পুরকর্মীদের সামনে বিক্ষোভ। মঙ্গলবার সকালে চম্পাসারি মোড় সংলগ্ন নিবেদিতা রোডে। ছবি: বিনোদ দাস।
নিয়ম মেনে নোটিস দেওয়া হয়েছিল ব্যবসায়ীদের। কিন্তু শিলিগুড়ি শহরের ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডে রাস্তা ও হাইড্রেন দখল করে বসা বাজার সরাতে গিয়ে মঙ্গলবার বাধার মুখে পড়তে হল পুরসভাকে। পুরকর্মীদের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠল খোদ পুরসভার মেয়র পারিষদ (আবাসন, ক্রীড়া, ট্রেড লাইসেন্স) ও ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল পুরপ্রতিনিধি দিলীপ বর্মণের বিরুদ্ধে। এলাকায় দাঁড়িয়ে থেকে পুরকর্মীদের ফেরত পাঠান তিনি। এমনকি, তাঁর নেতৃত্বে এলাকায় তৃণমূলের পতাকা নিয়ে মিছিলও করেন ব্যবসায়ীরা। তবে এ দিন পুরসভায় বসে মেয়র গৌতম দেব এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় জানান, রাজ্য সরকারের ঘোষিত নীতি মেনেই সর্বত্র কাজ হবে।
এ দিন বাজারে দাঁড়িয়ে মেয়র পারিষদ (এমআইসি) দিলীপ হুঁশিয়ারি দেন, “আমি কোনও উচ্ছেদ করতে দেব না। সরকারের হাতে অনেক জমি রয়েছে। আগে ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন দিতে হবে। এ জন্য আমাকে কাউন্সিলর পদ থেকে সরিয়ে দিলেও মানুষের পাশে থাকব।” এ ঘটনায় তৃণমূলের অন্দরে নানা প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষ করে, সরকারি কাজে খোদ তৃণমূলের নেতা বাধা তৈরি করলে, মানুষের কাছে কী বার্তা যাবে তা নিয়ে দলের অন্দরে ‘অস্বস্তি’ তৈরি হয়েছে। দলের নেতারা জানাচ্ছেন, দিলীপ ভোটে নিজে জিতেছেন। কিন্তু বিধানসভা, লোকসভায় দলকে জেতাতে পারেননি। এ হেন দিলীপ এর আগেও ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডে এক তৃণমূল নেতার বেআইনি বাড়ি ভাঙার সময় সেখানেও হাজির হয়েছিলেন। সে সময়ও পুরসভার কাজ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন তিনি। পাশাপাশি, আগে এক বার পাইকারি বাজারে গোষ্ঠী কোন্দলেও জড়ান।
এ দিন দুপুরে পুরসভার বোর্ড-সভায় সিপিএম প্রসঙ্গটি তোলে। তারা জানায়, পুরসভার উচ্ছেদ অভিযানে তৃণমূলের মেয়র পারিষদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শুনে মেয়র বলেন, ‘‘আমরা আলোচনা করছি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সারা রাজ্যে যে নিয়মে হবে সেই পথে এখানেও হবে।’’ পুরসভায় চাউর হয়, রাজ্য নেতৃত্ব ছাড়া তিনি কাউকে চেনেন না বলে মেয়র পারিষদ দাবি করেছেন। মেয়র বলেন, ‘‘এ সবের উত্তর দিতে পারব না। রাজ্যের ঘোষিত নীতি মেনেই কাজ করব। প্রয়োজনে, আরও আলোচনা হবে। কিছু হকার্স কর্নার হবে পুনর্বাসন দিতে।’’ তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সমতলের সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষ দিলীপ সম্পর্কে বলেন, “ওঁকে নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। উনি সব সময় রাজ্যে নেতৃত্ব দেখান।’’
প্রধাননগরের নিবেদিতা রোড সম্প্রসারণের জন্য এর আগেও পুরসভার তরফে রাস্তা দখলমুক্ত করতে বেশ কয়েক বার অভিযান চালানো হয়েছে। এ দিন চম্পাসারি মোড়ের কাছে রাস্তার উপরে আনাজ, ফলের দোকানগুলি সরানোর কথা ছিল পুরকর্মীদের। সেখানে পুরসভার ‘আর্থমুভার’ যন্ত্র নিয়ে কর্মীরা পৌঁছতেই হাজির হন মেয়র পারিষদ। এর পরে তিনি উচ্ছেদ করতে দেবেন না বলে ‘হুঁশিয়ারি’ দেন। ব্যবসায়ীদের নিয়ে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ শুরু করেন। যার জেরে, পুরকর্মীদের চম্পাসারি মোড়ের আনাজ বাজার ছেড়ে নিবেদিতা রোডের দু’পাশে দোকান ভাঙতে হয়েছে। পরে দিলীপ বলেন, “বাজার ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডে হলেও, ব্যবসায়ীরা আমার ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তাঁদের দেখার দায়িত্ব আমাদের।’’ অন্য দিকে, নিবেদিতা রোডের ব্য়বসায়ীরা জানান, রাস্তা দখল করে থাকলে সকলের দোকান ভাঙা উচিত ছিল পুরসভার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy