হাসপাতালে: বিস্ফোরণে আহত। নিজস্ব চিত্র
বিয়ের অনুষ্ঠানে বড়দের পটকা ফাটাতে দেখেছিল শিশুরা। গাছতলায় কুড়িয়ে পাওয়া পটকা সেই ভাবেই ফাটাতে গিয়েই হল বিপত্তি। আর তাতেই জখম হল ৮ থেকে ১০ বছরের তিন শিশু। মঙ্গলবার দুপুরে ইসলামপুর থানার বিন্নাবাড়ি চাপাসার এলাকাতে ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, আহতেরা হল তানবির আলম, জুবের আলম ও মহম্মদ মুজাহিদ। তাঁদের কারও হাত নষ্ট হয়েছে, কারও মুখ পুড়েছে বোমের বারুদে। মুজাহিদ স্থানীয় একটি স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে, জুবের ও তানবির চতুর্থশ্রেণির ছাত্র। উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ বলেন, ‘‘বিয়ে বাড়ির পটকা ছিল। সেটি ফেটেই ওই ঘটনা ঘটেছে।’’
সূত্রের খবর, এ দিন বাড়ির পাশে একটি খেতে খেলা করছিল চার জন শিশু। তাদের বাড়ির লোকেরা মাঠের কাজেই ব্যস্ত ছিলেন। বছর দশের জুবের তার বাড়ি থেকে সামান্য দূরেই কলাগাছ তলায় একটি পটকা দেখতে পায়। সেটিকে তুলে নিয়ে আসে তারা। আকারে বড় দেখে ভেবেছিল, উপরে উঠে অনেক আলো ছড়িয়ে পড়বে। এরপরই একজন দৌড়ে বাড়ির রান্নাঘর থেকে দেশলাইও নিয়ে আসে। মাঠের মধ্যেই গোল হয়ে দাঁড়িয়ে সেখানে আগুন লাগানোর চেষ্টা করে।
অসময়ে পটকার আওয়াজ শুনে ছুটে যান বড়রা। ততক্ষণে রক্তাক্ত হয়ে পড়েছেন তিন শিশু। কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে থাকা এক শিশু ভয়ে পালিয়ে যান। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁদের ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালের শিশু বিভাগে ভর্তি রয়েছে জুবের ও তানবীর। ইসলামপুর হাসপাতালের শল্য চিকিত্সক জানান, তিন জনের আঘাত রয়েছে। তার মধ্যে এক জনের বা হাতের অংশ বেশ ক্ষতিগ্রস্ত বলেই তাকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে রেফার করা হয়েছে।
পটকাগুলো কী ছিল? উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বোম হওয়ার সম্ভবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না চিকিত্সকেরা। তবে তাদের শরীরের বারুদে পুড়ে যাওয়া ছাড়া কোনও স্প্লিন্টার মেলেনি।
জুবের, মুজাহিদরা বলে, ‘‘পটকা ভেবেই আগুন লাগিয়েছিলাম। এত বিকট আওয়াজ করে ফেটে এই ঘটনা ঘটবে বুঝতে পারিনি।’’
ঘটনার খবর পেয়েই ইসলামপুর থানার পুলিশ হাসপাতালে ও ঘটনাস্থলে যায়। আহতদের সঙ্গেও কথা বলার চেষ্টা করে। তবে পটকা না বোমা তা নিয়েও ধন্দে রয়েছেন সকলে। আহত মুজাহিদের মা বলেন, ‘‘প্রতিদিনের মতোই এ দিনও বাচ্চাগুলো এক সঙ্গে খেলছিল। আওয়াজ পেছে ছুটে যাই। দেখি রক্তাক্ত অবস্থায় ছুটে আসছে জুবের। তার হাত মুখ ফেটে রক্ত বের হচ্ছে। তাঁর পর মুজাহিদকেও রক্তাক্ত অবস্থায় দেখি।’’
এলাকার বাসিন্দারা বোমা বলে সন্দেহ করলেও প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ পটকা বলেই সন্দেহ করে তদন্তের কাজ শুরু করেছে। ইসলামপুরের বিধায়ক কানাইয়াল অগ্রবাল অবশ্য বলেন, ‘‘চকোলেট বোমা ফাটাতে গিয়েই ওই ঘটনা ঘটেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy