Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Kuaron

ঝড় কেড়েছে মাথা গোঁজার ঠাঁই, আবার নতুন জীবন-যুদ্ধ আনেদের

আমপানে বিধ্বস্ত বালুরঘাটের কুয়ারন—হত দরিদ্র আনে গুড়িয়ার গ্রাম। দু’সপ্তাহ আগের ওই ঝড়জলের ঝাপটায় ভেঙে পড়ে একের পর এক মাটির ঘর, উড়ে যায় ঘরের চাল।

অসহায়: উড়েছে শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের চালও। নিজস্ব চিত্র

অসহায়: উড়েছে শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের চালও। নিজস্ব চিত্র

অনুপরতন মোহান্ত
কুয়ারন শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০২০ ০৭:৪৯
Share: Save:

রবিবার চড়া দুপুরের নিঝুম কুয়ারনের সরু পাকা রাস্তাজুড়ে দেখা গেল ভেজা বোরো ধান বিছিয়ে ত্রাণের অপেক্ষায় কিছু বৃদ্ধা মহিলা। মোড়ের অশ্বত্থ গাছের ভাঙা ডালপালা এখনও আমপানের চিহৃ বহন করে দাঁড়িয়ে। আর ঝড়ে উড়ে যাওয়া টিনের ছাউনি ও কাঠের কঙ্কাল নিয়ে নিস্তব্ধ শিশুশিক্ষা কেন্দ্রকে সাক্ষী রেখে পর পর ঝড় বিধ্বস্ত বাড়ির ছবি গ্রামের শেষ মাথা অবধি। নির্মম ঝড় বাঁশঝাড়ের তলার বাসিন্দা বৃদ্ধা আনে গুড়িয়াকেও রেহাই দেয়নি।

আমপানে বিধ্বস্ত বালুরঘাটের কুয়ারন—হত দরিদ্র আনে গুড়িয়ার গ্রাম। দু’সপ্তাহ আগের ওই ঝড়জলের ঝাপটায় ভেঙে পড়ে একের পর এক মাটির ঘর, উড়ে যায় ঘরের চাল। মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকুও হারিয়ে নিঃস্ব গ্রামবাসীরা আবার শুরু করেছেন বাঁচার লড়াই। উড়ে যাওয়া ভাঙা টিন ও পঞ্চায়েতে দেওয়া ত্রিপলে জোড়াতালি দিয়ে আবার ঘর বাঁধছেন ওঁরা।

গ্রাম সংসদের তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য তথা চকভৃগুর প্রধান পিটার বারু কুয়ারন এলাকারই বাসিন্দা। তাঁর কথায়, ‘‘কুয়ারনে করোনা নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে এলাকার বড় ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। এলাকার ৬০টি বাড়ি প্রায় বাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সকলকে ত্রিপল দেওয়া হয়েছে। আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে তালিকা ব্লকে পাঠান হয়েছে।’’

বালুরঘাটের চকভৃগু গ্রামপঞ্চায়েতের গঙ্গাসাগরে একজন করোনায় আক্রান্ত হলেও পাশের গ্রাম কুয়ারন থেকে বাইরে পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে মাত্র একজন কাজ করেন। পিটার জানান, গ্রামের ওই যুবক ভিন্ রাজ্য থেকে ফিরে আপাতত হোম কোয়রান্টিনে আছেন এবং সুস্থ আছে। ফলে করোনা আতঙ্কের চেয়েও ঝড়-বিধ্বস্ত ওই এলাকার বাসিন্দাদের চিন্তা আসন্ন বর্ষা মরসুম নিয়ে। ঝড়ে এমনিতেই প্রায় বাড়িছাড়া হয়েছেন তাঁরা, কিন্তু বর্ষার আগে কোনও ভাবে সেই ছাদ সারিয়ে নেওয়ার কাজেই ব্যস্ত সাবিস্তিয়ান মুর্মু, যোগেন হাঁসদারা। তাঁদের কথায়, ‘‘বর্ষার আগে যে ভাবেই হোক ছাদ মেরামত করত হবে।’’

অর্ধনির্মিত হয়ে পড়ে থাকা আবাস যোজনার পাকাঘরের পলকা টিনের ছাউনিও ভেঙেছে অনেকের। তবু ওই পাকা ঘরের আশ্রয়ই মেয়ে রেনুকাকে নিয়ে অন্ধকার ঝড়ের রাতে প্রাণরক্ষা হয়েছে বলে এ দিন জানান আনে। ওঁদের মতো হতদরিদ্র সারা হোড়ে, মালতি কিস্কুদেরও একই অসম্পূর্ণ ঘরের গল্প। প্রতিবেশী ও পঞ্চায়েত প্রধান পিটার বারু বলেন, ‘‘বাড়ির কাজ দ্রুত শেষ হবে। আনে গুড়িয়ার পাড়ায় পানীয় জলের নলকূপ বসানোর সিদ্ধান্তও হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে কাজ শুরু হবে।’’

সেই আশা বুকে নিয়েই ভাঙাঘর জোড়াতালি দিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় আনে গুড়িয়ারা।

অন্য বিষয়গুলি:

KUaron Amphan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy