বৈঠকে: বুধবার ছিল দ্বিতীয় প্রশাসনিক বৈঠক। সেখানে আলোচনার সময়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তরকন্যায়। ছবি: স্বরূপ সরকার
পাহাড়ের জিটিএ-র কয়েক হাজার কর্মীর স্থায়ীকরণের দাবি আপাতত ঝুলেই রইল। এতে পাহাড়ের সরকারি দফতরগুলিতে কর্মবিরতি, বিক্ষোভ পূর্ব ঘোষণা মতো ২ অক্টোবর অবধি চলছেই। বুধবার দুপুরে উত্তরকন্যার প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে দীর্ঘদিনের দাবির কথা তুলে ধরেন জিটিএ চেয়ারম্যান অনীত থাপা এবং প্রাক্তন চেয়ারম্যান বিনয় তামাং। রাজ্য সরকারের আর্থিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে এখনই কতটা কী করা যাবে, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। আপাতত কর্মীদের কাজ চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শও দেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আর্থিক বিষয় রয়েছে। আমরা বিনয়, অনীতের সঙ্গে কথা বলব। বিষয়টি কী আছে দেখব।’’ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।
সরকারি সূত্রের খবর, এ দিনের প্রশাসনিক বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী উত্তরকন্যায় বিনয় তামাং, অনীত থাপা এবং জিটিএ-র প্রধান সচিব সুরেন্দ্র গুপ্তকে নিয়ে ফের বৈঠক করেন। সেখানে বিস্তারিতভাবে তিনি সমস্যার কথা শোনেন। পাহাড়ের নেতারা মুখ্যমন্ত্রীকে জানান, পার্বত্য পরিষদের আমল থেকে কর্মীরা কাজ করছেন। রাজ্য সরকারের নির্দেশ স্থায়ী কর্মীদের মত বেতন কাঠামো রয়েছে। কিন্তু স্থায়ীকরণ হচ্ছে না। এটার দাবিতে পাহাড় জুড়ে অফিসে কাজ বন্ধ করে আন্দোলন চলছে। তবে শুধু স্থায়ীকরণের নিয়োগপত্র দিলে সমস্যা মিটবে না, তা পাহাড়ের নেতাদের জানানো হয়। কাউকে শূন্যপদে নিয়ে নেওয়া হলেও পিএফ, গ্র্যাইচুইটি, পেনশনের মতো নানা আর্থিক বিষয়ও রয়েছে। সেই বিষয়টা মাথায় রেখেই অসরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এই অবস্থায় ২ অক্টোবর আন্দোলনরত কর্মীদের বৈঠকে ডাকার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরে বিনয় বলেছেন, ‘‘মুখ্যসচিব বিষয়টি দেখছেন। আন্দোলরত কর্মীদের প্রতিনিধি, জিটিএ চেয়ারম্যান ও প্রধান সচিবকে নিয়ে বৈঠক হবে। সমাধানের পথ খোঁজা হবে।’’
গত ১৭ অগস্ট থেকে একজোট হয়ে কর্মীরা ইউনাইটেড এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের ছাতার তলায় আন্দোলনে নেমেছেন। ১ সেপ্টেম্বর থেকে পাহাড়ে কর্মবিরতি শুরু হতেই জিটিএ দফতরগুলিতে অচলাবস্থা শুরু হয়ে গিয়েছে। সংগঠনের সচিব সুভাষ ছেত্রী বলেন, ‘‘আমরা এখনও রাজ্য সরকার, জিটিএ-র উপর ভরসা রাখছি। ২ অক্টোবর বৈঠকে কী হয়, তা দেখ পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করা হবে।’’
পার্বত্য পরিষদের আমলে পাহাড়ে ৪২৭৯টি শূন্যপদ তৈরি হয়। বর্তমানে জিটিএ-র বিভিন্ন দফতর, শাখা বা বিভাগ মিলিয়ে গ্রুপ-এ তে ৩১০, গ্রুপ-বিতে ৫২১ জন, গ্রুপ সি-তে ২৫২৬ জন এবং গ্রুপ ডি পদে ৭৭৫ জন কর্মী কাজ করছেন। ২০০৯ সালে শূন্যপদের ভিত্তিতে কর্মীদের চাকরির সময়, মেয়াদ, অভিজ্ঞতাকে ধরে স্থায়ীকরণের জন্য রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু পাহাড়ে পরপর রাজনৈতিক আন্দোলন, অস্থিরতার জন্য তা কার্যকরী হয়নি।
এদিন পাহাড়, তরাই এবং ডুয়ার্সের জন্য ভূমিহীনদের জন্য প্রজাপাট্টা, পাহাড়ের মহকুমা, ব্লক বাড়ানো, পুজোতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পাহাড়ের পর্যটনে জোর দেওয়া, বিজনবাড়ি ব্লকের ধসে বিধ্বস্ত ৩৭টি পরিবারের পুনর্বাসন মত বিষয়গুলি ওঠে। সিকিমে রংপোর পর রাজ্যের গাড়ি চলাচলে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি শুনেই সঙ্গে সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী নতুন মুখ্য সচিবকে সিকিম সরকারের সঙ্গে কথা বলার নির্দেশ দেন। মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, ‘‘আমরা সব মিলিয়ে পাহাড়কে ১৭৫ কোটি টাকা দিলাম। আশা করব, ভাল করে পাহাডের কাজ হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy