীকার করায় ‘আক্রান্ত’ হলেন এক জন উপভোক্তা। তাঁর অভিযোগ, তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য দলবল নিয়ে উপভোক্তার নির্মীয়মাণ বাড়ি ভাঙচুরের পাশাপাশি তাঁকে মারধরও করেন। সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের বামনগোলার গোবিন্দপুর-মহেশপুর পঞ্চায়েতের হরিপুর গ্রামে। অভিযুক্ত পঞ্চায়েত সদস্য গণেশ রায়-সহ ১৬ জনের নামের পুলিশের অভিযোগ দায়ের করেন আক্রান্ত উপভোক্তা ষাটোর্ধ্ব সুদেব রায়। পুলিশে অভিযোগ জানানোর পরেও এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার না হওয়ায় সুর চড়িয়েছেন বিরোধী দলের নেতারা। অস্বস্তিতে তৃণমূল।
যদিও অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন মালদহের পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব। তিনি বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।” রাজ্যের শাসক দলকে বিঁধে বিজেপির উত্তর মালদহের সভাপতি উজ্জ্বল দত্ত বলেন, “তৃণমূল কাটমানির টাকাতেই চলছে। তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যের নামে অভিযোগ হওয়ায় পুলিশ নিষ্ক্রিয়। আমরা চাই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।” এর পাল্টা হিসাবে তৃণমূলের মালদহের মুখপাত্র আশিস কুন্ডু বলেন, “বামনগোলার ঘটনাটি পুলিশ দেখছে। তবে বিজেপির নেতারা সব কিছুতেই রাজনীতি জুড়ে দিয়ে এখন প্রচারে থাকার চেষ্টা করছেন।” জানা গিয়েছে, আবাসের প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা পেয়ে প্রকল্পের বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করেন সুদেব। তবে পঞ্চায়েত সদস্য গণেশ রায় দলবল নিয়ে বাড়ি তৈরির কাজ আটকে দেন বলে অভিযোগ। ১৭ ফেব্রুয়ারি ব্লক, জেলা প্রশাসনে অভিযোগ জানান সুদেব। তাঁর দাবি, পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পরিবারের দাবি, প্রশাসন ব্যবস্থা না নেওয়ায় মাটি খুঁড়ে ভিত তৈরির কাজ শুরু হয়।
সুদেব এই দিন বলেন, “গণেশ দলবল নিয়ে নির্মীয়মাণ কংক্রিটের সেই অংশ ভেঙে আমাদের মারধর করেন। গণেশ প্রকল্পের জন্য ২০ হাজার টাকা দাবি করেছিলেন। সে টাকা দেওয়া হয়নি। তাই আমাদের বাড়ি নির্মাণে বাধা দেওয়া হচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, “২০১৭ সালের সরকারের পাট্টা দেওয়া জমিতে বাড়ি তৈরি করছি।” যদিও মন্তব্য করতে চাননি অভিযুক্ত গণেশ। তিনি বলেন, “এ নিয়ে যা বলার গ্রামবাসী বলবেন।” স্থানীয়দের দাবি, সুদেবের নির্মীয়মাণ বাড়ির পাশের মাঠে পুজোর মেলা হয়। সেখানে বাড়ি তৈরি হলে মাঠটি ছোট হয়ে যাবে, তাই নির্মাণে আপত্তি রয়েছে গ্রামবাসীদের একাংশের।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)