কাজে গিয়ে হেনস্থা হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ পুরনিগমের কর্মীদের। —নিজস্ব চিত্র।
ডেঙ্গি মোকাবিলায় বাড়ি বাড়ি ঘুরে সমীক্ষা এবং মানুষকে সচেতন করতে গিয়ে হেনস্থার শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করলেন শিলিগুড়ি পুরনিগমের স্বাস্থ্যকর্মীরা। নিরাপত্তার অভাবে কাজ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। অভিযোগ দায়ের হয়েছে থানাতেও। এই পরিস্থিতিতে শহরবাসীর কাছে আবেদন জানালেন পুরনিগমের মেয়র, ডেপুটি মেয়র থেকে স্থানীয় বিধায়ক।
উত্তরবঙ্গ তথা রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। মৃত্যুও হচ্ছে। এই অবস্থায় শিলিগুড়ি পুরনিগম এলাকায় সাধারণ মানুষকে সচেতন করা এবং বাড়ি বাড়ি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে যাচ্ছিলেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। তাঁদের অভিযোগ, ওই কাজ করতে গিয়ে সাধারণ মানুষের সহায়তা তো পাচ্ছেনই না, বরং বাধার মুখে পড়ছেন তাঁরা। এমনকি তাঁদের শারীরিক ভাবে নিগ্রহ করা হচ্ছে। তর্কাতর্কি হচ্ছে। বার বার এই ঘটনায় কাজ বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্মীরা।
শিলিগুড়ির ৫ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার ডেঙ্গির আঁতুড়ঘর হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে। বিগত কয়েক বছরেও সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড থেকে মশাবাহিত রোগের প্রকোপ ছড়িয়েছিল। এই কারণে ওই ওয়ার্ডকে পাখির চোখ করেছেন শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র গৌতম দেব। ইতিমধ্যে ডেঙ্গির বিরুদ্ধে সতার্কতামূলক ভাবে সমস্ত রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে সচেতন করার পাশাপাশি, স্বাস্থ্যপরীক্ষা করছেন। ফলে গত কয়েক দিনে এলাকায় কোনও ডেঙ্গি আক্রান্তের খোঁজ মেলেনি দাবি পুরনিগমের। কিন্তু ওই সচেতনমূলক প্রচার, স্বাস্থ্যপরীক্ষা করতে গিয়ে গৃহস্থের বাধার মুখে পড়ছেন পুরকর্মীরা। এর পরেই থানায় অভিযুক্তদের নামে অভিযোগ দায়ের হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে। এবার ১০ নম্বর ওয়ার্ডে ডেঙ্গির সমীক্ষা করতে গিয়ে গন্ডগোল হয় বলে অভিযোগ। তার পরেই নিরাপত্তার অভাবের অভিযোগ করে ডেঙ্গি নিয়ে সচেতনতা এবং সমীক্ষার কাজ বন্ধ করে দেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।
পুরসভার নিগৃহীত স্বাস্থ্যকর্মী রিঙ্কু মাহাতো বলেন, ‘‘বাড়ি বাড়ি গিয়ে সার্ভে করতে হলে আমাদের কিছু কথা শুনতেই হয়। আমরা সেটাকে মাথায় রেখেই চলি। কিন্তু ৫ বা ১০ নম্বর ওয়ার্ডের ঘটনা ব্যতিক্রম। কোথাও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। কোথাও আবার হাতাহাতি বা ধস্তাধস্তি হচ্ছে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিককে বিষয়টি জানিয়েছি। থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের হয়েছে। তাঁরা আশ্বাস দিয়েছেন যে, আর এ রকম কাজ হবে না।’’ শিলিগুড়ি পুরনিগমের ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার বলেন, ‘‘দুটো জায়গায় এ রকম ঘটনা ঘটেছে। শহরবাসীর কাছে আমার অনুরোধ, পুরনিগমের স্বাস্থ্যকর্মী বা আশাকর্মীদের সাহায্য করুন। আমাদের সকলের ভালর জন্যই এঁরা কাজ করছেন। যাঁরা এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আগামিদিনে পুরনিগমের নির্দেশ অমান্য করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পুরনিগম থেকে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
এলাকার বিধায়ক শঙ্কর ঘোষও এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শহরবাসীকে সহযোগিতা করতে আর্জি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘ডেঙ্গু প্রতিরোধে স্বাস্থ্যকর্মীদের সচেতনতা প্রচারে সাহায্য করুন। ডেঙ্গির ভয়াবহতা আমরা এর আগে দেখেছি। জমা জল থাকলে তা স্বাস্থ্যকর্মীরা পরিষ্কার করবেন। এতে তো তাঁদের উপর উত্তেজিত হওয়ার কিছু নেই। প্রিয়জনকে বাঁচাতে, শহরকে ডেঙ্গিমুক্ত রাখতে তাঁদের সাহায্য করুন।’’ শেষ পর্যন্ত পাওয়া খবরে স্বাস্থ্য দফতরের ভারপ্রাপ্ত এমআইসি দুলাল দত্ত-সহ পুরনিগমের অন্যান্য আধিকারিকের আশ্বাসে পুনরায় কাজে যোগ দেওয়ার জন্য রাজি হয়েছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy