Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

১৫৫টি স্থান ঐতিহ্যের তালিকায়

প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “শহর হেরিটেজ, এই বিষয়ে আর কোনও দ্বিমত নয়। সরকারি ভাবে কিছু কাজ বাকি রয়েছে।  তা শেষ হলেই তাতে সিলমোহর পড়ে যাবে।”

কোচবিহার রাজবাড়ি। —নিজস্ব চিত্র

কোচবিহার রাজবাড়ি। —নিজস্ব চিত্র

নমিতেশ ঘোষ
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৯ ০৪:৫৫
Share: Save:

কারও সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে শতাধিক বছরের ইতিহাস। কোনওটি তারও বেশি সময়ের গল্প নিয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে রয়েছে শহরে। এমনই এক প্রাচীন শহরকে হেরিটেজ ঘোষণার দাবি উঠেছিল বহু বছর আগে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও কোচবিহারের মাঠে দাঁড়িয়ে সেই দাবির সঙ্গে একমত হন। তার পরের কয়েক বছর ধরে চলছিল সেই হেরিটেজ ঘোষণার অপেক্ষা। সম্প্রতি রাজ্য সরকারের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়, সেখানে শহরের ১৫৫টি নিদর্শনকে হেরিটেজ মর্যাদা দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। তার মধ্যে যেমন রয়েছে রাজবাড়ি, তেমনই উঠে এসেছে সাগরদিঘির নাম। তবে এ বার তালিকাটি নিয়ে হেরিটেজ কমিশনের কোচবিহার জেলা কমিটির একটি মতামত নেওয়া হবে। কোচবিহারের জেলাশাসক কৌশিক সাহা বলেন, “ওই বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। নির্দেশ মতো পরবর্তী কাজ করা হচ্ছে।”

কোচবিহারে কয়েকশো বছরের ইতিহাস জড়িত নিদর্শনগুলির অনেকগুলোই ধ্বংসের মুখে। আবার বেশ কিছু সরকারি ও বেসরকারি ভবন হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। ওই ১৫৫টি নিদর্শনের তালিকাতে এমন বহু নাম রয়েছে। সেক্ষেত্রে কারও যদি কোনও বক্তব্য থাকে তা নথিবদ্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে হেরিটেজ কমিশন। সেই কাজ শেষ হলেই জেলা হেরিটেজ কমিটির তরফে একটি রিপোর্ট পাঠিয়ে দেওয়া হবে রাজ্য হেরিটেজ কমিশনকে। এর পাশাপাশি হেরিটেজ ঘোষণার আগে শহরের কিছু পরিকাঠামোগত কাজ রয়েছে। সেই কাজ অবশ্য চলছে জোরকদমে। তা সম্পূর্ণ হওয়ার পরেই কোচবিহারকে চূড়ান্ত ভাবে হেরিটেজ ঘোষণা করা হবে। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “শহর হেরিটেজ, এই বিষয়ে আর কোনও দ্বিমত নয়। সরকারি ভাবে কিছু কাজ বাকি রয়েছে। তা শেষ হলেই তাতে সিলমোহর পড়ে যাবে।” কোচবিহার হেরিটেজ সোসাইটির সম্পাদক অরূপজ্যোতি মজুমদার বলেন, “বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ায় খুব খুশি হয়েছি। এর পরে যা কিছু কাজ আছে তা দ্রুত হবে বলে আমরা আশাবাদী।”

অভিযোগ, এই শহরে একাধিক ঐতিহাসিক নিদর্শন নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। অনেক ভবন ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তা নিয়ে আন্দোলন গড়ে উঠলেও আটকানো যায়নি। মুখ্যমন্ত্রী উদ্যোগী হওয়ার পরে আইআইটি খড়্গপুরের স্থাপত্যবিদ্যা বিভাগের প্রতিনিধিরা একাধিক বার শহর পরিদর্শন করেন। তাঁদের তত্ত্বাবধানে ওই নিদর্শনের তালিকা তৈরি হয়েছে। ওই নিদর্শন রক্ষায় তাঁরা নানা পরামর্শ দিয়েছেন। ইতিমধ্যেই কোচবিহার পুরসভার পক্ষ থেকেও ওই নিদর্শন নিয়ে শহরে একটি সমীক্ষা করা হয়েছে। কয়েকজন বাসিন্দার কথায়, “বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ায় আমরা খুব খুশি হয়েছি। এ বারে আর ঐতিহাসিক নিদর্শন নষ্টের আশঙ্কা নেই। এই নিদর্শনের টানেই দেশ-বিদেশের মানুষ ভিড় করবে কোচবিহারে।”

হেরিটেজের মাপকাঠি হল, প্রাচীন ভবন বা নিদর্শনের ঐতিহাসিক, সামাজিক বা রাজনৈতিক তাৎপর্য। সাধারণ ভাবে ১০০ বছর বা তার বেশি পুরনো নিদর্শনকে তালিকায় রাখা হয়। নকশা, নির্মাণ শৈলীতে নিদর্শনটি অনুপম স্থাপত্যের চিহ্ন বহন করলেও তালিকাভুক্ত হতে পারে। ঐতিহাসিক ঘটনাবলির সাক্ষী এমন ফাঁকা জায়গাও তালিকায় থাকতে পার।

অন্য বিষয়গুলি:

Cooch Behar Heritage
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy