Advertisement
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Jayanta Singh

‘কেন ভেঙে ফেলা হবে না?’ জয়ন্তর ‘প্রাসাদে’ নোটিস ঝোলাল পুরসভা, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জবাব তলব

আড়িয়াদহের মৌসুমী মোড় সংলগ্ন এলাকায় বিশাল বাড়িটি বেআইনি বলে আগেই জানিয়েছিল কামারহাটি পুরসভা। জমিটি রয়েছে দিলীপ মুখোপাধ্যায় এবং ননীগোপাল মুখোপাধ্যায় নামে দু’জনের নামে।

Jayanta Singh

(বাঁ দিকে) জয়ন্ত সিংহ। তাঁর সেই দুধসাদা রঙের বাড়ি (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কামারহাটি শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪ ১১:২৫
Share: Save:

আড়িয়াদহকাণ্ডে ধৃত জয়ন্ত সিংহের বাড়িতে নোটিস সাঁটিয়ে দিল কামারহাটি পুরসভা। জয়ন্তদের বাড়ি যে জায়গার উপর তৈরি, তার মালিকানা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কেন ওই বাড়িটি ভাঙা হবে না, তার ব্যাখ্যাও চাইল পুরসভা।

১০ নম্বর ওয়ার্ডের আড়িয়াদহের মৌসুমি মোড় সংলগ্ন জয়ন্ত সিংহের দুধসাদা বিশাল বাড়ি বেআইনি বলে আগেই জানিয়েছিল কামারহাটি পুরসভা। জমিটি রয়েছে দিলীপ মুখোপাধ্যায় এবং ননীগোপাল মুখোপাধ্যায় নামে দু’জনের নামে। এই প্রেক্ষিতে পুরসভার তরফে দিলীপকেও তলব করা হয়েছে। শুক্রবার জয়ন্তের বাড়িতে আইনি নোটিস ঝুলিয়ে পুর কর্তৃপক্ষ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বাড়িমালিকের প্রতিক্রিয়া চেয়েছেন।

এক যুবক ও তাঁর মাকে মারধরের অভিযোগে জয়ন্তের নাম উঠে আসে। তার পর থেকে জয়ন্ত এবং তাঁর দলের একের পর এক কীর্তির ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতে থাকে (ওই ভিডিয়োগুলির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। তার মধ্যেই প্রকাশ্যে আসে আড়িয়াদহের বুকে জয়ন্তের সাদা রঙের বিশাল কথা। যে বাড়ির কথা শুনে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন স্বয়ং এলাকার সাংসদ সৌগত রায়। অভিযোগ, তিন তলা ওই বাড়িটি পুরসভার অনুমতি ছাড়াই তৈরি হয়েছে। যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তাই নোটিস পাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা চেয়েছে পুরসভা। কেন পুরসভার তরফে বেআইনি ওই নির্মাণ ভেঙে ফেলা হবে না, সেই ব্যাখ্যাও চাওয়া হয়েছে। এই প্রসঙ্গে পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল সাহা জানান, জমিটি দিলীপ মুখোপাধ্যায় এবং ননীগোপাল মুখোপাধ্যায়ের নামে এবং মিউটেশনও রয়েছে। তাঁদের খোঁজ পাওয়া যায়নি বলেই জমির উপর তৈরি বাড়িতে নোটিস লাগিয়ে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। পুর আইন মেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আড়িয়াদহের মৌসুমী মোড় সংলগ্ন প্রতাপ রুদ্র লেনে জয়ন্তের দু’টি বাড়ি। একটি পৈতৃক, সেটিতে খাটাল রয়েছে। পৈতৃক বাড়ির কাছেই একটি জলাশয়ের পাশে পরিত্যক্ত একটি জমিতে সাদা রঙের একটি বাড়ি তৈরি হয়। অভিযোগ, বছর দুই আগে ওই জমিটি জবরদখল করে রাতারাতি সেখানে নির্মাণকাজ শুরু করেন জয়ন্ত। বছর ঘুরতেই তিন তলা প্রাসাদ তৈরি হয়ে যায়।

মা-ছেলেকে মারধরের ঘটনায় ধৃত জয়ন্ত এখনও জেলে। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলেছেন এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা। অভিযোগ, শাসকদলের একাংশের প্রশ্রয়ে জয়ন্তের এত রমরমা। সাধারণ দুধ ব্যবসায়ী থেকে ক্রমে ফুলেফেঁপে তিনি এলাকার প্রভাবশালী হয়ে ওঠেন। বিরোধীরা সে সব নিয়ে শাসকদলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। শাসকদলের অন্তর্দ্বন্দ্বও প্রকাশ্যে এসেছে। এই আবহে কয়েক দিন কামারহাটি পুরসভায় বিধায়ক মদন এবং পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল সাহার সঙ্গে বৈঠকে বসেন সৌগত। প্রায় দেড় ঘণ্টা বৈঠক শেষে দায় উড়িয়ে জানিয়ে দেন, জয়ন্তের যে এমন অট্টালিকা রয়েছে, সে কথা তৃণমূলের কেউ জানতেন না। তিনি বলেছিলেন, ‘‘গোপাল বলেছেন, কিন্তু আমরা জানতাম না যে জয়ন্ত সিংহ এত বড় বাড়ি করেছেন। কেউ না বললে জানব কী করে? সংবাদমাধ্যমও আগে জানায়নি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE