Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

দুই দেহ ঘিরে প্রশ্ন

সকালে মৈনাক অতিথি নিবাসে নিখোঁজ পর্যটক গোপাল নারওয়ানি, গৌরব শর্মার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন গৌতমবাবু।

অভিযানে: সেবকে তিস্তায় উদ্ধারকাজ চলছে। মঙ্গলবার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

অভিযানে: সেবকে তিস্তায় উদ্ধারকাজ চলছে। মঙ্গলবার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

নিজস্ব সংবাদদাতা 
সেবক শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৯ ০৪:৪০
Share: Save:

বর্ষার খরস্রোতা তিস্তায় পড়ে গিয়েছিল পর্যটকদের গাড়ি। ১০ জুলাই সেই দুর্ঘটনার গাড়ি সমেত পর্যটকদের কোনও খোঁজই মিলছিল না। গাড়িতে চালক সহ মোট চার জন ছিলেন বলে দাবি। শনিবার আমন গর্গ নামের এক রাজস্থানি পর্যটকের দেহ গজলডোবা ব্যারাজ লাগোয়া তিস্তা মহানন্দা লিঙ্ক ক্যানাল বা ডান হাতি ক্যানাল থেকে উদ্ধার হয়। এখনও খোঁজ নেই গৌরব শর্মা, গোপাল নারায়ণী নামের দুই পর্যটক ও চালকের। ওই পর্যটকদের পরিবারের লোকজন শিলিগুড়িতে এসে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাঁদের দাবি, উদ্ধার কাজে ঢিলেমির জন্যই কারও খোঁজ মিলছে না। সেই ক্ষোভ যুক্তিসঙ্গত বলে মনে করেন পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেবও। তিনি তাঁদের বলেন, ‘‘আমি খুবই লজ্জিত যে, এই ঘটনা ঠিক সময়ে জানতে পারিনি।’’ আগে জানলে সেনা নামানোর প্রক্রিয়াও আগে শুরু করা যেত। অসম থেকে বিশেষজ্ঞ নৌবাহিনীর দলকে নিয়ে এসে উদ্ধার কাজে নামানো হয়েছে।

এরই মধ্যে এ দিন টানা বৃষ্টির পরে রোদ উঠতেই তিস্তায় ভেসে এল জোড়া মৃতদেহ। সেই দেহগুলি নিখোঁজ পর্যটক ও চালকের কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মঙ্গলবার গজলডোবা তিস্তা ব্যারাজ সেতুর নীচে লকগেট লাগোয়া এলাকাতে একটি পচাগলা দেহ স্থানীয় মাঝিরা দেখতে পান। পুলিশ গিয়ে তিস্তার চরের কাদা মাটিতে আরও একটি দেহ দেখতে পায়। এই দু’জনের দেহ সেবকে দুর্ঘটনায় পড়া পর্যটকদের কি না, তা নিয়ে খোঁজ শুরু হয়। তবে রাত পর্যন্ত সে ব্যাপারে কোনও পরিষ্কার তথ্য মেলেনি। বিশেষজ্ঞদের দাবি, চালক যদি সিট বেল্ট পরে থাকেন, তা হলে গাড়ির সঙ্গেই তিনি আটকে থাকতে পারেন। গাড়ির কোনও খোঁজ মেলেনি।

সকালে মৈনাক অতিথি নিবাসে নিখোঁজ পর্যটক গোপাল নারওয়ানি, গৌরব শর্মার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন গৌতমবাবু। তাঁরা মন্ত্রীকে বলেন, সেনা নামানোর প্রক্রিয়া এতটা দেরিতে কেন শুরু হল? মন্ত্রী তাঁদের বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে আতিথেয়তাই মুখ্য। এ রকম ঘটনা এখানে ঘটে না। কিন্তু আমি খুবই লজ্জিত যে, আমি এই ঘটনা ঠিক সময়ে জানতে পারিনি।’’ ওই পরিবারগুলোর সঙ্গে সব রকম সহযোগিতা করা হবে বলে গৌতমবাবু জানিয়েছেন। পরে তিনি সেবকে গেলে তাঁকে ঘিরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন আইএনটিইউসি-র ট্যাক্সি চালকদের wwwwসংগঠনের সদস্যরাও। তাঁদেরও দাবি ছিল, এত দেরিতে কেন সরকার নড়েচড়ে বসল!

এই দুর্ঘটনার দিন সেবকে বাংলাদেশি পর্যটকদের একটি গাড়িও তিস্তার খাদে পড়ে যায়। তাঁদের উদ্ধার করা হয়েছে। মন্ত্রীর দাবি, ‘‘ওই গাড়িটি পড়ে যাওয়া সম্পর্কেই আমাকে রিপোর্ট দেওয়া হয়েছিল। সেবকের দুর্ঘটনা সম্পর্কে ঠিক ভাবে জানানো হয়নি।’’ এ দিন তিনি দফতরের আধিকারিকদের উপরও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তবে মন্ত্রী আশ্বাসে খানিকটা আশ্বস্ত হন নিখোঁজদের পরিবারের সদস্যরা। নিখোঁজ গৌরবের ভাই আকাশ শর্মা বলেন, ‘‘আমরা এ বার শান্তিতে ভাইয়ের খোঁজ পেতে চাই। তা যত তাড়াতাড়ি হয়, ভাল হয়।’’

এ দিন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দলের কমান্ড্যান্ট রাজেশ নেগির সঙ্গেও কথা বলেন মন্ত্রী। সকালেই সেনা জওয়ানেরা এসে ঘটনাস্থলে ঘুরে গিয়েছে। বিকেলের পর ওই এলাকায় আসেন নৌ সেনার দুই প্রশিক্ষক ডুবুরি।

অন্য বিষয়গুলি:

Goutam Deb TMC Teesta Accident
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE