আন্দোলন: জমি ফেরত চেয়ে পথে বিক্ষোভ। ফাইল চিত্র
সিঙ্গুরের পরে এ বার শিলিগুড়ির কাওয়াখালি উপনগরী। এই প্রকল্পে ৫২টি অনিচ্ছুক জমিদাতা পরিবারের হাতে সাড়ে ৩৩ বিঘা (১১.৪৪২ একর) জমি তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য মন্ত্রিসভা।
সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে ঠিক হয়, দ্রুত অনিচ্ছুকদের জামি ফিরিয়ে দেওয়া হবে। সরকারি সূত্রের খবর, অনিচ্ছুকদের জমি ফেরানোর ফাইল যে কলকাতায় আটকে রয়েছে, সাম্প্রতিক উত্তরবঙ্গ সফরে তা জানতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশের পরেই প্রশাসন অতি তৎপর হয়ে জট কাটাতে আসরে নেমেছিল।
মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাম আমলে কাওয়াখালি উপনগরী প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়। তখন আন্দোলনের সময়েই মমতা ঘোষণা করেন, ক্ষমতায় এলে অনিচ্ছুকদের জমি ফিরিয়ে দেবেন। আজ সেই জমি ফেরানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। দ্রুত তা কার্যকর করা হবে।’’
এই ঘোষণায় কাওয়াখালি থিকনিকাটা ল্যান্ড ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে। সংগঠনের সভাপতি মণিমোহন বিশ্বাস বলেন, ‘‘তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে প্রায় ছ’বছর কেটে গিয়েছে। অথচ জমি ফেরানোর কাজ শুরু হয়নি। ফলে আমরা কিছুটা হতাশই হই। মুখ্যমন্ত্রীর চলতি সফরের আগে বিষয়টি জানিয়ে তাঁর হস্তক্ষেপ চেয়েছিলাম।’’
২০০৪ সালে শিলিগুড়ির উপকণ্ঠে কাওয়াখালিতে উপনগরী গড়ার জন্য ৩০২ একর জমি অধিগ্রহণ করে শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (এসজেডিএ)। কিন্তু ৫২ জন জমিদাতা রাজি ছিলেন না। আন্দোলন শুরু করে তৃণমূল। অনিচ্ছুকদের পাশে দাঁড়ায় কংগ্রেসও। তৎকালীন বিরোধী দলনেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও একাধিকবার সেখানে হাজির হন।
তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে জমি ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু গত প্রায় ৬ বছর ধরে কলকাতায় নানা দফতরে ফাইল আটকে ছিল বলে অনিচ্ছুকদের অভিযোগ। এই দীর্ঘ সময়ের মধ্যে অনিচ্ছুক পরিবারের ৪ জনের মৃত্যুও হয়। এর মধ্যে এসজেডিএ-র বর্তমান চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তী ভূমি সচিব ও নগরোন্নয়ন দফতরে কথা বলে জট কাটাতে আসরে নামেন। সাম্প্রতিক উত্তরবঙ্গ সফরে পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বিষয়টি নিয়ে ফের তদ্বির শুরু করেন।
যাঁর উদ্যোগে জমি অধিগ্রহণ হয়েছিল, সেই প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য এখন শিলিগুড়ির মেয়রও। তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমরা উপনগরী ও শিল্পের জন্য জমি নিয়েছিলাম। তা যদি না হয়, তা হলে ৫২টি পরিবারকে কেন, সকলকেই জমি ফিরিয়ে দিতে পারে সরকার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy