দেড় বছর পার। মুর্শিদাবাদ জেলা ভাগ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মুখের কথা মুখেই রয়ে গিয়েছে। ফের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলায় আসছেন বুধবার ৩১ জানুয়ারি। ফের লোকসভা ভোটের মুখে চর্চায় এসেছে জেলা ভাগের প্রসঙ্গ।
বিরোধীদের অভিযোগ, ২০২৬ সালে ভোট রয়েছে বিধানসভার। তখন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই আগ বাড়িয়ে ফের আশ্বাস দেবেন জেলা ভাগের। তার আগে নয়। আর শাসক দলের জেলার নেতাদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক হলেই তাঁরা দাবি তোলেন জেলা ভাগের। এমনকি ১৯ জানুয়ারি কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকেও এ দাবি তুলেছিলেন তাঁরা। সমস্যার কথা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ধৈর্য ধরার আশ্বাস দিয়েছেন।
শাসক ও বিরোধীদের এ হেন টানাপড়েনে আটকে মুর্শিদাবাদবাসির জেলা বিভাজনের দাবি। তিন কোটি মানুষের অসমে ৩৫টি জেলা, ১০ কোটির বাসিন্দার বিহারে ৩৮টি জেলা, ২.৫৫ কোটির ছত্তীসগঢ়, ৩.৫২ কোটির তেলেঙ্গনা, ৬ কোটির গুজরাট বা ৬.৮০ কোটির রাজস্থানে রয়েছে ৩৩টি করে জেলা।
সেখানে ২০১১ সালের জনগণনা মতো পশ্চিমবঙ্গের ২৩টি জেলায় প্রতিটিতে গড়ে প্রায় ৪০ লক্ষ লোক বাস করেন। দেশের বিভিন্ন রাজ্যের তুলনায় এই গড় অনেকটাই বেশি। অন্ধ্রপ্রদেশে ১৩টি জেলা ছিল। প্রতি জেলায় গড়ে লোকসংখ্যা ছিল ২০ লক্ষ। বর্তমানে ২৬টি জেলা গঠন হয়েছে সেখানে, যার প্রতিটির লোক বসতি ১০ লক্ষ করে। পশ্চিমবঙ্গের তুলনায় এক চতুর্থাংশ। এখন দেশের মধ্যে সব চেয়ে বড় জেলা উত্তর ২৪ পরগনা, বাসিন্দা ১ কোটি। প্রায় একই অবস্থা মুর্শিদাবাদের। ৫৩২৪ বর্গ কিলোমিটারের জেলায় লোকসংখ্যা প্রায় ৮০ লক্ষ ছাড়িয়েছে।
২০০১ সালে জনগণনা মতো দেশে মোট জেলা ছিল ৫৯৩টি। ২০১১ সালের জনগণনায় তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৪০-এ। এই মুহূর্তে দেশে জেলার সংখ্যা ৭৯৭টি। জেলার সংখ্যা কত করা হবে তার কোনও নির্দিষ্ট নিয়ম নেই। সবটাই নির্ভর করে রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের উপরে। তবে ছোট জেলা হলে উন্নয়ন ও প্রশাসনের গতি বাড়ে।
সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য সোমনাথ সিংহরায় বলেন, “ভোট এলেই এক বার করে মুখ্যমন্ত্রী জেলা ভাগের জিগির তোলেন। ২০২২ সালে যখন একের পর এক দলের চুরি ধরা পড়ছে তখন হঠাৎ ৭টি জেলাকে মুখেমুখে ভাগ করে দিলেন তিনি। আবার ২০২৬ সালে জেলা ভাগের জিগির তুলবেন তিনি, বিধানসভা ভোটের মুখে।”
কংগ্রেসের জঙ্গিপুরের সভাপতি হাসানুজ্জামান বাপ্পা বলেন, “জেলা ভাগ না হওয়ার হয়রানি ভুগতে হচ্ছে জঙ্গিপুরকে।” বিজেপির উত্তর মুর্শিদাবাদের সভাপতি ধনঞ্জয় ঘোষ বলেন, “দলের নেতাদের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ থেকে দৃষ্টি ঘোরাতেই জেলা ভাগের মুখরোচক ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী ২০২২ সালের ১ অগস্ট। তার পরে জেলা ভাগের কথা উঠলেই এখন বলছেন লোক নেই, পয়সা নেই। নেই তো ঘোষণা করেছিলেন কেন ?”
জঙ্গিপুরের তৃণমূল সাংসদ তথা তৃণমূলের সাংগঠনিক নেতা খলিলুর রহমান বলেন, “আমার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর যা কথা হয়েছে, তাতে মুর্শিদাবাদ ভাগ হবেই। তবে পরিকাঠামো গড়তে একটু সময় লাগছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy