Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
International Women's Day

পা হারিয়েও লড়াই দিদিমণির 

চম্পাসারিতে বাবা, মা, দুই ভাই ও বোনের সঙ্গে থাকেন ৩৩ বছরের পূজা। দুই বছর বয়সে ট্রেন লাইন পার হতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় দুটো পা-ই কাটা পড়ে।

দুই পা নেই স্কুলে শিক্ষকতার কাজ করছেন শিলিগুড়ির রাজেন্দ্র প্রসাদ স্কুলে পুজা গুপ্ত।

দুই পা নেই স্কুলে শিক্ষকতার কাজ করছেন শিলিগুড়ির রাজেন্দ্র প্রসাদ স্কুলে পুজা গুপ্ত। ছবি: বিনোদ দাস।

শুভঙ্কর পাল
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২৪ ০৮:২৫
Share: Save:

দুই বছর বয়সে ট্রেনে কাটা পড়েছিল দুটি পা-ই। সেই থেকে লড়াই শুরু শিলিগুড়ির পূজা গুপ্তের। খেলার বয়সে পা হারিয়ে ঘরে বসে থাকতে হয়েছিল। কিন্তু প্রতিবন্ধকতাকে কখনও নিজের দুর্বলতা মনে করেননি। বাবা-মা চেয়েছিলেন আর পাঁচটা ছেলেমেয়ের মতোই স্বাভাবিক জীবনযাপন যেন করে তাঁদের মেয়েও। যে কারণে হুইল চেয়ার ছাড়াই দিব্যি স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে নিয়মিত পড়াশোনা করেছেন। এখন শিলিগুড়ির ডাঃ রাজেন্দ্র প্রসাদ হাই স্কুলের শিক্ষিকা। আগামীতে কলেজে অধ্যাপনা করার লক্ষ্য রয়েছে পূজার।

চম্পাসারিতে বাবা, মা, দুই ভাই ও বোনের সঙ্গে থাকেন ৩৩ বছরের পূজা। দুই বছর বয়সে ট্রেন লাইন পার হতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় দুটো পা-ই কাটা পড়ে। সে সময় মেয়েকে নিয়ে চিন্তা পড়ে যান সীতারাম গুপ্ত আর মা মিনাদেবী। তবে নিজের অদম্য জেদ ও মেধার জন্য জীবনে এগিয়ে গিয়েছেন পূজা। তাঁর কথায়, “পা না থাকার অভাব মনে হয়নি। মা বলে, পুরোনো স্মৃতি ভুলে আগামীতে যা করব, সেই লক্ষ্য স্থির থাকতে। দশ বছর স্কুলে শিক্ষকতা করছি। আগামীতে কলেজে পড়ানোর ইচ্ছে রয়েছে।” পুরোনো স্মৃতির কথা বলতে গিয়ে জানান, ছোটবেলায় কয়েক বার বন্ধু-বান্ধবীরা তাঁকে নিয়ে মজা করেছিল। কিন্তু পরে হাই স্কুলে অনেক সহযোগিতা পেয়েছেন।

সীতারামের জংশনে কাপড়ের দোকান রয়েছে। তাঁর কথায়, “পা হারানোর পরে পরিবারের উপরে আকাশ ভেঙে পড়ে। লোকেরা নানা কথা বলতো। কিন্তু মেয়ে এখন স্বাবলম্বী। অনেকের অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে।” এক সময় অনেক জায়গায় কাজের জন্য ঘুরলেও পা না থাকায় কেউ কাজে নিতে চাইতেন না বলে জানান পূজা। কিন্তু ডাঃ রাজেন্দ্র প্রসাদ স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সঞ্চিতা দেব তাঁকে স্কুলে অস্থায়ী শিক্ষিকা হিসেবে যোগ দিতে বলেন। দশ বছর ধরে ওই স্কুলেই পড়াচ্ছেন পূজা। প্রধান শিক্ষিকা বলেন, “পূজা আমাদের স্কুলেই পড়াশোনা করেছে। ওর কথা জানার পরে স্কুলে কাজে যোগ দিতে বলেছিলাম। ওর খামতি রয়েছে বলে কখনও মনে হয়নি।”

অন্য বিষয়গুলি:

Siliguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy