দীর্ঘ দিন চলেছে তল্লাশি। নিজস্ব চিত্র
প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে সেবক সংলগ্ন তিস্তায় টানা খোঁজ করেছে নৌসেনা। নামানো হয়েছে আধুনিক যন্ত্র। কিন্তু না পাওয়া গিয়েছে গাড়ির খোঁজ। না মিলেছে বাকি দুই নিখোঁজের দেহ। গত বৃহস্পতিবার নৌসেনার তরফে দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক দীপাপ প্রিয়াকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সেবকের দুর্ঘটনায় উদ্ধারের কাজে তাদের আর কিছু করার নেই। বিশাখাপত্তনম থেকে আনা আধুনিক সরঞ্জাম ব্যবহার করেও নিখোঁজ দু’জন আর গাড়ি খোঁজা সম্ভব নয়। সরকারি সূত্রের খবর, শুক্রবার থেকে তল্লাশি অভিযান থেকে সরে গেল নৌসেনা। জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের একাংশ মনে করছেন, কখনও তিস্তার জলের তোড়ে ওই গাড়ি বা দেহ ভেসে ওঠলে তা উদ্ধার হতে পারে।
জেলাশাসক বলেন, ‘‘আমরা রাজ্য সরকারের মাধ্যমে তলিয়ে যাওয়া গাড়ি এবং নিখোঁজদের উদ্ধারে যা যা করণীয় সব করেছি। নৌসেনার পক্ষে আর কিছু সম্ভব নয় বলে জানিয়ে ওঁরা অভিযান থেকে সরে এসেছেন। আমাদেরও আপাতত কিছু করার নেই। অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা হয়ে থাকল।’’
১০ জুলাই বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে গাড়িতে রাজস্থানের তিনজন পর্যটক নিয়ে সিকিমের গ্যাংটক যাচ্ছিলেন চালক রাকেশ রাই। সেবক করোনেশন সেতুর পার হয়ে ১০০ মিটার এগোতেই একটি গাড়িকে ওভারটেক করার সময় নিয়ন্ত্রণ হারায় ওই গাড়ি। যাত্রী সমেত খরস্রোতা তিস্তায় পড়ে তলিয়ে যায় গাড়ি। ১১ জুলাই থেকেই দুর্যোগ মোকাবিলা দফতরের তরফে তল্লাশি শুরু হয়। কেন্দ্রীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দলও (এনডিআরএফ) আসে। কিন্তু তিস্তার গভীর জলে খোঁজ চালাতে প্রশিক্ষিত ডুবুরির প্রয়োজন হয়। শেষে নৌসেনার দল আসে উদ্ধারের কাজে। উদ্ধারের জন্য বিশাখাপত্তনম থেকে আনা হয় নৌসেনার আধুনিক যন্ত্রও।
দুর্ঘটনার খবর পেয়েই রাজস্থানের বুন্দি থেকে সেবকে এসেছিলেন নিখোঁজ পর্যটক আমন গর্গ, গৌরব শর্মা, গোপাল নারায়ণীর পরিবার। উদ্ধার কাজের গতিপ্রকৃতি নিয়ে পরিবারগুলো ক্ষোভ প্রকাশ করায় বিষয়টি নিয়ে সক্রিয় হন পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব। তিনি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলেন। দু’দিন সেবকেও যান। মুখ্যসচিবের মাধ্যমে দিল্লিতে কথা বলে কয়েকদিন কালীঝোরায় জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের জল বন্ধ করে তল্লাশি চলে। দুর্ঘটনার ক’দিন পরে মেলে আমনের দেহ। বেশ কিছুদিন পরে হলদিবাড়ি এলাকার তিস্তা থেকে মেলে গোপালের দেহ। কিন্তু রাকেই ও গৌরবের খোঁজ মেলেনি। ইতিমধ্যে গৌরবের পরিবার রাজস্থান ফিরেছে। রাকেশের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ ও চাকরির আশ্বাস দিয়েছে পর্যটন দফতর। প্রশাসনের একাংশ জানাচ্ছেন, ওইখানে তিস্তার গভীরতা কতটা তা কারও জানা নেই। নদীখাতের গভীরে কোথায় গাড়িটি বা বাকিরা তলিয়ে গিয়েছেন তা খুঁজে বার করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এর আগে ওই এলাকায় এনএইচপিসি-র যন্ত্রাংশ এবং ট্রাক জলে পড়ে গিয়েছিল। সেটির আর খোঁজ পাওয়া যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy