Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
School in Malda

মিড ডে মিলের তদারকি করবেন না পড়াবেন? এক শিক্ষকে চলছে মালদহের স্কুল! পড়ুয়ারাই নিচ্ছে ক্লাস

পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয় স্কুলটিতে। ২০০৩ সালে সরকারি অনুমোদন পাওয়ার পর দু’জন শিক্ষকের বেতন চালু হয়েছিল। তার পর ধাপে ধাপে ছ’জন শিক্ষককে নিয়োগ করা হয়েছিল।

Malda\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\'s school

স্কুলে পড়ুয়ারাই নিচ্ছে ক্লাস। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
হরিশ্চন্দ্রপুর শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪ ১২:৫৭
Share: Save:

পড়ুয়াসংখ্যা ৮১। শিক্ষক মাত্র এক। এই অবস্থায় অষ্টম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীরা নিচু শ্রেণির ক্লাস নিচ্ছে। গত দু’বছর ধরে এ ভাবেই চলছে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লকের মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গাংনদিয়া বাংরুয়া মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র। স্থানীয়দের আশঙ্কা, এ ভাবে চলতে থাকলে অচিরেই বন্ধ হয়ে যাবে শিক্ষাকেন্দ্রটি।

২০০১ সাল থেকে ছয় শিক্ষককে নিয়ে গাংনদিয়া বাংরুয়া মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রের পথ চলা শুরু। পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয় স্কুলটিতে। ২০০৩ সালে সরকারি অনুমোদন পাওয়ার পর দু’জন শিক্ষকের বেতন চালু হয়েছিল। তার পর ধাপে ধাপে ছ’জন শিক্ষককে নিয়োগ করা হয়েছিল। এর মধ্যে এক শিক্ষক মারা গিয়েছেন। বাকি চার জন শিক্ষক পর পর অবসর নিয়েছেন। ২০২২ সাল থেকে আর কোনও শিক্ষক নিয়োগ হয়নি এই প্রতিষ্ঠানে। ২০২২ সাল থেকে সেখানে মাত্র এক জন শিক্ষক রয়েছেন। তিনিই প্রধানশিক্ষক, তিনিই ক্লাস নেন, তিনিই স্কুল পরিচালনা করেন, তিনিই মিড ডে মিলের তদারকি করেন। কারণ, স্কুলে কোনও কর্মীও নেই!

স্কুলের প্রধানশিক্ষকের নাম রাহানুল হক। তিনি ক্লাস নেবেন না কি মিড ডে মিলের তদারকি করবেন, সেটাই বুঝে উঠতে পারেন না। তিনি বলেন,‘‘আমাকে পড়ানোর পাশাপাশি সমস্ত কাজ করতে হয়। কেন্দ্রটিতে খাতায়কলমে ৮১ জন পড়ুয়া থাকলেও নিয়মিত আসে ৩০-৩৫ জন।’’ শিক্ষকের অভাবেই স্কুলে পড়ুয়ারা আসছে না বলে মানছেন প্রধানশিক্ষক। তাঁর কথায়, ‘‘শিক্ষক চেয়ে ব্লক, জেলা এবং রাজ্য শিক্ষা দফতরে আবেদন করেছি। কিন্তু কোনও সাড়া পাইনি।’’ এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে ছাত্রছাত্রীদের দিয়ে নিচু শ্রেণির পড়ুয়াদের পড়ানোর ব্যবস্থা করেছেন প্রধানশিক্ষক। তিনি জানান, চারটি শ্রেণির ছাত্রছাত্রীকে পড়ানোর পাশাপাশি ক্লাস, মিড ডে মিলের বাজার এবং অফিসের সমস্ত কাজ সামলাতে হয় তাঁকে। তিনি বলেন, ‘‘একটি ক্লাস নিতে গেলে যেমন অন্য ক্লাস ফাঁকা থাকছে, তেমনই মিড ডে মিল-সহ স্কুল পরিচালনার জন্য অফিসের কাজ করতে গেলেও ফাঁকা থাকছে ক্লাস।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘ছ’জন শিক্ষকের ব্যবস্থা থাকার কথা এই স্কুলে। এক জন শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে। বাকিরা অবসর নিয়েছেন। তার পর আর শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। তাই এক জন শিক্ষককেই সামলাতে হচ্ছে স্কুল।’’

পড়ুয়া থাকা সত্ত্বেও কেন শিক্ষক নিয়োগ হচ্ছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবকেরা। শিক্ষক-না থাকায় পড়ুয়াদের ঠিকমতো পড়াশোনা হচ্ছে না। অনেকে দূরের স্কুলে ছেলেমেয়েদের ভর্তি করাচ্ছেন। স্থানীয় বাসিন্দা হাসিনা বিবি বলেন, ‘‘গ্রামে স্কুল হওয়ায় খুব আনন্দ হয়েছিল। কিন্তু এখন ছাত্রছাত্রী থাকলেও শিক্ষক নেই। এক জন শিক্ষক দিয়ে কোনও রকমে টিমটিম করে চলছে স্কুলটি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

school Teacher Students Malda
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy