আট বছরের মেয়ের হাতে আদর করে দুধের গ্লাস তুলে দিয়েছিল মা। পরম আস্থায় মায়ের দেওয়া সেই দুধ খেয়েও নিয়েছিল মেয়েটি। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই যন্ত্রণায় ছটফট করতে শুরু করে সে। এক সময় মায়ের সামনেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে ফাতিমা খাতুন(৮)।
মাত্র দু’ সপ্তাহ আগেই মায়ের হাত থেকে নেওয়া দুধের গ্লাসে চুমুক দেওয়ার পরেই মৃত্যু হয়েছিল মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী বাড়ির বড় মেয়ে সোমা খাতুনের(১৫)।
একই ভাবে বৃহস্পতিবার রাতে ছোট মেয়েরও মৃত্যু হওয়ার পরে পুলিশের জেরার ফাঁস হয়ে গেল সৎ মায়ের নৃশংসতা।
অভিযোগ, মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের কোলহা গ্রামে বৃহস্পতিবার রাতে ছোট মেয়ের মৃত্যুর পর চুপিসারে বাপের বাড়ি পালানোর চেষ্টা করেছিলেন ওই মহিলা। তখনই বাসিন্দাদের সন্দেহ হওয়ায় তাঁরা তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
শুক্রবার সকালে ওই মহিলাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। দুই কন্যাকে খুনের পর বাবা শেখ বাদল মুখ না খোলায় তাকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। এ দিন চাঁচল আদালতে তোলা হলে তাদের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ
দেওয়া হয়।
বছর দুয়েক আগে স্ত্রী মাইনুর বিবির মৃত্যুর পর কুরসেদা বিবিকে বিয়ে করেন শেখ বাদল। দুই মেয়ের মধ্যে বড় সোমা এ বার মাধ্যমিক দিয়েছিল।
ছোট ফাতিমা দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ত। গত ১৪ মার্চ মৃত্যু হয় বড় মেয়ে সোমার। বিষয়টি অস্বাভাবিক মনে হলেও তখন মুখ খোলেননি বাসিন্দারা। ২৭ তারিখ রাতে মারা যায় ফাতিমা।
এর পরেই কুরসেদা বাপের বাড়ি পালানোর চেষ্টা করলে তাদের সন্দেহ বেড়ে যায়। পুলিশে খবর দেন তাঁরা।
এ দিন সকালে পুলিশে অভিযোগ জানান দুই বোনের মামা মাইনুর বিবির ভাই ইউসুফ আলি। তিনি বলেন, ‘‘জানতাম ওদের মারধর করে কিন্তু এ ভাবে যে দু’জনকে খুন করবে ভাবিনি।’’
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, গ্রামের এক হাতুড়ের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল অভিযুক্ত কুরসেদা বিবির।
সেই মেয়েদের দুধে বিষ মেশানোর কুবুদ্ধি দেয়। সেইমতো দুই মেয়েকে দুধে বিষ মিশিয়ে খাইয়ে কুরসেদা খুন করে।
চাঁচলের এসডিপিও সজলকান্তি বিশ্বাস বলেন, ‘‘শুক্রবার বিকালে কবর খুঁড়ে দুই বোনের দেহ উদ্ধার করা হয়। তার পরে দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। হাতুড়ের খোঁজে তল্লাশি চলছে। তবু তার এখনও সন্ধান মেলেনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy