পথের ধারে বা খোলা মাঠে যারা শৌচকর্ম করেন তাঁদের ধরতে ভোরবেলা অভিযান চালাবেন বলে জানালেন কোচবিহারের জেলাশাসক। শনিবার জেলার পঞ্চায়েত ভবনের হলে স্বচ্ছ ভারত অভিযানের উপরে একটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। ওই কর্মশালায় যোগ দিয়ে পি উল্গানাথন বলেন, ‘‘গ্রামে সচেতনতা বাড়াতেই ওই অভিযান চলবে। আমি নিজেও সামিল থাকব। শাস্তি হিসেবে বাড়িতে শৌচাগার নির্মাণ করতে হবে। গ্রামে সকলের মধ্যে এ বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। শৌচাগার নির্মাণে আমাদের জেলা অনেক পিছিয়ে আছে। অন্য অনেক জেলা যেখানে স্বচ্ছ হয়েছে সেখানে আমরা পারব না কেন?’’ তবে শুধু জেলাশাসকই নন, মহকুমাশাসক, বিডিও থেকে প্রশাসনের অন্য আধিকারিকদেরও ওই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, জেলায় এখনও আড়াই লক্ষের বেশি পরিবারে শৌচাগার নেই। গত সরকারের আমলে নির্মল ভারত অভিযানের মাধ্যমে গ্রামে গ্রামে শৌচাগার নির্মাণের লক্ষ্য নেওয়া হয়। সেই কাজ মুখ থুবড়ে পড়ে বলে অভিযোগ। গত দশ মাসে কোচবিহার জেলার কাজ দেখে হতাশা প্রকাশ করেন খোদ কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথন। তিনি জানান, গত দশ মাসে জেলায় ৩৫ হাজার শৌচাগার তৈরি হয়েছে। অথচ নদিয়া জেলা সহ বাইরের কিছু রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় এক বছরে দুই লক্ষের উপরে শৌচাগার তৈরি করে জেলাকে স্বচ্ছ করার দিকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে। সেই মডেলেই কাজ করতে হবে কোচবিহার জেলায়।
বর্তমানে একটি শৌচাগার তৈরি করতে হলে উপভোক্তাকে ৯০০ টাকা দিতে হয়। সরকার দশ হাজার টাকায় শৌচাগার তৈরি করে দেয়। কোচবিহারে ওই প্রকল্পে কাজ কারা করবে তা নিয়েও দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। একসময় বিভিন্ন ক্লাবের মাধ্যমে ওই প্রকল্পের কাজ হত। তা নিয়ে দুর্নীতির একাধিক অভিযোগ ওঠায় তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। নতুন নিয়মে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে ওই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু যে সমস্ত সংস্থাকে কাজের বরাত দেওয়া হয়েছিল তাঁরা অভিজ্ঞতার অভাবে তা করে উঠতে পারেনি বলে অভিযোগ।
জেলাশাসক এদিন জানান, এবারে কাজের ধারা সম্পূর্ণ বদলে দেওয়া হবে। টাকা সবসময় হাতে রাখা হবে। ভোরবেলা কাউকে বাইরে শৌচকর্ম করতে দেখা গেলেই তিনদিনের মধ্যে তাকে শৌচাগার নির্মাণের নির্দেশ দেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে ওই বাসিন্দা নিজে শৌচাগার তৈরি করলে প্রশাসন সহযোগিতা করবে। না হলে কোনও সংস্থাকে দিয়ে ওই শৌচাগার তৈরি করে দেওয়া হবে। জেলাশাসক বলেন, “শুধু শৌচাগার তৈরি করে দিলে হবে না। তা ব্যবহারের অভ্যেস তৈরি করতে হবে। সে জন্য সচেতনতা বাড়াতে হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy