রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। —ফাইল চিত্র
হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শনিবার ভোর রাতে নার্সিংহোমে ভর্তি হলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। নার্সিংহোম সূত্রে বলা হয়েছে, ‘মেজর হার্ট অ্যাটাক’ হয়েছে মন্ত্রীর। তাঁকে এখন রাখা হয়েছে আইসিইউ-তে। নার্সিংহোম সূত্রে জানানো হয়েছে, এখন তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল। মুখ্যমন্ত্রী এর মধ্যেই ফোন করে মন্ত্রীর স্বাস্থ্যের ব্যাপারে খোঁজ নিয়েছেন। মন্ত্রীর ছেলে পঙ্কজ ঘোষ জানান, রবিবার রবিকে তাঁরা এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে কলকাতা নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানো হবে বলেও তিনি জানান।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবারই পদাতিক এক্সপ্রেসে কলকাতা থেকে কোচবিহারে ফেরেন রবীন্দ্রনাথ। ফিরতে দুপুর পেরিয়ে গিয়েছিল। সকালে রুটি-আনাজ দিয়ে ব্রেকফাস্ট সেরেছিলেন। তাঁর সঙ্গী নিরাপত্তারক্ষীদের কেউ কেউ জানান, তখন থেকেই দৃশ্যত মনে হচ্ছিল তিনি অস্বস্তিতে আছেন। পরিবার সূত্রে বলা হয়েছে, বাড়ি ফেরার পরে ওই রক্ষীরাই তাঁকে বিশ্রাম নিতে বলে। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ রাজি হননি। একটু শুয়ে উঠেই তিনি রাজবাড়ির মাঠে চলে যান। তখন বিকেল চারটে বাজে। তখনও তাঁর যে ঘনিষ্ঠরা দেখেছেন, সকলের কথায়, রবীন্দ্রনাথকে অস্বচ্ছন্দ্যই মনে হচ্ছিল। সেখানে তিনি হেলিপ্যাডের প্রস্তুতি দেখেন। তার পরে মুখ্যমন্ত্রীর কর্মিসভার প্রস্তুতিও খতিয়ে দেখেন। সব কাজ সেরে অন্য দিনের মতোই রাতে খেয়ে ঘুমোতে যান। রাত তিনটে নাগাদ বুকে ব্যথা অনুভব করেন। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই মন্ত্রীকে নার্সিংহোমে ভর্তি করান হয়।
পরিবার ও দল সূত্রে জানানো হয়, শনিবার দিনভর খোঁজ নিয়েছেন দল ও প্রশাসনের শীর্ষ ব্যক্তিরা। একাধিক নেতার কাছে ফোন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পার্থপ্রতিম এখন প্রচারের কাজে কালিয়াগঞ্জে রয়েছেন। তিনি বলেন, “আমাকে ফোন করে মুখ্যমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথবাবুর ব্যাপারে খোঁজ নিয়েছেন। আরও উন্নত চিকিৎসা যাতে হয়, সে জন্য নিজেই উদ্যোগী হয়েছেন।” ফোন করে খোঁজ নিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীও।
পরিবারের বক্তব্য, মূলত মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগেই এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা হয়েছে। তাঁকে কলকাতায় নিয়ে এসএসকেএমে ভর্তি করানোর ব্যবস্থাও হয়েছে। কিন্তু তিনি কি পারবেন কলকাতায় যাওয়ার ধকল নিতে? নার্সিংহোমের তরফে চিকিৎসক সুভাষ সাহা বলেন, “মন্ত্রীর ‘মেজর হার্ট অ্যাটাক’ হয়েছে। একটি জীবনদায়ী ওষুধ দেওয়া হয়েছে। তাঁর অবস্থা এখন স্থিতিশীল। তবে যত দ্রুত সম্ভব অ্যাঞ্জিয়োগ্রাফি করা দরকার।’’ তাঁকে যদি এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়, তা হলে অসুবিধা নেই বলেই জানিয়েছেন নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ।
এ দিন রবীন্দ্রনাথকে দেখতে এসেছিলেন দলীয় বিধায়ক উদয়ন গুহ, মিহির গোস্বামী থেকে শুরু করে বিরোধী নেতারাও। সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদক অনন্ত রায় বলেন, “রাজনৈতিক মতবিরোধ থাকলেও ব্যক্তিগত পরিচয় রয়েছে। তাই খবর পেয়েই নার্সিংহোমে যাই। চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেছি।” দেখা করতে যান ক্রিকেটার শিবশংকর পালও।
সোমবার কোচবিহার সফরে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার আগে ব্যস্ততা তৃণমূলের সব স্তরেই। তার আগে রবীন্দ্রনাথ অসুস্থ হয়ে পড়ায় দলের মধ্যে এ দিন কিছুটা উদ্বেগ তৈরি হয়। তৃণমূল নেতারা বলছেন, এখন দ্রুত উন্নত চিকিৎসা শুরু হলে ভাল। সে জন্যই তাঁকে কলকাতা নিয়ে যাওয়া হতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy