Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

স্যারকে নিতে দিল না ছাত্ররা

স্কুলটির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা অনন্যা সান্যাল। তিনি ছুটিতে থাকায় এখন দায়িত্বে রয়েছেন সমীর মজুমদার। ছাত্রীর বাড়ির লোকজনের অভিযোগ, সমীরবাবু সব জানতেন। তবু কোনও বিহিত করেননি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৭ ১০:৫০
Share: Save:

স্কুলের মধ্যে ছাত্রীকে দিনের পর দিন যৌন নিগ্রহের ঘটনার তদন্তে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হল পুলিশকে। যার জেরে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যেতে চাইলেও তা পারেনি পুলিশ৷ যদিও পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তের স্বার্থে প্রধান শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদ করাটা জরুরি৷

স্কুলের মধ্যে ছাত্রীর যৌন নিগ্রহের এই অভিযোগকে ঘিরে গত কয়েক দিন ধরেই সরগরম জলপাইগুড়ির পাতকাটা কলোনি৷ সেখানকারই একটি জুনিয়র হাইস্কুলে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রী এই অভিযোগ এনেছে স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নীলমণি দাসের বিরুদ্ধে। তার অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই নীলমণি এই অপকর্ম চালিয়ে আসছে। তার জন্য সে স্কুল যাওয়াও বন্ধ করেছিল। পরে আবার স্কুলে যেতে শুরু করতেই নতুন করে নিগ্রহ শুরু হয়। আর থাকতে না পেরে সে বাড়ির লোকদের জানায়। তাঁরাই অভিযোগ করেন।

স্কুলটির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা অনন্যা সান্যাল। তিনি ছুটিতে থাকায় এখন দায়িত্বে রয়েছেন সমীর মজুমদার। ছাত্রীর বাড়ির লোকজনের অভিযোগ, সমীরবাবু সব জানতেন। তবু কোনও বিহিত করেননি। পুলিশ সূত্রের খবর, ঘটনার পর থেকেই পলাতক নীলমণি৷ ময়নাগুড়িতে তার বাড়িতে বেশ কয়েক বার হানাও দিয়েছে পুলিশ৷ কিন্তু তার নাগাল পায়নি৷ এই পরিস্থিতিতে এ দিন স্কুলে তদন্তের জন্য যান জলপাইগুড়ি মহিলা থানার ওসি উপাসনা গুরুঙ্গ-সহ অন্য পুলিশকর্মীরা৷

কিন্তু পুলিশ স্কুলে পৌঁছতেই পড়ুয়া ও গ্রামবাসীরা দাবি করতে থাকেন, নীলমণি আর সমীরবাবু নিরপরাধ৷ তদন্তে কেউ নিরপরাধ প্রমাণিত হলে তার শাস্তি হবে না বলে পুলিশের তরফে তাদের আশ্বাসও দেওয়া হয়৷ এর পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সমীরবাবুকে থানায় নিয়ে যেতে চায় পুলিশ৷ কিন্তু তিনি উঠতেই পুলিশের গাড়ির সামনে কার্যত বসে পড়ে পড়ুয়ারা৷ তাদের সঙ্গে যোগ দেন স্থানীয় বাসিন্দারাও৷ উপাসনা গুরুঙ্গ তাদের বারবার বুঝিয়ে বলেন, তদন্তের স্বার্থে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন৷ কিন্তু স্কুলে সেই পরিবেশ নেই জন্যই তারা তাকে থানায় নিয়ে যাচ্ছেন৷ জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে ছেড়েও দেওয়া হবে৷ কিন্তু তাতেও দমেননি পড়ুয়া বা স্থানীয়রা৷ শেষ পর্যন্ত খালি হাতেই ফিরতে হয় পুলিশকে৷ তবে জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, তদন্তের প্রয়োজনেই সমীরবাবুকে জেরা করা হবে৷

এদিকে গোটা ঘটনার জন্য স্থানীয় বাসিন্দারা এদিন স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা অনন্যা সান্যালকেই দায়ী করেন৷ স্থানীয় বাসিন্দা সুজাতা সরকার অভিযোগ করে বলেন, ব্যাক্তিগত আক্রোশ থেকেই অনন্যাদেবী সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রীর মাকে দিয়ে নীলমনি দাস ও সমীর মজুমদারের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করিয়েছেন৷ ওই ছাত্রীর মা না বুঝেই অভিযোগপত্রে সই করেছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি৷ তবে অনন্যাদেবী বলেন, ‘‘আমি অনেকদিন ধরেই ছুটিতে৷ আমার সন্তান অসুস্থ৷ স্কুলে কি হয়েছে তার কিছুই জানি না৷ তা হলে চক্রান্ত করব কি করে সেটাই বুঝতে পারছি না৷’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE