Advertisement
২২ জানুয়ারি ২০২৫
Bangladesh Unrest

কড়া পাহারা সীমান্ত জুড়ে, ‘বন্ধ’ পাচার

পরিসংখ্যানও বলছে সে কথাই। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নভেম্বর মাসের প্রথম দিকে পাচারের আগে প্রচুর গরু (প্রায় একশো) উদ্ধার করে পুলিশ।

চলছে কড়া নজরদারী।

চলছে কড়া নজরদারী। —ফাইল চিত্র।

নমিতেশ ঘোষ
শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৮:৫০
Share: Save:

দিনের আলোতেও রাইফেল হাতে সীমান্তের এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্তে নজরদারি করছে সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) জওয়ানদের দল। সন্ধে নামতে ‘নাইট ভিশন’ ক্যামেরায় সতর্ক চোখ। মাথার উপরে চক্কর কাটছে ‘ড্রোন’। কোথাও ‘টুঁ’ শব্দটা পেলেও ঘিরে ফেলছেন জওয়ানেরা। বাংলাদেশে অস্থির পরিস্থিতির জেরে সীমান্তে নজরদারি বেড়ে গিয়েছে কয়েক গুণ। দাবি, তার জেরে চোরাচালান কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছে বাংলাদেশ সীমান্তে। দিন কয়েক ধরে আর সীমান্ত পথে দেখা যায় না গরুর পাল। সীমান্ত ঘেঁষা গ্রামের এক যুবক বলেন, ‘‘শীত পড়তে শুরু করতেই গরুর পাল নিয়ে সীমান্তে এগোতে দেখা যেত পাচারকারীদের। রাতে ঘুমের মধ্যেও আমরা চোরাকারবারিদের দৌড়ঝাঁপ শুনতে পেতাম। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তা আর পাচ্ছি না।’’

পরিসংখ্যানও বলছে সে কথাই। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নভেম্বর মাসের প্রথম দিকে পাচারের আগে প্রচুর গরু (প্রায় একশো) উদ্ধার করে পুলিশ। ট্রাকে-গাড়িতে লুকিয়ে সেগুলি বাংলাদেশ সীমান্তে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তবে তার আগেই গরুগুলি আটক করা হয়। তবে গত দু’সপ্তাহ ধরে সে ভাবে আর গরু উদ্ধার হয়নি। বিএসএফের রাণিনগরের এক আধিকারিক সুবাস শর্মা বলেন, ‘‘সীমান্তে কড়া নজরদারি রয়েছে। চোরাচালানের কোনও সুযোগ নেই।’’ বিএসএফের গোপালনগর রেঞ্জের এক আধিকারিকও বলেছেন, ‘‘বাংলাদেশের অস্থির পরিস্থিতির জেরে নানা কারণে সীমান্তে নজরদারি অনেক গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে। চোরাচালান বন্ধ করতেও নজরদারি চলছে।’’

অতীত বলছে, শীত পড়তেই চোরাচালান কয়েক গুণ বেড়ে যায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত পথে। কুয়াশার আড়ালে বিএসএফ জওয়ানদের চোখকে ধুলো দিয়ে চলে ওই পাচার। বিএসএফের সঙ্গে সংঘাতও হয় মাঝেমধ্যে। ধরা পড়ে পাচারকারী বা গরু বোঝাই গাড়ি। অভিযোগ, এ বারও তার ব্যতিক্রম হয়নি প্রথমে। বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহারে ৫৪৯ কিলোমিটার বাংলাদেশ সীমান্ত রয়েছে। এত বড় বাংলাদেশের সীমান্ত, রাজ্যের কোনও জেলাতে নেই। স্বাভাবিক ভাবেই এই এলাকায় বিএসএফের নজরদারিও কড়া। এই সীমান্ত এলাকার বেশ কিছু জায়গা আবার কাঁটাতারহীন। দিনহাটার নাজিরহাটের দিঘলটারি, গীতালদহ থেকে শুরু করে সিতাই, শীতলখুচি, মেখলিগঞ্জের একাধিক জায়গায় কাঁটাতার নেই। আর সে সব এলাকায় চোরাচালানকারীদের দৌরাত্ম্য বেশি।

কিন্তু দিন কয়েক ধরে সেই সব এলাকায় চিত্র একেবারে পাল্টে গিয়েছে বলে দাবি। বিএসএফ সূত্রের খবর, দুটো কারণে সীমান্তে নজরদারি বাড়িয়েছে বিএসএফ। এক, বাংলাদেশের অস্থিরতার জেরে অনুপ্রবেশের আশঙ্কা বেড়েছে। দুই, এই সুযোগ নিয়ে দুষ্কৃতীরাও ভারতে ঢুকে যেতে পারে বলে আশঙ্কা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দিনহাটা সীমান্তের এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘চোরাচালানের কারবারে সব সময়েই ঝুঁকি
রয়েছে। আর এ বার যে ভাবে নজরদারি চলছে, তার ফাঁক গলে মাছি ঢোকাও কঠিন। তাই পাচারে জড়িতেরা একটু পিছু হটেছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

India Bangladesh Border Cooch Behar BSF
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy