ছবি: সংগৃহীত
দশ টাকা হাতে পেলে এত দিন তিন টাকা দিতে হত কর বাবদ। আগামী আর্থিক বছরে রাজ্য সরকার কৃষিক্ষেত্র সেই ৩ টাকা নেবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রাজ্য বাজেটে আগামী আর্থিক বছরে কৃষি আয়কর মকুবের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। এতে হাসি ফুটেছে চা শিল্পে। মন্দার ‘বাজারে’ উত্তরবঙ্গের ছোট চা বাগানগুলিকে রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্ত খানিকটা স্বস্তি দিচ্ছে বলে দাবি।
চা শিল্পকেও কৃষিক্ষেত্রে ধরা হয়। তাই চা বাগানের মুনাফার উপরেও এত দিন কৃষি আয়কর দিতে হত। ছোট-বড় সব চা বাগানই এই করের আওতায় আসে। বড় চা বাগানের খরচ বেশি হওয়ায় কাগজেকলমে মুনাফা কম হয়। তাই বড় চা বাগানের উপরে কৃষি আয়করের প্রভাব তেমন পড়ে না বলে দাবি চা শিল্পের একাংশের। তাদের বক্তব্য, বরং ছোট চা বাগানকে বেশি কর দিতে হয়। ছোট চা চাষিদের যুক্তি, যেহেতু ছোট চা বাগানে বিভিন্ন খাতে খরচের অবকাশ নেই, তাই মুনাফার অঙ্ক বেশি, এবং তা কৃষি আয়করের আওতায় চলে আসে। এই কর থেকে আগামী বছরও ছাড় পাচ্ছে চা বাগান।
ছোট চা চাষিদের সর্বভারতীয় সংগঠনের সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “ধরা যাক কোনও বাগান কর্তৃপক্ষ কষ্টেসৃষ্টে বছরে ১ লক্ষ টাকা হাতে রাখতে পারল। তা হলে তার থেকে ত্রিশ হাজার টাকাই কৃষি আয়কর দিতে হয়। এই চাপ অত্যন্ত বেশি। আমরা দাবি জানিয়েছিলাম, ছোট চা বাগানে কৃষি আয়কর থেকে পুরোপুরি বাদ দেওয়া হোক। কিন্তু যা-ই হোক, এক বছরের ছাড় তো মিলেছে।’’
অর্থনীতির ঝিমুনি চায়ের বাজারেও প্রভাব ফেলেছে বলে এই মহলের দাবি। চা শিল্পমহলের কথায়, কিছু ক্ষেত্রে চায়ের বাজার সঙ্কুচিতও হয়েছে। কারণ, সামগ্রিক ভাবে চাহিদা কমেছে। দেশের আভ্যন্তরীণ বাজারের কিছুটা ডুয়ার্সকে সরিয়ে দখল করেছে অসম ও নেপাল। রফতানিতেও ঘাটতি হয়েছে। পাকিস্তানেও সে ভাবে চা রফতানি হয়নি। চা পর্ষদের হিসেবে এর পরিমাণ প্রায় ৬০ লক্ষ কেজি। যার জেরে দেশের বাজারে চায়ের দামও ধাক্কা খেয়েছে।
ছোট চা বাগানের পাতার দাম বছরভর গড়ে কেজি প্রতি ১৩ টাকার বেশি ওঠেনি। বিজয়গোপালের কথায়, “চা উৎপাদন করতেই তো কেজিতে প্রায় ১৩ টাকা লেগে যায়। তার পরে যেটুকু মুনাফা হত, তা-ও কৃষি আয়করে চলে যেত। তার হাত থেকে অন্তত স্বস্তি। না হলে অনেক বাগানে সামনের মরসুমে উৎপাদন হত কিনা সন্দেহ।’’
রাজ্যে মোট চায়ের উৎপাদনের প্রায় ৫৪ শতাংশ ছোট চা বাগান থেকেই আসে। মন্দা বাজারে দাম কম মেলায় আগামী মরসুমে ছোট বাগানের চায়ের উৎপাদনেও প্রভাবের আশঙ্কা ছিল, কৃষি আয়কর সরে গিয়ে সেই আশঙ্কা কাটল বলেই মনে করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy