Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
পুলিশ ভ্যানে বিবাদ

মানসিক ভারসাম্য হারিয়েই গুলি, দাবি পুলিশের

মাদকাসক্তি থেকেই মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে রাজ্য সশস্ত্র বাহিনীর কনস্টেবল তাশি শেরপা গুলি চালিয়েছিলেন বলে সন্দেহ করছে পুলিশ। তাঁর গুলিবর্ষণ থেকে সহকর্মীদের বাঁচাতেই অপর পুলিশকর্মী মানস চন্দ গুলি চালান বলে পুলিশের অনুমান। তাশির বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার মামলা দায়ের করেছে নিউ জলপাইগুড়ি ফাঁড়ির পুলিশ। গোটা ঘটনার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনার জগমোহন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:২৯
Share: Save:

মাদকাসক্তি থেকেই মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে রাজ্য সশস্ত্র বাহিনীর কনস্টেবল তাশি শেরপা গুলি চালিয়েছিলেন বলে সন্দেহ করছে পুলিশ। তাঁর গুলিবর্ষণ থেকে সহকর্মীদের বাঁচাতেই অপর পুলিশকর্মী মানস চন্দ গুলি চালান বলে পুলিশের অনুমান। তাশির বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার মামলা দায়ের করেছে নিউ জলপাইগুড়ি ফাঁড়ির পুলিশ। গোটা ঘটনার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনার জগমোহন। বুধবার রাতেই গুলিবিদ্ধ তাশি ও কার্লোসের শরীর থেকে গুলি বের করা হয়েছে। আপাতত দুজনের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে এদিন দুজনেরই জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে। যদিও তাশি নিজে মাদক নেওয়ার কথা অস্বীকার করেছে।

শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনার বলেন, “আমি শুনেছি তাশি মাদকাসক্ত ছিল। তা থেকেই ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে কি না তা ভাল করে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” তাশি এদিন যাঁর উপরে গুলি চালিয়েছেন, সেই কার্লোস সে দিনই প্রথম একসঙ্গে ডিউটি করেছেন বলে জানা গিয়েছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, বুধবার রাত ৯ টা নাগাদ শিলিগুড়ি লাগোয়া তিনবাতি মোড় এলাকায় পুলিশ ভ্যানে করে টহল দেওয়ার সময় গাড়ির সামনে বসা নিয়ে গোলমালের জেরে রাজ্য সশস্ত্র বাহিনীর কনস্টেবল তাশি প্রথম গুলি চালায় বলে অভিযোগ। এলোপাথাড়ি গুলি চালানোয় জখম হন অপর কনস্টেবল কার্লোস ওঁরাও। তাঁর দু’হাতের নিচে গুলি লাগে। তাশিকে থামাতে তার পা লক্ষ্য করে গুলি চালান গাড়িতে থাকা অপর পুলিশকর্মী মানস চন্দ। দু’জনকেই শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। রাতেই তাঁদের উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। রাতেই অস্ত্রোপচার করে গুলি বের করে দেওয়া হয়। মেডিকেল কলেজের সুপার সব্যসাচী দাস বলেন, “অস্ত্রোপচারের পর দুজনেই ভালো আছে। তবে তাঁদের শারীরিক অবস্থার উপরে নজর রাখা হয়েছে।” জানা গিয়েছে, তাশির বাড়ি দার্জিলিঙের ঘুমভঞ্জন এলাকায়। ২০১২ সালে রাজ্য পুলিশের সশস্ত্র বাহিনীতে যোগ দেয় সে। ১৯৭ ব্যাচে তাঁর প্রশিক্ষণ হয়। বন্ধু মহলে শান্তশিষ্ট বলেই পরিচিত সে। তবে মাদকের নেশায় আসক্ত হয়ে পড়েছিল বলে জানা গিয়েছে। যদিও তাশি বা তাঁর পরিবারের লোকজন মাদক নেওয়ার কথা অস্বীকার করেছে। তাশি বলেন, “আমি মাদক নিই না। মিথ্যা অভিযোগ। আমি আগে গুলিও চালাইনি। আমাকেই কার্লোস গুলি করায় বাঁচার তাগিদে আমি গুলি চালাই।” তাশির বাবা পাসাং শেরপা হোমগার্ড পদে জোড়বাংলো থানায় কর্মরত। তিনিও মাদক নেওয়ার কথা জানেন না বলে জানান। তিনি বলেন, “তাশি মাদকাসক্ত নয় বলেই জানি।” তাশি ঘটনার দিন আগে থেকেই কোনও কারণে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিল বলে দাবি করেছেন অপর গুলিবিদ্ধ কার্লোসও। তাঁর বাড়ি শিলিগুড়ির ফাঁসিদেওয়ার ঘোষপুকুরে। তিনি বলেন, তাশি ডিউটি শুরুর সময়ে ওইদিন তাঁর সার্ভিস রাইফেল নিতে চায়নি। সবাই জোর করে করে ডিউটিতে রাইফেল নিতে বাধ্য করে। তবে সামান্য কারণে কেন গুলি চালাল সে, তা বুঝতে পারছি না। মানসবাবু পাল্টা গুলি না চালালে হয়ত মরেই যেতাম।” যদিও মানসবাবুর গুলি চালানোর বিষয়টি স্বীকার করেননি শিলিগুড়ি পুলিশের এডিসি ভোলানাথ পাণ্ডে। তিনি বলেন, “তাশিকে কেউ গুলি করেছে কিনা তা নিশ্চিত নই। ধস্তাধস্তির সময়ে গুলি বেড়িয়ে গিয়ে থাকতে পারে। তদন্ত শুরু হয়েছে।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE