গ্রেফতার: জলপাইগুড়ির ঠুঁটাপাকড়ি থেকে আটক তিন দুষ্কৃতী। নিজস্ব চিত্র
এ যেন উলটো পুরাণ। বাল্মীকি থেকে রত্নাকর হওয়ার গল্প। বিধবা মা অনেক আশা নিয়ে হোটেল ম্যানেজমেন্ট পড়িয়েছিলেন ছেলেকে। কিন্তু সে যে ডাকাতির অভিযোগে শ্রীঘরে থাকবে এমন বোধ হয় স্বপ্নেও ভাবেননি তিনি। বুধবার রাতে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার পুলিশের কাছে সূত্র মারফত খবর আসে, জলপাইগুড়ির ঠুঁটাপাকড়ি এলাকায় কিছু দুষ্কৃতী জড়ো হয়েছে। অভিযান চালায় সাদা পোশাকের পুলিশ। চারজন পালিয়ে গেলেও গ্রেফতার হয় তিনজন। তাদের কাছ থেকে থেকে উদ্ধার হয় ভোজালি, দাঁ জাতীয় বেশ কিছু অস্ত্র। আর উদ্ধার হয় তিনটি বাইক। কোতোয়ালি থানার আইসি বিশ্বাশ্রয় সরকার জানিয়েছেন, তার মধ্যে দু’টি চোরাই বাইক। একটি শহরের কদমতলা থেকে মঙ্গলবার চুরি হয়েছিল।
ধৃত শুভজিৎ রায়, সমীর দত্ত,এবং অজিত রায়ের বয়েস ২২ থেকে ২৪-এর মধ্যে। জলপাইগুড়ি শহরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা এরা। পুলিশের রেকর্ড বলছে, শুভজিৎ দাগী অপরাধী। বাইক চুরি, ডাকাতির অভিযোগে এর আগেও জেল খেটেছে। বাকি দু’জনের অপরাধ জগতে নতুন হাতেখড়ি বলে ধারণা পুলিশের।
সমীর দীনবাজারে ফলের ব্যবসা করে। আর অজিত কলকাতার একটি ইন্সটিটিউট থেকে হোটেল ম্যানেজমেন্ট পাশ করে এসেছে। ভিন রাজ্যে চাকরি পেয়েও যায়নি। বিয়ের ফটোগ্রাফি করত। আর অর্থ উপার্জনের সহজ পথ হিসেবে বেছে নিয়েছিল অপরাধ জগতকে। বুধবার তার হাতেখড়ি ছিল। কিন্তু তার আগেই পুলিশের কব্জায়।
প্রথমে শুনে বিশ্বাস না করতে পারলেও ছেলের খোঁজে এসে তাকে পুলিশ লক-আপে দেখতে পেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন অজিতের বিধবা মা। খারাপ লাগলেও কিছু করার ছিল না পুলিশ কর্মীদের। আইন মোতাবেক অজিত-সহ তিনজনকে জলপাইগুড়ি মুখ্য বিচার বিভাগীয় আদালতে হাজির করানো হয়। তাদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
কোতোয়ালি’র আইসি বিশ্বাশ্রয় সরকার আক্ষেপ করে বলেছেন, ‘‘সহজ পথে অঢেল অর্থ উপার্জনের লোভে শিক্ষিত যুব সমাজ যেভাবে বিপথে যাচ্ছে তাতে আগামিদিনের চিত্রটা ভয়বাহ হতে পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy