বিক্ষোভ: শুক্রবারের পরে শনিবারও জলপাইগুড়ি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে চলল বিক্ষোভ। ছবি: সন্দীপ পাল
ডিকেকে৷ ইংরাজি শব্দমালার এই তিনটি বর্ণই এখন জলপাইগুড়িতে আলোচ্য। শিক্ষামহল থেকে শুরু করে পুলিশ বা প্রশাসনিক মহল কিংবা অনেক সাধারণ মানুষের আলোচনাতেও উঠে আসছে— ‘ডিকেকে’৷
গত বৃহস্পতিবার থেকেই ছাত্রদের আন্দোলনে উত্তাল জলপাইগুড়ির ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ৷ এই আন্দোলনের পেছনে র্যাগিংয়ের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়াই আসল উদ্দেশ্য বলে অভিযোগ তুলেছেন কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রদের একটা অংশ৷ সেখানে কান পাতলে উঠে আসছে ডিকেকে, অর্থাৎ দীপককুমার কোলের নাম।
জলপাইগুড়ি সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান ‘ডিকেকে’ নামেই পরিচিত৷ কলেজ থেকে যাকে সরানোর দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষের ছাত্ররা৷ কিন্তু তাঁকে সরানোর দাবিতে আচমকা কেন এই আন্দোলন? কলেজের অধ্যাপক থেকে শুরু করে ছাত্রদের একটা অংশেরও দাবি, তিনি নাকি মৌচাকে ঢিল ছুড়ে দিয়েছেন৷
কলেজ সূত্রের খবর, দীপককুমার কোলে সিঙ্গুরের বাসিন্দা৷ ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে অ্যাসোসিয়েট প্রফেসার হিসাবে জলপাইগুড়ি সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে যোগ দেন৷ তার আগে প্রায় সাড়ে আট বছর কলকাতার সেন্ট থমাস কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং ও টেকনোলজিতে কাজ করেছেন৷ তার আগে আরও একাধিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর৷
দীপকবাবুর সহকর্মীরা অনেকেই জানাচ্ছেন, একটু কড়া ধাঁচের মানুষ তিনি৷ পড়ুয়াদের অনুশাসনে রাখতে চান৷ সে জন্যই কোনও ছাত্রকে একাধিক দিন ক্লাসে অনুপস্থিত দেখলে তার খোঁজ করতে চলে যান হোস্টেলে৷ যদি দেখেন হোস্টেলে সেই ছাত্রটি রয়েছেন, অথচ, ক্লাস করছেন না তবে সরাসরি ফোন করে ফেলেন সেই ছাত্রের অভিভাবকদের৷ একইভাবে কোনও ছাত্র নেশায় আসক্ত শুনলেও দীপকবাবুর ফোন চলে যেত সেই ছাত্রের অভিভাবকদের কাছে৷ যা একেবারেই পছন্দ নয় ছাত্রদের একটা অংশের৷
কলেজ সূত্রের খবর, র্যাগিং রুখতে প্রথম বর্ষের ছাত্রদের হস্টেল আলাদা করে দেওয়া দেওয়া হয়েছে৷ তারপরও অনেক সময়ই র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে৷ এবং অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির সদস্য হিসাবে কড়া অবস্থান নিয়েছেন দীপকবাবু৷ মাস ছয়েক আগেও র্যাগিং নিয়ে চতুর্থ বর্ষের কয়েকজন ছাত্রকে শাস্তির মুখে পড়তে হয়৷ যার নেপথ্যেও বড় ভূমিকা ছিল এই অধ্যাপকের৷
গত বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্ররা প্রথম বর্ষের এক ছাত্রকে মেরেছে শুনে অধ্যক্ষের নির্দেশে হস্টেলে ছুটে যান দীপকবাবু৷ প্রথম বর্ষের ছাত্রের কাছ থেকে সব অভিযোগ শুনে দ্বিতীয় বর্ষের দুই ছাত্রকে সতর্ক করেন৷ বারবার তাঁর এই ভূমিকায় ক্ষুব্ধ হয়েই ছাত্রদের একটা অংশ তাঁর বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামেন বলে অভিযোগ অধ্যপকদের একাংশেরও৷ যদিও তা মানতে নারাজ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রেরা। দীপকবাবুকে সরানোর দাবিতে ছাত্রদের একটা অংশ যখন আন্দোলনে, তখন আরেকটি অংশ অবশ্য দাবি তুলেছেন, তাকে এই কলেজেই রাখতে হবে৷
শনিবার কলেজে যাননি ডিকেকে৷ ফোনে বললেন, ‘‘আমি কলেজটাকে ভাল করতে চাই৷ পড়াশোনার আরও ভাল পরিবেশ তৈরি করতে চাই৷’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy