কালিম্পঙে তামাঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
মহালয়ার আর খুব দেরি নেই। পাহাড়ের ইতিউতি পর্যটকদের আনাগোনা শুরু হয়ে গিয়েছে। মহালয়ার দিন থেকে প্রায় কালীপুজো পর্যন্ত পাহাড়ে থাকার জায়গা মেলাই ভার। ভাল ব্যবসার আশায় চনমনে দার্জিলিঙের ট্যুর অপারেটররা। কিন্তু, আচমকা বিমল গুরুঙ্গ বনধের হুমকি দেওয়ায় মাথায় হাত পড়েছে তাঁদের অনেকেরই।
দুপুরে গুরুঙ্গের হুমকির পরেই দার্জিলিঙের হোটেল, রিসর্ট ও হোম স্টে মালিকদের কাছে ঘনঘন ফোন পৌঁছচ্ছে। কলকাতা, দিল্লি, মুম্বই এমনকী বিদেশ থেকেও ট্যুর অপারেটররার ফোন করে বন্ধ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। কেউ কেউ বুকিং বাতিল করার কথাও বলে দিয়েছেন। উত্তরের পাহাড়-সমতলের ট্যুর অপারেটরদের এক মুখপাত্র জানান, তাঁরা বন্ধের রাস্তা থেকে সরানোর জন্য মোর্চা নেতাদের মাধ্যমে জিটিএ চিফের কাছে আর্জি জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে ট্যুর অপারেটরর তরফে থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখে পর্যটকেরা যাতে বিপাকে না পড়েন তা নিশ্চিত করার জন্য অনুরোধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ট্যুর অপারেটরদের একাংশের দাবি, বারো ঘণ্টা দিয়ে শুরু হলেও, পরে যে লাগাতার বন্ধ হবে না এমন অনিশ্চয়তা কোথায়? ভিন্নমতও অবশ্য রয়েছে। পর্যটন ব্যবসায়ীদের অন্য অংশের দাবি, শুধুমাত্র রাজনৈতিক চাপ-পাল্টা চাপের সমীকরণেই বনধ ডাকা হয়েছে তা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার। তাই বনধ হওয়া নিয়েও অনিশ্চয়তা রয়েছে বলে দাবি। তবে পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ‘‘পাহাড়ে পর্যটকদের সমস্যা হবে না। কারণ, পাহাড়ে জনজীবন স্তব্ধ করতে দেবেন না সাধারণ মানুষই। পুলিশ-প্রশাসন সবরকম সহযোগিতা করবে।’’
বছরখানেক আগে কালিম্পঙে হোম স্টে চালু করেছেন এক বাসিন্দা। এ দিন বন্ধের হুমকি শুনেই তিনি বুকিং নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। মহালয়ার দিন থেকে শুরু করে গোটা অক্টোবর মাসই তার হোম স্টে-তে বুকিং রয়েছে বলে দাবি করলেন। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘কলকাতার পর্যটকেরাই বেশি। তবে দিল্লি ও মধ্যপ্রদেশের পর্যটকদেরও বড় দল আসার কথা রয়েছে। বন্ধের খবর শুনে পরপর বুকিং বাতিল হতে থাকলে যে ক্ষতি হবে তার মোকাবিলা করা সম্ভব নয়।’’ বুকিং বাতিলের কথা কলকাতা থেকে আসা একটি ফোনে জানতে পেরেছেন দার্জিলিঙের একটি রিসর্টের ম্যানেজার। তিনি বলেন, ‘‘বুধবার থেকে তিনদিনের একটি বুকিং ছিল। ১৫ জন পর্যটকের আসার কথা ছিল। সব বাতিল হয়ে গেল।’’
কালিম্পঙে আট মাইল এলাকায় একাধিক হোম স্টে রয়েছে। সেখানেও মহালয়ের প্রাক্কালে টানা সাত দিনের জন্য আসার কথা নাগপুরের একটি দলের। এ দিন বন্ধের খবর পেয়ে তাঁরা বিকল্প জায়গার খোঁজ শুরু করেছেন। কালিম্পঙের ট্যুর অপারেটরদের এক কর্তা জানান, এ ভাবে পুজোর মুখে বন্ধ ডাকাটা পাহাড়বাসী মেনে নিতে পারবেন না। তাঁরা জনজীবন স্বাভাবিক রাখার জন্য পুলিশ-প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করবেন বলে ওই অপারেটর জানিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy