বৃষ্টির জলের অভাবে কোথাও শুকিয়ে মরছে আবার কোথাও রোগ পোকার আক্রমণে সবুজ হারিয়ে লাল হয়ে যাচ্ছে চা গাছ। ছবি দীপঙ্কর ঘটক।Tea
একে গরমে উৎপাদন কম, সেই সঙ্গে গাছে লেগেছে রোগ-পোকাও। চা গাছের সবুজ যেন রং বদলাতে শুরু করেছে। সবুজ গালিচার কোথাও লাল, কোথাও ধূসর ছোপ। সেগুলি সবই রোগ-পোকা। সাধারণত, চা গাছের পোকা মারতে যে কীটনাশক ব্যবহার করা হয়, তার বেশ কয়েকটি বাজারে মিলছে না, কোনওটি আবার ভয়ে ব্যবহার করছেন না বাগান পরিচালকেরা। কারণ, রাসায়নিক কীটনাশকের ব্যবহার নিয়ে চা পর্ষদ কড়া নির্দেশ দিয়েছে। সম্প্রতি সেই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, চা পাতায় ক্ষতিকর বা নিষিদ্ধ কীটনাশকের উপস্থিতি মিললে, প্রস্তুত চা পাতার পুরোটাই নষ্ট করে দেওয়া হবে এবং প্রস্তুতকারীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ হবে। এর পরেই কীটনাশক ব্যবহারের প্রবণতা কমেছে বলে দাবি।
ডুয়ার্সের একটি চা বাগানের ম্যানেজারের কথায়, “তৈরি চা পাতার নমুনা পরীক্ষা হবে, কোন কীটনাশকে, কোন ক্ষতিকর রাসায়নিক রয়েছে তা আগে থেকে জানা অনেক সময়েই সম্ভব হয় না। আপাতত, কীটনাশক ব্যবহার অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। তাই রোগ-পোকার আক্রমণও ঠেকানো যাচ্ছে না।” এমনিতেই বৃষ্টি না হওয়ায় পাতার উৎপাদন কমেছে বলে দাবি। তার উপরে পোকার আক্রমণে বেসামাল চা বাগিচা। প্রথম ‘ফ্লাশ’-এর চা পাতা পোকায় কাটছে, এমনই শোনা যাচ্ছে চা মহল্লায়। পোকার আক্রমণ ঠেকাতে না পারলে দ্বিতীয় ‘ফ্লাশ’-এর পাতা নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হবে বলে আশঙ্কা।
চা পর্ষদের তরফে অবশ্য বিধিনিষেধে শিথিলতার কোনও অবকাশ নেই বলে দাবি করা হয়েছে। চা পর্ষদের এক কর্তার কথায়, “কীটনাশক ব্যবহারে কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই। ক্ষতিকারক এবং নিষিদ্ধ রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। বিকল্প কীটনাশকও বাজারে প্রচুর রয়েছে। সেগুলি ব্যবহার করা উচিত। কারণ, চা পানকারী সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যরক্ষাই আমাদের অগ্রাধিকার।”
চা শিল্পের দাবি, কড়াকড়ির আগে আরও কিছু সুযোগ দেওয়া উচিত ছিল। তা হলে, বিকল্প জৈব কীটনাশক বাজারে আসত। চা বাগান পরিচালকদের সংগঠন ‘ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশন’-এর ডুয়ার্স শাখার চেয়ারম্যান জীবনচন্দ্র পাণ্ডে বলেন, “অনেক বাগান কীটনাশক ব্যবহার করতেই ভয় পাচ্ছে। ফলে, রোগ-পোকা মারা সম্ভব হচ্ছে না। এটা খুবই গুরুতর বিষয়। চা পর্ষদকে আরও আলোচনা করে সমাধান বার করতে হবে।” চা পর্ষদের দাবি, অসমের বাজারে ইতিমধ্যেই রাসায়নিকবিহীন বা ক্ষতিকর নয়, এমন কীটনাশক পাওয়া যাচ্ছে। এ রাজ্যের বাজারেও সেই কীটনাশক মিলতে পারে বলে চা পর্ষদের দাবি। এক চা বাগানের ম্যানেজারের কথায়, “কোন কীটনাশকে, কতটা রাসায়নিক রয়েছে সে সব নিয়ে চা পর্ষদকেই সক্রিয় হতে হত, তা হলে এই দুর্ভোগ দেখা দিত না।” প্রথম ‘ফ্লাশ’-এর পরে দ্বিতীয় ‘ফ্লাশ’-এর উৎপাদনও কমার মুখে বলে চা পর্ষদের রিপোর্টেই ইঙ্গিত মিলেছে বলে দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy