প্রতীকী ছবি।
ভোটের আগে উত্তরের চা শ্রমিক সংগঠনের রাশ সরাসরি নিজেদের হাতে তুলে নিতে সক্রিয় হয়েছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘ (আরএসএস)। আগামী রবিবার ডুয়ার্সে নতুন কয়েকটি ইউনিট খুলতে চলেছে বঙ্গীয় চা মজদুর সঙ্ঘ তথা বিসিএমএস। সঙ্ঘের শ্রমিক সংগঠন ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘের অনুমোদিত এই চা শ্রমিক সংগঠন তরাইয়েও নতুন করে ইউনিট করবে বলে খবর।
যদিও চা বলয়ে সঙ্ঘের সংগঠনের খবর জানেন না বলেই দাবি করেছেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বার্লাই। তাঁর ‘বেসুরো’ মন্তব্য, “আমার সংগঠন বিজেপি-সমর্থিত। বাগানে শ্রমিক সংগঠন চালাতে গেলে বাগানের লোক দিয়েই চালাতে হয়। এর আগেও অনেক সংগঠন কমিটি গড়েছিল। কিন্তু বাগানে তাঁদের লোক না থাকায় সে সব চলেনি। চা বাগানের বাইরে থেকে এসে কমিটি গড়ে দিলেই শ্রমিক সংগঠন চালানো যায় না। আমি বাগানে বাগানে ঘুরে মানুষের পাশে থাকি বলেই আমার সংগঠন এখন সবচেয়ে বড় সংগঠন।”
ডুয়ার্স-তরাইয়ের অর্ধেকের বেশি বাগানে সঙ্ঘের চা শ্রমিক সংগঠনের ইউনিট খোলার ‘রোডম্যাপ’ও তৈরি বলে খবর। এখন ডুয়ার্স-তরাইয়ে বিজেপি প্রভাবিত একাধিক শ্রমিক সংগঠন রয়েছে। সবচেয়ে বড়টি ভারতীয় টি ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন, যেটি বিজেপি সাংসদ জন বার্লার নিজস্ব সংগঠন। নিজেদের সংগঠন খোলার পরে সঙ্ঘের সঙ্গে বার্লার চা শ্রমিক ইউনিয়নের ‘সংঘাত’ অনিবার্য বলেই মনে করা হচ্ছে। এই সিদ্ধান্তে প্রাথমিক ভাবে দু’টি প্রশ্ন উঠেছে, প্রথমত, চা বলয়ে বিজেপি সাংসদ বার্লার প্রভাব কি কমাতে চাইছে সঙ্ঘ? বিজেপির চা শ্রমিক সংগঠনের কাজকর্মে কি সঙ্ঘ খুশি নয়?
সঙ্ঘের শ্রমিক সংগঠন বিএমএসের জলপাইগুড়ির এক কার্যকর্তার কথায়, “বিজেপির তো শ্রমিক সংগঠন করার এক্তিয়ারই নেই। বিজেপির গঠনতন্ত্রেই এ কথা সাফ বলা রয়েছে। শ্রমিক, ছাত্র, সরকারি কর্মী, শিক্ষকদের সংগঠন অনুমোদন দেওয়ার এক্তিয়ার রয়েছে সঙ্ঘের অথবা সঙ্ঘই এই ক্ষেত্রগুলি পরিচালনা করে। তার ফলে রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক তৈরি হয় না। এ বার চা বাগানেও সঙ্ঘের সংগঠন হবে।”
কেন জন বার্লার সংগঠনে সঙ্ঘের আস্থা নেই, তারও নানা ব্যাখ্যা রয়েছে। সূত্রের খবর, আদিবাসী নেতা বার্লা বিজেপিতে যোগ দিলেও ‘সঙ্ঘের লোক’ হয়ে ওঠেননি। সাংসদ সঙ্ঘের কথাও সে ভাবে শোনেন না বলে খবর।
চা বলয়ে সঙ্ঘের উপস্থিতি দীর্ঘদিনের। কোথাও চা শ্রমিকদের সমবায় চালায় সঙ্ঘ, কোথাও একলব্য স্কুল চলে। কোথাও দাতব্য ওষুধ বিলি কেন্দ্র চলে, কোনও চা বাগানে বনবাসী কল্যাণ আশ্রম সক্রিয়। চা মহল্লায় গণবিবাহের আয়োজনও করে সঙ্ঘ। গত লোকসভায় চা বলয়ে বিজেপির বিপুল ভোট পাওয়ার নেপথ্যে সঙ্ঘের সক্রিয়তাই যে প্রধান, সে কথা বিজেপি নেতাদের অনেকেই ইদানীং খোলাখুলি মেনে নেন।
এতদিন নেপথ্যে কাজ করার পরে হঠাৎ বিধানসভা ভোটের আগে সঙ্ঘের এই সক্রিয়তার বহু ব্যাখ্যা রয়েছে। সঙ্ঘের অন্দরে যে ব্যাখ্যাটি বহুল প্রচারিত সেটি হল, বিধানসভা ভোটের ফল আশানুরূপ হলে চা বলয়ের নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা যাতে সহজেই হাতে নেওয়া যায় তার রাস্তা করে রাখছে সঙ্ঘ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy